THE POWER OF SELF-ESTEEM

NATHANIEL BRANDEN

সংজ্ঞা:-

আত্মসম্মান আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে থাকা একটি শক্তিশালী শক্তি। এটি স্ব-মূল্যের সেই সহজাত বোধের চেয়ে অনেক বেশি জুড়ে রয়েছে, যা সম্ভবত আমাদের মানব জন্মগত অধিকার, যা স্ফুলিঙ্গ করে যে আমরা যারা সাইকোথেরাপিস্ট বা শিক্ষক, আমরা যাদের সাথে কাজ করি, তাদের ভক্ত করতে চাই। সেই স্ফুলিঙ্গটি কেবল আত্মসম্মানের পূর্বকক্ষ।

লেখক চেয়েছেন, আপনি এই বইটি পড়তে শুরু করার সাথে সাথে 'আত্মসম্মান' বলতে লেখক যা বলতে চেয়েছেন তা আপনি সঠিক ভাবে জানুন। এমন অনেক সংজ্ঞা আছে যেগুলো বিভ্রান্তিকর, কম শক্তিশালী বা কম উপযোগী বলে মনে করা হয়। যদি আত্ম সম্মান তার সুনির্দিষ্ট অর্থ হারিয়ে ফেলে এবং একটি নিছক গুঞ্জন শব্দের স্তরে নেমে যায়, তবে আমরা যাদের এটিকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, তাদের দ্বারা এদিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হবে না।

আত্মসম্মান হল সেই অভিজ্ঞতা যা আমাদের জীবনের জন্য এবং জীবনের প্রয়োজনীয়তার জন্য উপযুক্ত। আরও নির্দিষ্টভাবে, আত্মসম্মান হল…..

১) আমাদের চিন্তা করার এবং জীবনের মৌলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতার ওপর আস্থা।

২) আত্মসম্মান আমাদের সুখী হওয়ার অধিকারের প্রতি আস্থা, যোগ্য হওয়ার অনুভূতি আমাদের চাহিদা এবং ইচ্ছা জাহির করা এবং আমাদের প্রচেষ্টার ফল উপভোগ করার প্রতি আস্থা।

সারাবিশ্বে আত্মসম্মানের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি জাগরণ রয়েছে। আমরা স্বীকার করি যে, একজন মানুষ যেমন সুস্থ আত্মসম্মান ব্যতীত সম্ভাব্যতা উপলব্ধি করার আশা করতে পারেনা, তেমনি একটি সমাজও পারেনা, যার সদস্যরা নিজেদের মূল্য দেয় না এবং তাদের মনকে বিশ্বাস করে না।

লেখক এই সমস্যাটির সমাধান করতে চেয়েছেন, অতএব 'আত্মসম্মান' বলতে কী বোঝায় এবং কীভাবে এবং কেন এটি আমাদের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে, শুধুমাত্র এই ভিত্তির ওপরই আমরা আত্মসম্মানিত মনোবিজ্ঞানের নীতিগুলি সাইকোথেরাপিতে এবং আমাদের স্কুল, সংস্থা এবং প্রতিটি ধরনের সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলিতে কীভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে সে সম্পর্কে একটি উপলব্ধি তৈরি করতে পারি।

আত্মসম্মানের একটি সঠিক অর্থ রয়েছে যা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার মান হল যে, এটি আমাদেরকে অন্য সকলের থেকে বাস্তবতার একটি বিশেষ দিককে আলাদা করতে দেয়, যাতে আমরা এটির সম্পর্কে চিন্তা করতে পারি এবং স্পষ্টতা এবং ফোকাসের সাথে এটির সাথে কাজ করতে পারি। যদি আমরা জানতে চাই যে আত্মসম্মান কিসের উপর নির্ভর করে, কিভাবে এটি আমাদের বাচ্চাদের মধ্যে লালন পালন করা যায়, স্কুলে এটিকে সমর্থন করা যায়, সংস্থাগুলিতে এটিকে উৎসাহিত করা যায়, সাইকোথেরাপিতে এটিকে শক্তিশালী করা যায় বা নিজেদের মধ্যে এটিকে বিকাশ করা যায়, তাহলে আমাদের জানতে হবে আমরা কী সঠিকভাবে লক্ষ্য করি। আমরা দেখতে পাচ্ছি না এমন একটি লক্ষ্যে আঘাত করার সম্ভাবনা কম।

যদি আমাদের আত্মসম্মানের ধারণা অস্পষ্ট হয়, তাহলে আমরা যে উপায়গুলি গ্রহণ করি তা এই স্পষ্টতাকে প্রতিফলিত করবে। যদি আমাদের আত্মমর্যাদার জন্য উদ্যম যথাযথ বুদ্ধিবৃত্তিক কঠোরতার সাথে না মেলে, তবে আমরা কেবলমাত্র সার্থক ফলাফল দিতে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই নয়, ক্ষেত্রটিকে অসম্মানিত করারও ঝুঁকি নিয়ে থাকি।

বইটির উদ্দেশ্য:-

ক্ষতিগ্রস্ত আত্মসম্মানকে নিরাময় বা পুনর্নির্মাণের জন্য আমরা কী করতে পারি সেই মহান সমস্যাটিকে সম্পূর্ণভাবে সম্বোধন করা এই বইটির উদ্দেশ্য নয়, বরং আরও মৌলিকভাবে অন্বেষণ করা আত্মসম্মান কী।

আত্মসম্মান কী:-

আমাদের অধিকাংশই কর্মহীন পরিবারের সন্তান। লেখক এটা বলতে চাচ্ছেন না যে আমাদের বেশিরভাগই বাবা-মা মদ্দপ ছিলেন বা যৌন বা অন্যথায় নির্যাতিত ছিলেন বা আমরা শারীরিক সহিংসতার পরিবেশে বড় হয়েছি। লেখক বলতে চেয়েছেন যে, আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই এমন বাড়িতে বড় হয়েছে যা পরস্পর বিরোধী সংকেত, বাস্তবতার অস্বীকার, পিতা-মাতা মিথ্যা কথা এবং আমাদের মন এবং ব্যক্তির প্রতি পর্যাপ্ত সন্ধানের অভাব দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। লেখক একটি গড় উদাহরণ দিয়েছেন। এই সমস্যাটি নিয়ে বিশিষ্ট পারিবারিক থেরাপিস্ট ভার্জিনিয়া সাতির একটি দুর্দান্ত এবং ভয়ংকর উদাহরণ দিয়েছেন। তিনি একটি শিশু, একজন মা এবং একজন পিতার মধ্যে একটি দৃশ্য বলেছেন। মায়ের মুখে অতৃপ্তির ছাপ দেখে শিশুটি প্রশ্ন করে তার মন খারাপ নাকি, তার মা কণ্ঠ সংকুচিত এবং শক্ত রেখে জবাব দেয়, সে ভালো আছে। তারপর তার বাবা রেগে বলেন, মাকে বিরক্ত না করতে। শিশুটি মা এবং বাবার মধ্যে ঘুরে ফিরে তাকায়, একেবারে বিভ্রান্ত এবং তিরস্কার বুঝতে অক্ষম। শিশুটির সঠিকভাবে বুঝতে পারে যে কিছু মাকে কষ্ট দিচ্ছে এবং যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। মা বাস্তবতা সম্পর্কে সন্তানের উপলব্ধি বাতিল করে কাজ করে; সে মিথ্যা বলেছে। সম্ভবত মা তার সন্তানকে সুরক্ষা করার বিপথগামী আকাঙ্ক্ষা থেকে বা সম্ভবত কারণ তিনি নিজেই জানেন না কীভাবে তার অসুখ সামলাতে হয়। তিনি যদি নিজের অসুখ সহজ ভাবে এবং খোলাখুলি ভাবে স্বীকার করতেন তিনি সন্তানের মমতাকে আরও শক্তিশালী করতেন।

