Believe in Yourself book by Dr. Joseph Murphy

Believe in Yourself

4:00 AM, November 13, 2023

Self Help, Mindset

S. Mishra


বেশিরভাগ সমস্যা মানুষের এটা নিয়ে থাকে যে , যখনই তারা ভাবনা চিন্তা করে কোনো কাজ করতে যান, তো কিছু সময় মনোযোগ দিয়ে করবার পর তাদের মস্তিষ্ক হাল ছেড়ে দিতে শুরু করে । তারা নিজেদের কর্মক্ষমতার ওপর সন্দেহ করতে শুরু করেন যে নির্দিষ্ট কাজটি তিনি করতে যাচ্ছেন , তার ফলাফল কি হবে ? কাজটি কি আদতেও সফল হবে , নাকি না ? এটি কম বেশি অনেকের সাথেই ঘটে থাকে । আমাদের মাথায় যখনই নেতিবাচক ভাবনা আসে , বা নিজেরাই নেতিবাচক কথা বার্তা বলতে শুরু করি , তখন আমরা নিজেদের অপ্রয়োজনীয় ভাবতে শুরু করি , নিজেদের কর্মক্ষমতার ওপর সন্দেহ সৃষ্টি হয় । কোনো কোনো সময় তো কাজ শুরুর আগেই আমরা এটা ভেবে হাল ছেড়ে দিই যে , এই কাজ আমার দ্বারা হবেই না। সাধারণতো এটা এইকারনে হয়ে থাকে , আমরা নিজের ওপর ভরসা রাখতে জানি না । আমরা নিজের নিয়ে যত নেতিবাচক চিন্তা করি , তার জন্য ৮০% দায়ী আমরা নিজে , আর বাকি ২০% অন্যদের থেকে শুনতে হয় । আর এই কারণের জন্যই পৃথিবীর এক বৃহৎ জনসংখ্যা সেই কাজেই নিযুক্ত থাকে ,যে কাজের উপদেশ তাকে তার বন্ধু , পরিবার কিংবা আসে পাশের মানুষজন দিয়ে থাকে ।


ড. জোসেফ মারফি তাঁর বইতে বলেন যে , মানুজনের মনে যদি তার কাজ নিয়ে এতটুকু সন্দেহ থাকে , সে যতই পরিশ্রম করুক না কেনো , সফল হতে পারবে না । সফল হবার মনোভাব রাখার আগে নিজের ওপর ভরসা রাখা জরুরি । আপনাকে মানতে হবে যে এই পৃথিবীতে আপনি অনেক বিশেষ কাজ করতে এসেছেন । বইটিতে লেখক আমাদের কিছু পর্যায়ক্রম অনুসারে এই বিষয়গুলি বুঝিয়েছেন ।


