4:00 AM, October 16, 2023
অ্যালাবামার একটা মেকম্ব নামক শহরের ঘটনা এটি। এখানে শ্যামবর্ণ ও শ্বেতবর্ণ নিয়ে অনেক ভেদাভেদ চলেছে একটা সময়। এই সময়ের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই লেখক এই কাহিনী লিখেছেন।
এই কাহিনীটি ৬ বছরের শিশু স্কট ফিঞ্চ এর দিক থেকে বলা হয়েছে। সে তার ভাই জেম ও বাবা অ্যাট্টিকাস এর সঙ্গে থাকতো। মা পরলোক গমন করেছিলেন। স্কট এর পিতা পেশায় একজন উকিল ছিলেন, কিন্ত তেনার উপার্জন খুব বেশি ছিলোনা। তাই তেনাকে একটু বেশি সময় ধরে কাজ করতে হতো। যাতে তিনি তাঁর পরিবারকে গরিবত্ত থেকে রক্ষা করতে পারেন। মাতৃহীন শিশুদের লালন-পালন করার কাজ খুব একটা সহজ ছিলোনা। তাই তিনি একজন কালো পরিচারিকাকে রেখেছিলেন তাঁর সন্তানদের দেখাশোনার জন্য। এরপর যখন গরমের ছুটি পড়ে তখন এক বালক তাদের বাড়িতে আসে, যার নাম ডেল, এই বালকটি তাদের প্রতিবেশীর আত্মীয়।এবং তারা তিনজন খুব ভালো বন্ধু হয়ে যায়।
এরপর অ্যাট্টিকাস তাঁর সন্তানদের বো
ঝান যে মকিংবার্ড কে তারা যেন কোনোদিন না মারে, আর যাই করুকনা কেনো। এটা এক ধরনের পাখি যার লম্বা লেজ রয়েছে ও খুব ভালো গান গায়। আর এই পাখি একমাত্র পাখি যা কারোর ক্ষতি করেনা। তাই এদের মারলে পাপ হবে, এটা তিনি তাঁর সন্তানদের বোঝান।
এখানে এই পাখিটির সঙ্গে সেইসব মানুষদের তুলনা করা হয়েছে যারা নিষ্পাপ/নিরীহ এবং শ্যামবর্ণ। এদের শ্বেতবর্ণদের দ্বারা দাবিয়ে রাখা হতো। এদেরই পাশে মি.রেডলির বাড়ি ছিলো, তাঁর ভাই আর্থার রেডলি ওই বাড়িতে একা থাকতো আর বাচ্চারা তাকে অনেক ভয়ও পেতো কারণ সে নাকি কুকুর, বিড়াল সবকিছু মেরে খেয়ে নেয়। কিন্তু একদিন স্কট এর দাদা জেম সাহস করে সেই রেডলির বাড়ি স্পর্শ করে আসে, ঠিক তখন স্কট এর মনে হয় যেন কেউ তাদের পর্দার আড়াল থেকে দেখছে। এভাবে দিন চলে যায় ও ছুটিও শেষ হয়ে যায় এবং ডেলও বাড়ি চলে যায়। জেম এর পর রীতিমতো স্কুলে যায় কিন্তু তার প্রথম দিনটা ভালো যায়নি। এরপর আবার গরমের ছুটি পড়তে ডেল নামের বালকটি পুনরায় ঘুরতে আসে ও পুনরায় রেডলির বাড়িতে যায়। এবং রেডলি তাদের দেখে নেয় ও গুলি করে এর ফলে তারা ভয়ে কোনোরকম পালিয়ে আসে। আসার সময় জেম এর প্যান্ট কাঁটায় আটকে যায় ও সে অনেক কষ্টে ছাড়াতে না পেরে তার প্যান্টটাকে ওখানেই ছেড়ে আসে। কিন্তু দামি প্যান্ট কীভাবে সে ওখানে ছেড়ে আসতো, তাই সে রাত্রেবেলায় সেই স্থানে গিয়েছিলো, যেখানে সে তার প্যান্টটাকে ছেড়ে এসেছিলো। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে অবাক হয়েগিয়েছিল এটা দেখে যে, কে যেন তার প্যান্ট টাকে রিপু করে সুন্দর করে পাট করে সেই স্থানে রেখে দিয়েছে। এরপর জেম তার প্যান্টটা নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো। এরপর ঠান্ডার সময়ে অ্যাট্টিকাস এর এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন লেগে যায়, জেম তার বাবার সাথে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছিলো। এমন সময়ে কেউ তার গায়ে কম্বল চাপিয়ে দিলো কিন্তু কে চাপিয়ে দিলো তা সে দেখেনি কিন্তু সে জানতো যে এটা কার কাজ। এটা রেডলির কাজ।