বাবা-মা ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্য দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় তা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। কিন্তু সরল বাস্তবতাকে অস্বীকার করার ক্ষেত্রে, তারা শিশুটিকে এমন ধারণা দেয় যে, সে এমন এক অবদ্ধ জগতে রয়েছে যেখানে উপলব্ধি অবিস্বস্ত এবং চিন্তা নিরর্থক। এর সবকিছুই শিশুটির বিকাশে প্রায় অবশ্যই একটি ক্রমবর্ধমান প্রভাব ফেলবে। যদি শিশুটি এই সিদ্ধান্তে আসে যে তার মন পুরুষত্বহীন বা তার ক্ষমতা সন্দেহজনক, তাহলে কীভাবে একটি ভালো আত্মসম্মান গড়ে উঠতে পারে? আর তাছাড়া সে জীবনের মুখোমুখি হবে কীভাবে?

জটিল কারণগুলি আমাদের আত্মসম্মান নির্ধারণ করে:-

লেখক এটা বোঝাতে চান নি যে আমাদের বাবা-মা আমাদের সাথে কীভাবে আচরণ করে তা আমাদের আত্মসম্মানের স্তর নির্ধারণ করে। বিষয়টি তার চেয়েও জটিল। আমাদের নিজেদের একটি নির্ধারক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা নিজেরাই কার্যকারক; আমরা জীবনের নাটকে সক্রিয় প্রতিযোগী; প্রবর্তক এবং নিছক প্রতিক্রিয়াকারী নয়। স্পষ্টতই, তবে পারিবারিক পরিবেশ ভালো বা খারাপের জন্য প্রভাব ফেলতে পারে। পিতা মাতারা আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান লালন করতে পারেন বা এই ধরনের মনোভাব শেখার পথে ভয়ংকর বাঁধাগুলি স্থাপন করতে পারেন। তারা বোঝাতে পারেন যে তারা তাদের সন্তানের যোগ্যতা এবং ভালোটাই বিশ্বাস করেন বা তারা বিপরীতটিও জানাতে পারেন। তারা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারেন যেখানেই শিশু নিরাপদ এবং নিরাপদ বোধ করে বা তারা সন্ত্রাসের পরিবেশও তৈরি করতে পারেন। তারা সুস্থ আত্মসম্মানের উত্থানকে সমর্থন করতে পারেন বা তারা এটিকে নষ্ট করার জন্য ধারণা যোগ্য সবকিছু করতে পারেন।

আত্মসম্মান বৃদ্ধিতে বাধা:-

পিতা মাতারা গুরুতর বাধা নিক্ষেপ করে শিশুর আত্মসম্মানবোধ বৃদ্ধির জন্য যখন তারা….

. বোঝান যে শিশুটি যথেষ্ট নয়।

. 'অগ্রহণযোগ্য' অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য শিশুকে শাস্তি দেন।

. বোঝান যে শিশুর চিন্তা বা অনুভূতির কোন মূল্য বা গুরুত্ব নেই।

. শিশুকে অত্যাধিক রক্ষা করেন এবং এর ফলে স্বাভাবিক শিক্ষা এবং আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করেন।

. বাস্তবতা সম্পর্কে একটি শিশুর উপলব্ধি অস্বীকার করেন এবং শিশুকে তার মনে সন্দেহ করতে উৎসাহিত করেন।

আত্ম সম্মানের একটি সংজ্ঞা:-

আত্মসম্মান হল সেই অভিজ্ঞতা যা আমাদের জীবনের জন্য এবং জীবনের প্রয়োজনীয়তার জন্য উপযুক্ত। আরও নির্দিষ্টভাবে, আত্মসম্মান হল….

১) আমাদের চিন্তা করার এবং জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতার উপর আস্থা।

২) আমাদের সুখী হওয়ার অধিকারে আত্মবিশ্বাস,যোগ্য, আমাদের চাহিদা এবং চাওয়াকে জাহির করার এবং আমাদের প্রচেষ্টার ফল ভোগ করার অধিকারী হওয়ার অনুভূতি।

একটি শক্তিশালী মানুষের প্রয়োজন:-

আত্মসম্মান হল একটি শক্তিশালী মানুষের প্রয়োজন। এটি একটি মৌলিক মানবিক চাহিদা যা জীবন প্রক্রিয়ায় অপরিহার্য অবদান রাখে; এটি স্বাভাবিক এবং সুস্থ বিকাশের জন্য অপরিহার্য।

ইতিবাচক আত্মমর্যাদার অভাবে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক বৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়ে। ইতিবাচক আত্মসম্মান কার্যত চেতনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে, প্রতিরোধ শক্তি এবং পুনর্জন্মের ক্ষমতা প্রদান করে। যখন আত্মসম্মান কম থাকে, তখন জীবনের প্রতিকূলতার মুখে আমাদের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পায়। আমরা বিপর্যয়ের আগে ভেঙ্গে পড়ি যে আত্মের একটি স্বাস্থ্যকর অনুভূতি পরাজিত হতে পারে। আমরা আনন্দ অনুভব করার চেয়ে ব্যথা এড়ানোর আকাঙ্ক্ষার দ্বারা বেশি প্রভাবিত হই। আমাদের উপর ইতিবাচক এর চেয়ে নেতিবাচক শক্তি বেশি।

নিজেদের মূল্যায়ন:-

আমাদের মন এবং মূল্যের উপর বাস্তবসম্মত আস্থা থাকে, আমরা যদি নিজেদের মধ্যে নিরাপদ বোধ করি তবে আমরা অনুভব করতে থাকি বিশ্বে আমাদের জন্য উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে। আত্মমর্যাদা ক্ষমতায়ন করে, উৎসাহিত করে, অনুপ্রাণিত করে। এটি আমাদের অর্জন করতে অনুপ্রাণিত করে এবং আমাদের অর্জনে আনন্দ এবং গর্ব করার অনুমতি দেয়। এটি আমদের সন্তুষ্টি অনুভব করতে দেয়। আত্ম-মূল্যের একটি সুস্থবোধ আমাদের প্রয়োজন। আমাদের একাধিক প্রয়োজন রয়েছে এবং আমাদের অস্তিত্বের সমস্ত সমস্যার একক সমাধান নেই। একটি সু বিকশিত আত্মবোধ আমাদের সুস্থতার একটি প্রয়োজনীয় শর্ত কিন্তু পর্যাপ্ত শর্ত নয়। এর উপস্থিতি পরিপূর্ণতার গ্যারান্টি দেয় না, তবে এর অভাব কিছুটা উদ্বেগ, হতাশার গ্যারান্টি দেয়।