১. সুশৃঙ্খল কল্পনা :- ড. মারফি একবার এমন এক মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন যে অনেক ধনী এবং সফল ব্যক্তি ছিলেন । তিনি লেখক কে বলেন , যখন তিনি তাঁর ব্যাবসা শুরু করেছিলেন তার কাছে একটি দোকান ছিল যেটি খুব বেশি হলে ১৫/১৭ ফিটের আসে পাশে হবে । কিন্তু তিনি ওই সময়ও বড় স্বপ্ন দেখতেন । তিনি ভাবতেন যে তার ওই দোকানটি থেকে একদিন তার কোম্পানি হবে । আর তার বিশ্বব্যাপী প্রচুর শাখা হবে । ওই দোকানে বসে তিনি তার কোম্পানি , অফিস , ফ্যাক্টরির ভাবনা চিন্তা করতেন । মজার বিষয় হলো এই ভাবনা গুলি সব সময় তার মাথায় ঘুরতে থাকতো । কারণ তিনি ভালো করেই জানতেন যে একটি বাঁধা ধরা ভাবনা পোষণ করবার থেকে তিনি যদি নিয়মিত বিষয় গুলি নিয়ে ভাবতে থাকেন তাহলে সময়ের সাথে সাথে সেগুলি পূরণ হবার রাস্তাও তিনি ঠিকই খুঁজে বের করতে পারবেন । যখনই তিনি এগুলি ভাবতেন , তার মধ্যে অন্য ধরনেরই উচ্ছাস কাজ করতো , যার ফলস্বরূপ তিনি তার লক্ষে পৌঁছানোর জন্য সবসময় প্রেশিত হয়ে থাকতেন। এভাবে কাজ করতে করতে তিনি তার দোকানটির উন্নতিসাধন করতে থাকেন এবং আকর্ষণের আইন দ্বারা মানুষজন কে তার কাজের সাথে যুক্ত করতে থাকেন , যেটি তার একদিন স্বপ্ন ছিল । মারফি বলেন যে , ওই ব্যবসাদার টি আকর্ষণের আইন দ্বারা মানুষজন কে তার কাজের সাথে যুক্ত করে নিজের ভাবনা চিন্তা কে সফল করে দেখিয়েছিলেন । আর এটি সফল এই কারণেই হয়েছিল যে ওই ব্যক্তির কাজের ভাবনার সাথে , তার আবেগ অনুভূতি ও জড়িত ছিল , যা তাকে ওই জায়গায় পৌঁছানোর জন্য বারংবার অনুপ্রেরিত করতো। তাই মারফি বলেন যদি আপনিও নিজের কাজের মাধ্যমে আগামীর সফল জীবন কল্পনা করার ক্ষমতা রাখেন ,তাহলে সেটি অনুভব ও করতে শিখুন । অনুভব করুন যে আগামী দিনে আপনার সফল জীবন কেমন হতে পারে । যখন আপনি আপনার লক্ষ কে আপনার অনুভূতির সাথে জুড়ে দেবেন , তখন আপনি সেই দিকে সম্পূর্ণ রূপে মনোনিবেশ করে ফেলতে সক্ষম হন । সেই মুহূর্ত থেকে সেটি আপনার দায়িত্ব রূপে আপনার সামনে উঠে আসে । আর সেটি নিয়ে কাজ করে এগিয়ে যাবার জন্য অন্যদের থেকে প্রেশিত হবার প্রয়োজন পড়ে না ।

এবার কিছু মানুষ এটা ভাবতে শুরু করেন যে শুধু ভাবনা চিন্তা করলেই কি জীবন পরিবর্তিত হয়ে যায় ? তো ১০ বার নিজের হেরে যাওয়ার কল্পনা করবার থেকে অন্তত ৫ বার নিজের সফলতা কল্পনা করলে নিজের ভেতরের প্রেশনা নিজেই অনুভব করতে পারবেন ।


২. বিশ্বাসের শক্তি :- ড. মারফি বলেন যে আমাদের বিশ্বাসই আমাদের সব চেয়ে বড় অস্ত্র । এটার দ্বারা আমরা সেই সব জিনিস পেতে পারি যা আমাদের চাই । যেই ব্যবসাদারের কথা আমরা একটু আগে জানলাম , তিনি সফল এই কারণেই হতে পেরেছিলেন যে তার নিজের ওপর বিশ্বাস আর ভরসা ছিল । তিনি সব সময় এটা ভাবতেন যে জিনিস তিনি আজ কল্পনা করছেন একদিন তা বাস্তবায়িত হবেই । আর তা হয়ও ।