এর কিছুদিন পরেই কোর্টে একটা কেশ তার বাবার কাছে আসে। টম রবিনশন নামে একজন শ্যামবর্ণের লোক, বব নামক এক শ্বেতাম্বর লোকের মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। সেই সময় এই সব বর্ণ ও এইসব ঘটনার অনেক চল ছিলো এক কথায় বলা যায়। শুধুমাত্র সেই কৃষ্নাঙ্গ ব্যাক্তির পাশে থাকার জন্য অ্যাট্টিকাস এর ছেলে ও মেয়ের ওপর এর প্রভাব যথেষ্ট পড়েছিল। স্কুল, প্রতিবেশীদের কাছে তাদের নানান রকমের কথা শুনতে হয়েছিল। এই সময়ে তাদের বাড়িতে যিনি কাজ করতেন ক্যালপূর্ণিয়া তাদের যথাসম্ভম সহায়তা করেছেন। সে নিজের চার্চ এ তাদের নিয়ে গেলো যেখানে কৃষ্নাঙ্গরা থাকেন। শিশু ভেবেও যে শ্বেত বর্ণের মানুষেরা তাদের ছেড়ে দেয়নি ঠিক তেমন ভাবেই এই কৃষ্নাঙ্গরা তাদের কাছে টেনে নিয়েছিলো।
এরপর অ্যাট্টিকাসএর বোন এলেক্সান্দ্রা এখানে আসে, সে তার স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে এসেছিলো। তবে বোন তার ভাইয়ের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, সে ক্যালপূর্ণিয়াকে পরিবারের সদস্যা না ভেবে একজন চাকরানীর মতোই ব্যবহার করতো। এরপর টম এর কেশ যেদিন কোর্টে ওঠে তার ঠিক আগের দিন যেখানে টম থাকে সেখানে ভিড় হয়েছিলো খুব, সেখানে কি হচ্ছে তা টম জানতোনা। এর পরের দিন অ্যাট্টিকাস তার মক্কেল এর জন্য একটা মজবুত প্রমান আনলো। কিন্ত তাতেও কোনো লাভ হলোনা। টমকে জেল এর মধ্যেই থাকতে হলো। শিশু দুজন জানলা দিয়ে সব লক্ষ্য করছিলো। জেম জানতো যে তার পিতাই জয়লাভ করবে। জেম ও স্কটের পিতা হার মানেননি, সে তার লড়াই চালু রেখেছিলো। বব অ্যাট্টিকাস কে ভয় দেখিয়েছিলো ও হুমকি দিয়েছিলো। এর মধ্যে একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছিলো এই যে টম জেল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, যার জন্য তাকে গুলিবিদ্ধ করা হয় ও সে মারা যায়। এরপর বব শুধুমাত্র হুমকি দিয়েই থেমে থাকেনি। সে অ্যাট্টিকাস এর ছেলে ও মেয়ের ওপর আক্রমণ করে। জেম হাতে ও পায়ে যথেষ্ট চোট পায়,কিন্তু সেই আক্রমন থেকে যিনি তাদের উদ্ধার করেছেন তিনি হলেন রেডলি। হাতাহাতি করার ফলে বব মারা যায়।যার উপর তারা রেগে থাকতো ও যাকে তারা ভয় পেতো ও যার প্রতি তাদের খারাপ ধারণা ছিলো।
স্কটের একটা কথা মনে পড়ে যা তার বাবা তাকে বলেছিলো যে, জগৎকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সবারই আলাদা, সুতরাং তার জায়গায় থেকে তার দিক দিয়ে বিচার করলে দেখা যাবে হয়তো যে সেও তার দিক দিয়ে সঠিক। এরপর স্কট রেডির বাড়িতে গেলো ও সেই বালকোনিতে গিয়ে দাড়ালো এবং পিতার বলা প্রতিটি কথা সে উপলব্ধি করতে পারলো। এরপর সে বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
🙏ধন্যবাদ🙏
4:00 AM, September 01, 2022