আত্মসম্মান নিজেকে একটি প্রয়োজন হিসাবে ঘোষণা করে যে এর অনুপস্থিতি আমাদের কাজ করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করে। এইজন্যেই আমরা বলি এটির বেঁচে থাকার মূল্য রয়েছে।

বুদ্ধিমান পছন্দের জন্য আত্মসম্মান প্রয়োজন:-

আমাদের সচেতন স্তরে যত বেশি পছন্দ এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আত্মসম্মানের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয়তা তত বেশি জরুরী। আমরা আমাদের চিন্তা, শেখার, বোঝার ক্ষমতার প্রতি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের মনের কার্যকারিতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী, কঠিন বা জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে আমরা অধ্যবসায় করার প্রবণতা রাখি। অধ্যবসায় রেখে, আমরা ব্যর্থ হবার চেয়ে প্রায় সফল হওয়ার প্রবণতা রাখি, এইভাবে আমাদের কার্যকারিতার বোধকে নিশ্চিত ও শক্তিশালী করে। যে পরিমাণে আমরা আমাদের মনের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ করি এবং আমাদের চিন্তাভাবনার প্রতি আস্থার অভাব করি, আমরা অধ্যবসায় না করে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা রাখি।

উচ্চ আত্ম সম্মান দাবি করা লক্ষ্য গুলির উদ্দীপনা চাই এবং দাবীকৃত লক্ষ্যে পৌঁছানো ভালো আত্মসম্মানকে লালন করে। নিম্ন আত্ম- সম্মান পরিচিত এবং অপ্রত্যাশিতদের নিরাপত্তা খোঁজে এবং নিজেকে পরিচিত এবং অপ্রত্যাশিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা আত্মসম্মানকে দুর্বল করে।

আমাদের আত্মমর্যাদা যত বেশি, আমরা তত বেশি সজ্জিত আমাদের ক্যারিয়ারে বা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে প্রতিকূলতার সাথে মোকাবিলা করার জন্য, পতনের পর আমরা যত তাড়াতাড়ি নিজেকে তুলে ধরব, তত বেশি শক্তি আমাদের নতুন করে শুরু করতে হবে। আমাদের আত্মসম্মান যত বেশি হবে, তত বেশি উচ্চভিলাসী হতে হবে, ক্যারিয়ার বা আর্থিক অর্থে নয়, তবে আমরা আবেগ, সৃজনশীল, আধ্যাত্মিকভাবে জীবনের যা অনুভব করতে চাই তার পরিপ্রেক্ষিতে।

আমাদের আত্মসম্মান যত বেশি আমরা তত বেশি নিষ্পত্তি বিষাক্ত সম্পর্কের পরিবর্তে পুষ্টিকর সম্পর্ক গঠন করতে। স্বাস্থ্য স্বাস্থ্যের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং অন্যদের মধ্যে জীবনীশক্তি এবং বিস্তৃতি স্বাভাবিকভাবে শূন্যতা এবং নির্ভরতার চেয়ে ভালো আত্মসম্মান সম্পন্ন ব্যক্তির কাছে বেশি আকর্ষণীয়।

স্ব-কার্যকারিতা এবং আত্মসম্মান:-

আত্মসম্মানের দুটি আন্ত:সম্পর্কিত দিক রয়েছে:-

১. ব্যক্তিগত কার্যকারিতার অনুভূতি (আত্ম-কার্যকারিতা)

২. ব্যক্তিগত মূল্যবোধ (আত্মসম্মান)।

এটি সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি মনস্তাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা হিসাবে, এটি এই দুটি দিকের সমন্বিত সমষ্টি।

স্ব-কার্যকারিতা মানে, আমার মনের কার্যকারিতার ওপর আস্থা, আমার চিন্তা করার ক্ষমতা, যে প্রক্রিয়াগুলির দ্বারা আমি বিচার করি, নির্বাচন করি, সিদ্ধান্ত করি; আমার স্বার্থ এবং প্রয়োজনের ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে এমন বাস্তবতার ঘটনাগুলি বোঝার আমার ক্ষমতার ওপর আস্থা; জ্ঞানীয় আত্মবিশ্বাস; জ্ঞানীয় স্বনির্ভরতা।

আত্মসম্মান মানে, আমার মূল্যের নিশ্চয়তা; আমার বেঁচে থাকার এবং সুখী হওয়ার অধিকারের প্রতি একটি ইতিবাচক মনোভাব; যথাযথভাবে আমার চিন্তা, ইচ্ছা এবং চাহিদা জাহির করা; এই অনুভূতি যে আনন্দ আমার স্বাভাবিক জন্মগত অধিকার।

বিবেচনা করুন যে যদি একজন ব্যক্তি জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য অপর্যাপ্ত বোধ করেন, যদি একজন ব্যক্তির মৌলিক আত্মবিশ্বাস, তার মনের ওপর আস্থার অভাব থাকে, তাহলে আমরা আত্মসম্মান ঘাটতির উপস্থিতি চিনতে পারব, তার অন্য সম্পদ যাই হোক না কেন।

আত্মসম্মানের দ্বৈত স্তম্ভ:-

স্ব-কার্যকারিতা এবং আত্মসম্মান সুষ্ঠু ও আত্মসম্মানের দ্বৈত স্তম্ভ। যেকোনো একটির অভাব হলে আত্মসম্মান নষ্ট হয়। তারা তাদের মৌলিকতার কারণে শব্দটির সংজ্ঞায়িত বৈশিষ্ট্য। তারা আত্মসম্মানের গৌণ অর্থ নয় বরং এর সারাংশ কে উপস্থাপন করে। স্ব-কার্যকারিতার অভিজ্ঞতা একজনের জীবনের ওপর নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি তৈরি করে যা আমরা মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার সাথে যুক্ত করি, একজনের অস্তিত্বের অধ্যাবশ্যক কেন্দ্রে থাকার অনুভূতি। আত্মসম্মানের অভিজ্ঞতা অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে সম্প্রদায়ের একটি উপকারী, অ-স্নায়বিক অনুভূতি সম্ভব করে তোলে। একটি প্রদত্ত ব্যক্তির মধ্যে আত্মসম্মানের স্তর অনিবার্য ওঠানামা হবে, যেমন সমস্ত মানসিক অবস্থার ওঠানামা রয়েছে।

কীভাবে আমরা আমাদের আত্মসম্মান অনুভব করব?:-

যদিও আমরা কখনো কখনো নিজের সম্পর্কে একটি দৃঢ় বিশ্বাস হিসাবে আত্মসম্মানের কথা বলি, নিজেকে একটি বিশেষ উপায় অনুভব করার জন্য একটি স্বভাবের কথা বলা আরও সঠিক।

১) জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মৌলিকভাবে যোগ্য হিসাবে; নিজের মন এবং এর প্রতিক্রিয়া গুলোতে বিশ্বাস করুন; স্ব-কার্যকারিতা‌।