এই বিশ্বাসের শক্তির ক্ষমতা বোঝানোর জন্য মারফি তাঁর এক আত্মীয়ের কথা বলেন । তিনি বলেন যে তার আত্মীয়ের যক্ষ্মা হয়ে গেছিলো । সময়ের সাথে সাথে সেটি এমন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে তাঁর বাঁচার আসা ক্ষীণ হয়ে আসতে শুরু করে । সেই ব্যক্তির ছেলে কিন্তু নিজের কাছে স্থির করেছিল , যাই হয়ে যাক না কেনো , সে তার বাবাকে মারা যেতে দেবে না । সে একদিন রাস্তায় পড়ে থাকা ক্রস চিহ্নের ছোট কাঠ কুড়িয়ে নিয়ে আসে আর সেটি সোনার দোকানে নিয়ে গিয়ে একটি আংটির সাথে জুড়ে দেওয়া করায় । তারপর সে ছুট্টে তার বাবার কাছে আসে , তাকে সেই আংটি দিয়ে বলে যে সেটি এক সাধুবাবার থেকে অনেক দাম দিয়ে কিনে এনেছে । সাধু তাকে বলেছেন যে ওই আংটি যে ছুঁয়ে দেখে , তার যত বড়ই রোগ থাকুক না কেনো , সেটা অবশ্যই নিরাময় হয়ে যায় । এই কথা শুনে ওই ব্যক্তি , আংটিটা নিজের হাতে নিয়ে নেয় । আংটি হাতে নিয়ে সে প্রার্থনা করে আর তারপর ঘুমিয়ে পড়ে । পর দিন সকালে তার ছেলে উঠে এক দৃশ্য দেখে চমকে যায় । গতকাল রাত অব্দি তার বাবা চরম অসুস্থতায় বিছানায় শুয়ে ছিল সে আজ একদম সুস্থ ! এবং ডাক্তারও বলে দেন যে তার রোগ অনেকাংশে নিরাময় হয়ে গেছে ।

যদি আপনি ভেবে থাকেন যে ওই চমৎকারটি ঘটেছিল রাস্তায় পড়ে থাকা ওই কাঠের জন্য , তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন । ওই ছেলেটি তার বাবাকে ওই সমস্ত কথা এমন ভাবেই বলেছিল যে ওই ব্যক্তিটি সব কথা বিশ্বাস করে নিয়েছিল । এবং তার ওই বিশ্বাস এতটাই দৃড় ছিল , যক্ষ্মার মতো ভয়ংকর অসুখ থেকেও তিনি সুস্থতার পথে অগ্রসর হন । ছেলেটির বাবা কোনোদিন জানতেই পারেননি যে তাকে বানিয়ে কথা বলা হয়েছে । তিনি সারাজীবন এটাই মেনে চলেন যে ওই আংটির জন্যই তিনি সুস্থ হয়েছিলেন । ড. মারফি বলেন যে এটি কোনো সাজানো ঘটনা নয় , একদমই সত্যি ঘটনা । তিনি আরও বলেন যে আমাদের অন্তর্নিহিত বিশ্বাসের অসীম ক্ষমতা থাকে , যার ফলে বেশিরভাগ মানুষের জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় আসে । যা তাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন ঘটায়।


৩. সঠিক মানসিক মনোভাব গড়ে তুলুন :- কিছু মানুষ এটা বিশ্বাস করেন যে আমাদের মাথায় যা কিছু চলতে থাকে , যা কিছু ভাবনা আসে , আমাদের কাজ কর্মও সেই অনুযায়ী হয়ে থাকে । ড. মারফি মনে করেন যে আমাদের মনোভাবের যথেষ্ট প্রভাব আমাদের কাজের ওপর পড়ে । তিনি একটি ঘটনার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে বলেন যে , তিনি পুনর্জন্মের ওপর একটি নিবন্ধ লিখেছেন । যেটির অনেক কপি ওই চার্চের কাউন্টারে তুলে ধরা হয়েছিল যেখানে তিনি লেকচার দিতেন । কিন্তু ওই নিবন্ধের খুব বেশি কপি বিক্রয় হয় নি । যে মহিলা বিক্রয়ের দায়িত্বে ছিলেন , তিনি নিজেই মারফির পুনর্জন্মের ওপর লেখা নিবন্ধে বিশ্বাস করে উঠতে পারেন নি । একদিক থেকে দেখতে গেলে সে ওই ধারণার বিরোধী ছিলেন । মারফি যখন তাকে সেই লেখার অর্থ এবং উদ্দেশ্য বোঝান তখন সে বুঝতে পারে এবং এরপর সে অত্যধিক উৎসাহের সাথে বই গুলির সমস্ত কপি বিক্রয় করে ফেলে । এই ঘটনা , সঠিক মানসিক মনোভাবের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ।

সঠিক মানসিক মনোভাবের অর্থ হলো , যেকোনো বিষয়ের ওপর মানুষের ভাবনা চিন্তা করে প্রতিক্রিয়া দেওয়া । আপনার দৃষ্টি দিয়ে এই পৃথিবী দেখতে ঠিক কেমন ? এখানে কি শুধুই খারাপ , নেতিবাচক , এবং স্বার্থপরতাই আছে ? নাকি ভালোবাসা , মনুষ্যত্ব এবং ঐক্য ও আছে । যদি এই বিষয় গুলি আপনি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানলে , যেকোনো বিষয়ের ওপর প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগে আপনি ভাববেন । কোথাও না কোথাও গিয়ে এভাবেই আপনার সঠিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে । এই ক্ষেত্রে বলা যায় বই বিক্রয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মহিলা , বইটির কভার পেজ দেখেই বিচার করে ফেলেছিলেন যে বইটি একদমই বেকার । বইটির ভেতরে থাকা বিষয়বস্তু সম্পর্কে সে কিছুই জানতেন না । যার ফলে ড. মারফি খুব সহজেই বুঝে গেছিলেন যে ওই মহিলার চিন্তাধারা নেতিবাচক । ওই মহিলার মতো এই দুনিয়াতে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা বিষয়বস্তুর গভীরতা না বুঝেই সেটি নিয়ে বিচার করতে শুরু করেন । তার চটজলদি সামনের জনের অবস্থা দেখে বিচার করে ফেলেন যে সেটা ভালো / খারাপ নাকি ঠিক / ভুল । এই ধরনের ঘটনা থেকে একটাই তথ্য উঠে আসে , এইসব মানুষদের নিজের চিন্তা ধারা এবং প্রতিক্রিয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না । এবং লেখকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী , এমন ঘটনার পিছনে কারণ একটাই , আর তা হলো নেতিবাচক ভাবনা । তাই আমাদের ও উচিত যে আমাদের ভাবনা যেনো এখানেই সীমিত না থাকে যে , কোনো ঘটনা যদি নেতিবাচক রূপে উঠে আসে তবে সেটিকে বিচার করবার আগে কেনো সেটি নেতিবাচক রূপ নিলো , তা জানা প্রয়োজন । আর এই ভাবনা অন্যের মতামতের ওপর নয় , বরং নিজের ভাবনা দিয়ে বিচার করা উচিত । যখন আপনি এভাবে ভাবনা চিন্তা গড়ে তুলবেন । তখন আপনি দেখবেন যে , আসে পাশে ঘটে যাওয়া ঘটনার ওপর আপনার চিন্তা ধারাও বদলে যাচ্ছে । বিষয়গুলি আপনি অন্য দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখতে শুরু করবেন ।


এই বইটি লেখক সেই সমস্ত মানুষদের উদ্দেশ্যে বাতলিয়ে থাকেন , যারা কোনো না কোনো ক্ষেত্রে নিজেদের ভাবনা চিন্তা নিয়ে সন্দেহে থাকে । বিশ্বাসের ক্ষমতা সম্পর্কে আরো জানতে হলে ড. মারফির লেখা অন্যতম একটি বই " The Power of Subconscious Mind " ( " অবচেতন মনের শক্তি " ) বইটির সারাংশে দৃষ্টি নিঃক্ষেপ করতে পারেন ।



Buy Believe in Yourself from


Share Believe in Yourself


Featured Summaries