২) সাফল্য এবং সুখের যোগ্য হিসাবে; নিজেকে এমন একজন হিসেবে উপলব্ধি করা যার কাছে কৃতিত্ব, সাফল্য, সম্মান, বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা উপযুক্ত; আত্মমর্যাদা।

কেন আমাদের আত্মসম্মান প্রয়োজন:-

আত্মসম্মান বুঝতে আমাদের অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। কেন এর প্রয়োজন দেখা দেয়? নিম্ন প্রাণীদের জন্য তাদের চেতনার কার্যকারিতা বা তাদের প্রাণীর যোগ্যতার প্রশ্ন নেই। কিন্তু মানুষ ভাবছে: আমি কি আমার মনকে বিশ্বাস করতে পারি? আমি কি যথেষ্ট? আমি কি চিন্তা করতে সক্ষম? আমার আদর্শ এবং আমার অনুশীলনের মধ্যে কি মিল আছে? আমি কি একজন ভালো মানুষ? এটা স্বতঃসিদ্ধ নয় কেন? এই ধরনের প্রশ্নগুলো ঘটতে হবে। আমাদের আত্মসম্মানের প্রয়োজন দুটি মৌলিক তথ্যের ফলাফল, উভয়ই আমাদের প্রজাতির অন্তর্নিহিত। প্রথমত, আমরা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এবং আমাদের চেতনার যথাযথ ব্যবহারের ওপর আমাদের সফল দক্ষতার জন্য নির্ভর করি। আমাদের জীবন এবং সুস্থতা আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। দ্বিতীয়তঃ, আমাদের চেতনার সঠিক ব্যবহার স্বয়ংক্রিয় নয়, প্রকৃতির দ্বারা "উইয়ার্ড ইন" নয়। এর ক্রিয়া-কলাপ নিয়ন্ত্রণে পছন্দের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে, অতএব-ব্যক্তিগত দায়িত্ব।

মন বেঁচে থাকার মৌলিক হাতিয়ার:-

অচেতনতায় সক্ষম অন্যান্য প্রজাতির মত আমরা আমাদের বেঁচে থাকার এবং সুস্থতার জন্য আমাদের চেতনার স্বতন্ত্ররূপ, স্বতন্ত্রভাবে মানবরূপ, আমাদের ধারণাগত অনুষদ বিমূর্তকরণ, সাধারণীকরণ এবং একত্রিকরণের অনুষদের নির্দেশনার ওপর নির্ভরশীল।

আমাদের জীবন এবং সুস্থতা আমাদের মনের যথাযথ অনুশীলনের ওপর নির্ভর করে।

মন অবিলম্বে স্পষ্ট সচেতনতার চেয়ে বেশি। এটি কাঠামো এবং প্রক্রিয়াগুলির একটি জটিল স্থাপত্য। এতে মৌখিক, রৈখিক, বিশ্লেষণাত্বক প্রক্রিয়ার চেয়েও বেশি কিছু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মন হল সেই সব যার দ্বারা আমরা বিশ্বের কাছে পৌঁছাই।

আমাদের পছন্দগুলি আমাদের আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করে:-

আমাদের চেতনার ক্রিয়া-কলাপ এর বিষয়ে আমরা যে পছন্দগুলি করি তা সাধারণভাবে আমাদের জীবন এবং বিশেষত আমাদের আত্মসম্মানের জন্য প্রচুর প্রভাব ফেলে। নিম্নলিখিত বিকল্প গুলি দ্বারা আমাদের জীবন এবং আমাদের আত্মবোধের ওপর প্রভাব বিবেচনা করা যায়:-

সচেতনতা বনাম অসচেতনতা; স্বচ্ছতা বনাম অস্পষ্টতা; বাস্তবতায় প্রতি শ্রদ্ধা বনাম বাস্তবতা পরিহার; সত্যের প্রতি শ্রদ্ধা বনাম সত্যের প্রতি উদাসীনতা; বোঝার চেষ্টায় অধ্যবসায় বনাম ত্যাগ প্রচেষ্টার দান; নিজের সাথে সততা বনাম অসততা; নতুন জ্ঞানের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা বনাম বদ্ধমানসিকতা; সংহতি দিয়ে উদ্বেগ বনাম উপেক্ষা ঐতিহ্য; ভুল দেখতে এবং সংশোধন করার ইচ্ছা বনাম ভুলের অধ্যবসায়; দায়িত্বের প্রতি আনুগত্য চেতনা বনাম সেই দায়িত্বের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।

যদি কেউ প্রকৃত আত্মসম্মানের ভিত্তি বুঝতে চায়, তাহলে এই তালিকাটি শুরু করার জন্য একটি ভালো জায়গা।

চেতনা, দায়িত্ব, নৈতিক পছন্দ:-

মূল বিষয় এই নয় যে আমাদের আত্মসম্মান আমাদের করা পছন্দ গুলির দ্বারা প্রভাবিত হওয়া উচিত বরং এটি আমাদের স্বভাব দ্বারা প্রভাবিত হওয়া উচিত। যদি আমরা এমন অভ্যাসের নিদর্শন গড়ে তুলি যা আমাদের কার্যকরী কার্যসম্পাদনের জন্য পঙ্গু করে বা অক্ষম করে এবং যা আমাদের নিজেদেরকে অবিশ্বাসের কারণ করে, তাহলে এটা অযৌক্তিক হবে। আমরা নিজেদের সম্পর্কে কেমন অনুভব করি তার সাথে আমাদের ক্রিয়া-কলাপের কোনো সম্পর্ক নেই বা থাকা উচিত নয়। এটি একটি নির্দিষ্ট আচরণের সাথে নিজেকে চিহ্নিত করার বিরুদ্ধে সতর্কতা।

আমরা এমন একটি প্রজাতি যা বিশ্বাসঘাতকতা করতে এবং আমাদের বেঁচে থাকার উপায় গুলির বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম, যা সৃষ্টি করে আমাদের আত্ম মর্যাদার প্রয়োজন- যা জানা দরকার যে আমরা আমাদের জীবন এবং সুস্থতার প্রয়োজন হিসাবে কাজ করছি।

আত্মমর্যাদা এবং কৃতিত্ব:-

আত্মসম্মান একটি বিনামূল্যের উপহার নয় যে আমাদের শুধুমাত্র দাবি প্রয়োজন, সময়ের সাথে সাথে এর দখল একটি কৃতিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। খাঁটি আত্মসম্মান সাধারণভাবে 'নিজের সম্পর্কে ভালো বোধ করা' এমন একটি বিষয় যা অন্তত অস্থায়ীভাবে, একটি আনন্দদায়ক মিলন থেকে শুরু করে একটি নতুন পোশাক কেনা থেকে প্রশংসা পাওয়ার জন্য যেকোনো উপায়ে পররচিত হতে পারে।

সুস্থ আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য গুলির মধ্যে একটি হল যে, তারা তাদের ক্ষমতা এবং কৃতিত্বকে বাস্তবসম্মতভাবে মূল্যায়ন করার প্রবণতা রাখে, তাদের অস্বীকার করে না বা বাড়াবাড়ি করে না।

প্রশংসা আত্মসম্মান নয়:-

অন্যের প্রশংসা আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি করে না। জ্ঞান, দক্ষতা, বস্তুগত সম্পদ, জনহিতকর প্রচেষ্টা এই জিনিসগুলি কখনো কখনো আমাদের নিজেদের সম্পর্কে সাময়িকভাবে ভালো বোধ করাতে পারে বা বিশেষ পরিস্থিতিতে আরো স্বাচ্ছন্দ বোধ করাতে পারে। কিন্তু সান্তনা আত্মসম্মান নয়। আত্মসম্মানবোধ সেমিনার পরিচালনা করেন এমন একজন ব্যক্তি ঘোষণা করেছিলেন যে, আমাদের আত্মসম্মান বাড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় গুলির মধ্যে একটি হল এমন লোকেদের সাথে নিজেকে ঘিরে রাখা যারা আমাদের সম্পর্কে উচ্চ চিন্তা করে।

খাঁটি গর্ব:-

যদি আত্মসম্মান আমাদের মৌলিক যোগ্যতা এবং মূল্যের অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত হয়, তবে গর্ব আমাদের কর্ম এবং কৃতিত্বের কারণে নিজেদের মধ্যে আরও স্পষ্টভাবে সচেতন আনন্দের সাথে সম্পর্কিত। আত্মমর্যাদা বিবেচনা করে কি করা দরকার এবং বলে 'আমি পারি'। অহংকার, কি সম্পন্ন হয়েছে তা বিবেচনা করে এবং বলে 'আমি করেছি'। খাঁটি গর্বের সাথে বড়াই বা অহংকারের কোন মিল নেই। এটি একটি বিপরীত মূল থেকে আসে। শূন্যতা নয় তৃপ্তিই এর উৎস। এটি প্রমাণ করার জন্য নয় বরং উপভোগ করার জন্য। গর্ব হল অর্জনের মানসিক পুরস্কার।

আত্মসম্মান সমর্থন করে:-

আমরা সরাসরি আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করতে পারি না, আমাদের নিজের বা অন্য কারো নয়, কারণ আত্মসম্মান একটি পরিণতি, অভ্যন্তরীণভাবে উৎপন্ন অনুশীলনের একটি পণ্য, যেমন সচেতন ভাবে, দায়িত্বশীল ভাবে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এবং সততার সাথে জীবন যাপন করা। যদি আমরা বুঝতে পারি যে সেই অভ্যাসগুলি কি, আমরা সেগুলিকে নিজেদের মধ্যে শুরু করতে এবং অন্যদের সাথে এমন ভাবে আচরণ করতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হতে পারি যাতে তাদের অনুরূপ করতে সুবিধা হয় বা উৎসাহিত করা যায়। পরিবার, স্কুল বা কর্মক্ষেত্রে আত্মসম্মানকে উৎসাহিত করার জন্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যা আত্মসম্মানকে শক্তিশালী করে এমন অনুশীলনগুলিকে সমর্থন করে এবং শক্তিশালী করে।

কীভাবে সুস্থ আত্মসম্মান প্রকাশ করে?

কিছু মোটামুটি সহজ এবং সরাসরি উপায় আছে যেখানে সুস্থ আত্মসম্মান আমাদের সত্তায় নিজেকে প্রকাশ করে। এর মধ্যে রয়েছে–

. প্রত্যক্ষতা এবং সততার সাথে কৃতিত্ব বা ত্রুটিগুলি সম্পর্কে কথা বলা সহজ, যেহেতু একজন সত্যের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কযুক্ত।

. সমালোচনার জন্য উন্মুক্ত এবং ভুল স্বীকার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করুন কারন একজনের আত্মসম্মান পরিপূর্ণতার চিত্রের সাথে আবদ্ধ নয়।

. নতুন ধারণা, নতুন অভিজ্ঞতা, জীবনের নতুন সম্ভাবনার প্রতি খোলামেলা মনোভাব এবং কৌতুহল।

. পরিস্থিতি এবং চ্যালেঞ্জে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে নমনীয়। উদ্ভাবনশীলতা এবং এমনকি খেলাধুলার মনোভাব দ্বারা চালিত, যেহেতু একজন নিজের মনকে বিশ্বাস করে এবং জীবনকে সর্বনাশ বা পরাজয় হিসেবে দেখেনা।

. উদ্বেগ বা নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি, যদি তারা নিজেদের উপস্থাপন করে তবে তাদের ভয় দেখানো বা অভিভূত করার সম্ভাবনা কম হবে, যেহেতু তাদের গ্রহণ করা, তাদের পরিচালনা করা এবং তাদের উপরে ওঠা খুব কমই অসম্ভব কঠিন বোধ করে।

. মানসিক চাপের পরিস্থিতিতে সম্প্রীতি এবং মর্যাদার মান রক্ষা করার ক্ষমতা।

তারপর, সম্পূর্ণরূপে শারীরিক স্তরে, নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য গুলি পর্যবেক্ষণ করতে পারে–

. চোখ যা সজাগ, উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত।

. একটি মুখ যা শিথিল এবং প্রাকৃতিক রং এবং ভালো ত্বকের প্রাণবন্ততা প্রদর্শন করে।

. একটি শিথিল চোয়াল।

. কাঁধ শিথিল অথচ খাড়া।

. বাহুবলি একটি স্বাচ্ছন্দ্য, প্রাকৃতিক উপায়ে ঝুলে থাকে।

শিথিল করণের থিমটি বারবার ঘটে। শিথিলতা বোঝায় যে আমরা নিজেদের থেকে লুকিয়ে নেই এবং আমরা যারা আছি তার সাথে যুদ্ধ করছি না।

কতটা আত্মসম্মান যথেষ্ট:-

খুব বেশি কি আত্ম আত্মসম্মান থাকা সম্ভব? না এটা না; খুব বেশি শারীরিক স্বাস্থ্য থাকা সম্ভব নয়। কখনো কখনো আত্মসম্মান গর্ব বা বড়াই বা অহংকার সঙ্গে বিভ্রান্ত হয়, কিন্তু এই ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়, খুব বেশি আত্মসম্মান নয়, কিন্তু খুব কম নয়। তারা আত্মসম্মানের অভাব প্রতিফলিত করে। উচ্চ আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা নিজেদেরকে অন্যদের থেকে উচ্চতর করতে চালিত হয় না; তারা নিজেদেরকে তুলনামূলক মানদন্ডের বিরুদ্ধে পরিমাপ করে তাদের মূল্য প্রমাণ করতে চায় না। তাদের আনন্দ হচ্ছে তারা কে হওয়াতে, অন্য কারো থেকে ভালো হওয়ার মধ্যে নয়।

আত্মসম্মানের উৎসের প্রতিফলন:-

আত্মসম্মানের প্রয়োজন এই সত্য থেকে উদ্ভূত হয় যে, আমাদের চেতনার কাজটি স্বেচ্ছায়, যা আমাদেরকে একটি অনন্য দায়িত্ব প্রদান করে, জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য নিজেদেরকে যোগ্য করে তোলা। আমরা সচেতন ভাবে, দায়িত্বশীল ভাবে এবং সততার সাথে জীবন যাপন করে এটি অর্জন করি। আমাদের নিজেদেরকে বিচার করা উচিত যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্যের ইচ্ছা এবং পছন্দের ওপর নির্ভর করে এমন দ্বারা নিজেকে বিচার করা আমাদের আত্মসম্মানের জন্য স্পষ্টই বিপদজনক। লক্ষ লক্ষ মানুষের ট্রাজেডি হল যে তারা এই কাজটি করে।

যেহেতু আমরা সামাজিক জীব, তাই অন্যদের কাছ থেকে সম্মানের কিছু পরিমাপ প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের আত্ম মূল্যায়নকে অন্যের ভাল মতামতের সাথে বেঁধে রাখা হল সবচেয়ে অপমানজনক উপায়, নিজেদেরকে তাদের করুণায় রাখা।

আমরা একটি আকর্ষণীয় চেহারাতে আনন্দ পেতে পারি, কিন্তু আমাদের আত্মসম্মানকে আমাদের চেহারার সাথে বেঁধে রাখা হল প্রতিবছর পেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসের মধ্যে থাকা। কারণ বয়সের চিহ্নগুলি অনিবার্যভাবে আমাদের উপর অগ্রসর হয়। যদি আমাদের সুন্দর চেহারা আমাদের আচরনের চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতর হয়, তবে তারা অসাধুতা, দায়িত্বহীনতা বা অযৌক্তিকতার দ্বারা সৃষ্ট মানসিক ক্ষতগুলিকে খুব কমই নিরাময় করতে পারে।

কার্যকরী হতে ইচ্ছা:-

কার্যকরী হওয়ার ইচ্ছার ধারণাটি একটি এক্সটেনশন বোঝার ইচ্ছা। এটি অসুবিধার মুখে অধ্যবসায়ের দিকটির ওপর জোর দেয়: যখন বোঝা সহজে আসে না তখন বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া; একটি দক্ষতা বা পরাজয়ের মুখে একটি সমস্যার সমাধান আয়ত্ত করা; পথে অনেক বাধার সম্মুখীন হওয়ার সময় লক্ষ্যের প্রতি অঙ্গীকার বজায় রাখা।

কার্যকরী হওয়ার ইচ্ছা হল আমাদের অহং বা নিজেকে ক্ষণিকের অসহায়ত্ব এবং পরাজয়ের অনুভূতির সাথে শনাক্ত করতে অস্বীকার করা।

আত্মসম্মান এবং আইকিউ:-

কোন গবেষণায় কখনো বলা হয়নি যে ভালো আত্মসম্মান আইকিউর সাথে সম্পর্কযুক্ত। এবং এটি আশ্চর্যজনক নয়। আত্মসম্মান একটি ফাংশন, আমাদের দেশীয় দান নয়, আমাদের সচেতনতা, বাস্তবতার সাথে আমাদের সম্পর্কের সততা, আমাদের ব্যক্তিগত সততার স্তর সম্পর্কে আমরা যে পছন্দগুলি করি তা আমাদের চেতনা ব্যবহার করার পদ্ধতি।

আত্মসম্মান প্রতিযোগিতামূলক বা তুলনামূলক নয়। এ প্রেক্ষাপটটি সর্বদা ব্যাক্তিদের সাথে নিজের এবং নিজের পছন্দের সাথে সম্পর্কযুক্ত। উচ্চ বুদ্ধিমত্তা এবং উচ্চ আত্মমর্যাদার ব্যক্তি উচ্চ আত্মসম্মান সম্পন্ন এবং আরও বিনয়ী বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তির চেয়ে জীবনের জন্য বেশি উপযুক্ত বা সুখের যোগ্য বলে মনে করেন না। দুজন মানুষ সমানভাবে সুস্থ এবং শারীরিকভাবে ফিট হতে পারে, কিন্তু একজন অন্যজনের চেয়ে শক্তিশালী। যিনি শক্তিশালী তিনি উচ্চ স্তরের শারীরিক সুস্থতা অনুভব করেন না; একজন কেবল কিছু জিনিস করতে পারে অন্যজন পারে না। বাইরে থেকে তাদের দিকে তাকিয়ে আমরা বলতে পারি যে একজন অন্যটির উপর কিছু সুবিধা ভোগ করে। তবে এর অর্থ এই নয় যে সুস্থতা এবং জীবন্ততার অভ্যন্তরীণ অনুভূতিতে পার্থক্য রয়েছে।

স্বাধীনভাবে চিন্তা করা:-

বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতা সচেতনতার প্রতিশ্রুতি বা বোঝার ইচ্ছার মধ্যে নিহিত। একজন মানুষ অন্যের মন দিয়ে চিন্তা করতে পারেনা। আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারি কিন্তু জ্ঞানের জন্য বোঝার প্রয়োজন হয়, নিছক পুনরাবৃত্তি বা অনুকরণ নয়। আমরা হয় আমাদের নিজস্ব চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করতে পারি বা জ্ঞান ও মূল্যায়নের দায়িত্ব অন্যের হাতে তুলে দিতে পারি এবং তাদের রায় কমবেশি সমালোচনামূলকভাবে মেনে নিতে পারি। আমরা যেভাবে নিজেদেরকে অনুভব করি এবং আমরা যে ধরনের জীবন তৈরি করি তার জন্য আমরা যে পছন্দটি করি তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আত্মসম্মান অর্জিত হয় দেওয়া হয় না।:-

আত্মসম্মান অর্জনের একটি উপায় হল স্বাধীনভাবে চিন্তা করা যখন এটি করা সহজ নাও হতে পারে, যখন এটি এমনকি ভীতিকরও হতে পারে, যখন চিন্তা করা ব্যাক্তিটি অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতির সাথে লড়াই করছে এবং তবুও অধ্যবসায় করা বেছে নেওয়া। আমাদের রায়ের পক্ষে দাঁড়ানো সব সময় সহজ নয়। যদি এটি সহজ হয়ে যায় তবে এটি নিজে একটি মনস্তাত্ত্বিক বিজয়–কারণ অতীতে অবশ্যই এমন সময় ছিল যখন এদের সহজ ছিল না, যখন স্বাধীন চিন্তার বিরুদ্ধে চাপ গুলি যথেষ্ট ছিল এবং যখন আমাদের উদ্বেগ মোকাবিলা সহ্য করতে হয়েছে।

আমাদের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য:-

যতদূর আমাদের আত্মমর্যাদা সম্পর্কিত, সমস্যাটি এই নয়, যে আমরা সত্য, ইচ্ছা এবং ভয়ের মধ্যে পার্থক্য করার কাজটি সম্পাদন করতে এবং কিছু পরিহারের উপর সচেতনতা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ত্রুটিহীন কিনা, বরং বিষয়টি আমাদের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যের একটি।

আমরা সব সময় নিশ্চিত ভাবে জানতে পারি না যে আমরা যুক্তিবাদী বা সৎ হচ্ছি কিনা; তবে আমরা অবশ্যই এটি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হতে পারি, আমরা অবশ্যই যত্ন নিতে পারি। আমরা সব সময় আমাদের চিন্তা ধারায় সফল হতে মুক্ত নই, তবে চেষ্টা করার জন্য আমরা সর্বদা স্বাধীন।

অখন্ডতা:-

যেখানে আমরা আত্মমর্যাদা দেখতে পাই, সেখানে আমরা এমন আচরণ দেখি, যা ব্যক্তিদের মূল্যবোধ, বিশ্বাস এবং বিশ্বাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা সততা দেখতে পাই।

যখন আমরা এমন ভাবে আচরণ করি যা আমাদের বিচারের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তখন আমরা নিজেদেরকে কম সম্মান করি। যদি নীতিটি অভ্যাসগত হয়ে যায়, আমরা নিজেদেরকে কম বিশ্বাস করি বা নিজেদেরকে একেবারে বিশ্বাস করা বন্ধ করি। সাধারণভাবে দর্শন এবং বিশেষ করে নীতিশাস্ত্র থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করার আগ্রহে, মনোবিজ্ঞানীরা প্রায়ই এমন কিছু নিয়ে অস্বস্তি বোধ করেন যা সাইকোথেরাপি বা মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার প্রেক্ষাপটে নৈতিকতার উল্লেখ বলে মনে হয়। ফলস্বরূপ, তারা সুস্পষ্ট সত্যটি মিস করতে পারে যে, প্রকৃতপক্ষে, সততা মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম অভিভাবক।

স্ব-গ্রহণযোগ্যতা:-

যেখানে আমরা আত্মসম্মান দেখি, সেখানে আত্ম গ্রহণ দেখি। উচ্চ আত্মসম্মান সম্পন্ন ব্যক্তিরা নিজেদের সাথে প্রতিকূল সম্পর্কের মধ্যে পড়া এড়াতে থাকে। যদি আমরা বড় হতে চাই এবং পরিবর্তন করতে চাই, তবে আমাদের অবশ্যই আত্ম গ্রহণ শেখার মাধ্যমে শুরু করতে হবে। স্ব- গ্রহণযোগ্যতা বেশিরভাগ লোকের বোঝার জন্য সহজ ধারণা নয়। প্রবণতাটি হল আমাদের ব্যক্তিত্বের প্রতিটি দিক অনুমোদনের সাথে আত্ম গ্রহণযোগ্যতা এবং অস্বীকারের সাথে যে কোন পরিবর্তন অথবা উন্নতি কাম্য হতে পারে।

স্ব-গ্রহযোগ্য হওয়ার অর্থ পরিবর্তন, উন্নতি, বিকাশের ইচ্ছা ছাড়া থাকা নয়, এর অর্থ হল নিজেদের সাথে যুদ্ধ না করা, আমাদের কাছে যা সত্য তার বাস্তবতাকে অস্বীকার না করা। নিজেদেরকে মেনে নেওয়ার মানে হল যে আমরা যা চিন্তা করি, অনুভব করি সবই সেগুলি সময়ে স্ব-এর অভিব্যক্তি। যতক্ষণ না আমরা আমাদের অস্তিত্বের যেকোনো মুহূর্তে আমরা কি আছি সেই সত্যটিকে মেনে নিতে না পারি, যতক্ষণ না আমরা আমাদের পছন্দ ও কর্মে প্রকৃতি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন হতে না পারি, আমাদের চেতনায় সত্যকে স্বীকার করতে না পারি, ততক্ষণ আমরা পরিবর্তন করতে পারি না।

স্ব- দায়িত্বের শক্তি:-

বাস্তবে আমরা আমাদের পছন্দ এবং কর্মের জন্য দায়ী। নৈতিক দোষ বা অপরাধের প্রাপক হিসেবে দায়ী নয়, কিন্তু আমাদের জীবন এবং আচরণের প্রধান কার্যকারক হিসেবে দায়ী।

এটার মানে এই নয় যে একজন ব্যক্তি কখনোই দুর্ঘটনার মাধ্যমে বা অন্যের দোষের কারণে ভোগেন না, বা একজন ব্যক্তি তার জীবনে যা ঘটতে পারে তার জন্য দায়ী নয়। আমরা সর্বশক্তিমান নই। কিন্তু আত্মদায়িত্ব সুস্পষ্ট ভাবে ভালো আত্মসম্মানের জন্য অপরিহার্য। আত্ম দায়িত্ব এড়ানো আমাদের নিজেদের জীবনের ব্যাপারে আমাদের শিকার করে। এটি আমাদের অসহায় করে। এটি শুধুমাত্র এই দৃষ্টিভঙ্গি যা থেকে অনেক লোককে নিজেদেরকে মুক্ত করতে হবে যদি তারা কখনো জীবনের অ-ট্টাজিক অনুভূতিতে বিকশিত হতে পারে।

আত্মসম্মানের শিকর অভ্যন্তরীণ:-

আত্মসম্মান মানসিক ক্রিয়া-কলাপ এর মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে নিহিত-বাহ্যিক সাফল্য বা ব্যর্থতার পরিবর্তে।এটি বোঝার জন্য এই নীতিটি একটি অপরিহার্য বিষয়।

এই নীতিটি বোঝার ব্যর্থতার ফলে অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণা এবং আত্মসন্দেহের একটি অভাবনীয় পরিমাণ সৃষ্টি হয়। যদি আমরা আমাদের স্বেচ্ছাকৃত নিয়ন্ত্রণের বাইরের কারণগুলিকে মানদণ্ড দ্বারা বিচার করি, তবে ফলাফল অনিবার্যভাবে একটি অনিশ্চিত আত্মসম্মান, যা দীর্ঘস্থায় বিপদের মধ্যে রয়েছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে 'স্ব' একটি স্থির, সমাপ্ত সত্তা নয়, বরং একটি ক্রমাগত বিকশিত সৃষ্টি, আমাদের সম্ভাবনার প্রকাশ, যা আমাদের পছন্দ, সিদ্ধান্ত, চিন্তাভাবনা, রায়, প্রতিক্রিয়া এবং ক্রিয়া-কলাপে প্রকাশ করা হয়। আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কার্যপ্রণালী থেকে স্বাধীনভাবে নিজেদেরকে মূলত এবং অপরিবর্তনীয়ভাবে ভালো বা মন্দ হিসেবে দেখার অর্থ স্বাধীনতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং স্ব-দায়িত্বের সত্যতাকে অস্বীকার করা। সব সময় নিজেদের মধ্যে পরিবর্তনের সম্ভাবনা ধারণ করুন। আমাদের কখনোই গতকালের পছন্দের বন্দি হতে হবে না।

কর্মক্ষেত্রে আত্মসম্মানের শক্তি:-

আত্মসম্মান আমাদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক সম্পদ হতে পারে। এই চ্যালেঞ্জটি কর্মক্ষেত্রে বিশেষভাবে স্পষ্ট, যেখানে এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে আত্মসম্মান একটি মানসিক বিলাসিতা নয় বরং বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয়তা।

সাম্প্রতিক গবেষণা গুলি আমাদের ঝুঁকি নেওয়া, নতুন দক্ষতার শেখার, সৃজনশীল হতে, প্রতিক্রিয়া নেয়া, অন্যদের সাথে ন্যায্যভাবে এবং সদয় আচরণ করার, উৎপাদনশীল এবং দেবতার সাথে আমাদের দক্ষতার ক্ষেত্রে আত্মসম্মান যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা স্পষ্ট করতে সহায়তা করছে। আমাদের পরিবার, সংস্থা এবং সম্প্রদায়গুলিতে সর্বোত্তম ভাবে কাজ করার জন্য আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলিকে গড়ে তুলতে হবে।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা:-

শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে পরিচালিত অধ্যয়ন গুলি পরামর্শ দেয় যে ব্যর্থতার প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি হল সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষমতা। এই অক্ষমতা সমস্যাযুক্ত আত্মসম্মান, নিজের মন এবং বিচারকে অবিশ্বাস করার কারণে। অনেক পরিস্থিতিতে পরিচালকদের ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে তথ্য প্রাপ্ত বিশ্লেষণ করতে হয়। ঐকমত্য-চিন্তা আসলে উদ্ভাবনী পছন্দ থেকে দূরে নিয়ে যেতে পারে।

সামাজিক সহযোগিতার উচ্চ স্তর:-

অ্যালান এস ওয়াটারম্যান, একজন নিউ জার্সির মনোবিজ্ঞানী, সামাজিক সহযোগিতা সম্পর্কে বিদ্যমান সমস্ত সাহিত্যের একটি ব্যাপক পর্যালোচনা করেছেন এবং এটি একটি উচ্চ বিকশিত ব্যক্তিত্বের সাথে ভালোভাবে সম্পর্কযুক্ত। তিনি দেখতে পেলেন যে এটি খুব ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত এবং শুধুমাত্র সামাজিক সহযোগিতার সাথেই নয় বরং উদারতা এবং সহানুভূতির গুণাবলীর সাথেও। উচ্চ আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা নিজেদেরকে অন্যদের থেকে উচ্চতর করতে চালিত হয় না; তারা তুলনামূলক মানদণ্ডের বিরুদ্ধে নিজেদের পরিমাপ করে তাদের মূল্য প্রমাণ করার চেষ্টা করে না। তাদের আনন্দ হচ্ছে তারা কে হওয়াতে, অন্য কারো থেকে ভালো হওয়ার মধ্যে নয়।

সাফল্যের জন্য উচ্চ প্রত্যাশা:-

অন্যদের প্রশিক্ষণ বা প্রশিক্ষণ দেওয়ার অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদের শেখার ক্ষমতার জন্য উপলব্ধি করে তুলতে হবে। কর্মক্ষেত্রে পরিচালকদের নিজেদের এবং তারা যেগুলি পরিচালনা করেন তাদের সাফল্যের জন্য উচ্চ প্রত্যাশা বজায় রাখতে হবে এবং একই সাথে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে দায়িত্বশীল ভুল করা নিরাপদ। একটি সুশৃংখল, ঝুঁকি গ্রহণকারী, অ-শাস্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করা খুবই কঠিন। লোকেদের বেড়ে ওঠার এবং শেখার অনুমতি দেওয়ার সময় তাদের প্রত্যাশা উচ্চ স্তরে ধরে রাখা একটি দ্বন্দ্ব নয়, তবে এটি বাস্তবায়নের জন্য অনেক সতর্ক চিন্তা-ভাবনা লাগে।

উচ্চ প্রত্যাশা নির্ধারণের বিষয় কাজ অর্পণ করার সময় ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করুন যে তিনি এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন কিনা, তিনি এই প্রদানের জন্য দায়ী হতে ইচ্ছুক কিনা ইত্যাদি। যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে দৃঢ় চুক্তি পেতে কাজ করুন এবং তারপর কাজটি সম্পন্ন করার পরে এটি পর্যালোচনা করুন।

লক্ষ্য নির্ধারণের দায়িত্ব:-

যখনই সম্ভব সংগঠনের লক্ষ্য গুলির কাঠামোর মধ্যে একটি গ্রুপের নিজস্ব প্রত্যাশা এবং লক্ষ্যগুলি সেট করা বাঞ্ছনীয়। এটি ব্যক্তিগত স্বায়ত্তশাসনের অভিজ্ঞতাকে শক্তিশালী করে। কিছু গবেষণা বলে যে গোষ্ঠীগুলি যখন তাদের নিজস্ব লক্ষ্য নির্ধারণ করে তখন তারা অন্যরা তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করার চেয়ে তাদের উচ্চতর সেট করার প্রবণতা রাখে।

ইতিবাচক আত্মসম্মান সম্পন্ন পরিচালকদের লক্ষ্য-সেটিং এবং অন্যান্য কাজের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে কম সমস্যা হয়। ভাগ করার লক্ষ্য নির্ধারণের মত পরিচালনার কৌশল গুলি বাস্তবায়নের জন্য একজন আত্মসম্মান সম্পন্ন বিশেষজ্ঞ আনা সম্ভবত স্বার্থক, যিনি সত্যিই স্পষ্ট করতে পারেন যে এটি কর্মক্ষেত্রে কি ধরনের পার্থক্য তৈরি করবে এবং কেন।

প্রাথমিকভাবে, আত্মসম্মানবোধ প্রশিক্ষণ সেমিনার গুলি দৈনন্দিন অনুশীলনে তথ্যকে একীভূত করার লক্ষ্যে সহায়ক। একবার মানুষ বুঝতে পারে কীভাবে আত্মসম্মান মানুষের মানসিকতায় কাজ করে, তারা প্রয়োগের সুযোগ খুঁজে পাবে, যা একজন বহিরাগত করবে না।

আত্মসম্মানের কোনো শর্টকাট নেই:-

সত্যি উচ্চ আত্মসম্মান করার কোন শর্টকাট নেই; আমরা বাস্তবতাকে ঠকাতে পারি না। আমরা যদি সচেতন ভাবে না বাঁচি, দায়িত্বশীল ভাবে এবং উচ্চ সততার সাথে, আমরা সফল, জনপ্রিয়, ধনী এবং সমস্ত সঠিক ক্লাবের অন্তর্গত হতে পারি, কিন্তু আমাদের কেবল ছদ্ম আত্মসম্মান থাকবে। আত্মসম্মান সব সময় একটি অন্তরঙ্গ অভিজ্ঞতা; এটা আমরা নিজেদের সম্পর্কে যা ভাবি এবং অনুভব করি, অন্য কেউ যা ভাবে এবং অনুভব করে তা নয়।

আত্মসম্মান আসলেই সেই খ্যাতি যা আমরা নিজেদের সাথে পাই।

সমাপ্ত

(উপরিউক্ত অংশটি NATHANIEL BRANDEN-র লেখা "THE POWER OF SELF-ESTEEM "-এর সারসংক্ষেপ। আপনি চাইলে পুরো বইটি পড়তে পারেন)।

ধন্যবাদ