আমাদের সকলেরই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করার ইচ্ছা আছে এবং আমরা সবাই এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। আজ আমরা এমন স্বপ্নে ভরা একটি বইয়ের সারসংক্ষেপ করতে যাচ্ছি, যার নাম "দ্য অ্যালকেমিস্ট"। এই বইটি অনেক মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। প্রায়শই আমাদের সবার জীবনে একটি লক্ষ্য আছে বলে মনে হয় না, কখনও কখনও আমাদের একটি লক্ষ্য থাকে কিন্তু তা অর্জন করার সাহস থাকে না। সর্বোপরি, এই জটিলতাগুলি কী যা আমাদের স্বপ্ন অর্জনে বাধা দেয়? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে এই বইটিতে। এই বইটি অনুপ্রেরণা এবং জীবনযাপনের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিকোণ উভয়ই দেয়। জীবনের প্রতিকূলতা কিভাবে মোকাবেলা করবেন? এই বইটির সারাংশ পড়লেই সব বুঝতে পারবেন। এই বইটি আমাদের সবার মধ্যে নতুন আশা জাগাবে এবং অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। এই সারাংশের শেষে আপনি প্রেম, লক্ষ্য এবং ভ্রমণ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

"দ্য অ্যালকেমিস্ট" বইটিতে সান্তিয়াগো নামে এক তরুণ মেষপালকের গল্প রয়েছে, যিনি স্পেনের আন্দালুসিয়া শহরে থাকতেন। তিনি পৃথিবী দেখতে খুব পছন্দ করতেন এবং একবার তার বাবা বলেছিলেন যে সে যদি পৃথিবী দেখতে চায় , তবে রাখাল হওয়ার চেয়ে ভাল কাজ আর নেই। তাই সান্তিয়াগোও একজন রাখাল হয়ে ওঠে এবং তার ভেড়া নিয়ে গ্রামে গ্রামে যেতে শুরু করে। সান্তিয়াগো এর থেকে দুটি সুবিধা পেত। প্রথমত , তার ঘোরাঘুরির শখ পূরণ হতো আর দ্বিতীয়ত, ভেড়ার পশম বিক্রি করে কিছু টাকা রোজগার করতেন। এবারও সান্তিয়াগো যাত্রায় গেলেন । তিনি খুব খুশি ছিলেন কারণ এই যাত্রাতেও সান্তিয়াগো উল বিক্রি করতে যাচ্ছিল, যেখানে সে এক ব্যবসায়ীর মেয়ের কাছে পশম বিক্রি করে ফিরে এসেছিলেন । তিনি খুশি ছিলেন যে তিনি আবারও বণিকের মেয়ের সাথে দেখা করতে পারবেন। হাঁটতে হাঁটতে যখন অনেক রাত হয়ে যায়, তখন সান্তিয়াগো তার ভেড়াগুলোকে একটি চার্চে রেখে যান এবং একটি গাছের নিচে ঘুমান । এবারও তার সেই একই স্বপ্ন আসে যা তিনি এর আগেও অনেকবার দেখেছিল , যে কেউ তাকে পিরামিডের কাছে নিয়ে যাচ্ছে এবং বলছে যে "এখানে তোমার জন্য অনেক গুপ্তধন আছে" কিন্তু প্রতিবারের মতো তিনি গুপ্তধনের স্বপ্ন দেখার সাথে সাথেই সে জায়গায় পৌঁছে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই স্বপ্ন দেখে সান্তিয়াগো সবসময় খুব অস্থির থাকতেন কারণ তার স্বপ্ন কখনো পূরণ হতে পারত না। তিনি এই বিভ্রান্তিতে বসেছিলেন , এমন সময় সেই একই চার্চে তিনি একজন মহিলাকে দেখেন। বলা হত , সেই নারী স্বপ্নের অর্থ বলতেন। ভদ্রমহিলা সান্তিয়াগোকে গির্জার ভিতরে বিশ্রাম নিতে নিয়ে যান। সান্তিয়াগো চোখ বন্ধ করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগলেন । একই সময়ে সে মহিলা সেখানে আসে এবং সান্তিয়াগোর হাত দেখতে শুরু করে। প্রথমে সান্তিয়াগো ভয় পেয়ে গেলেও কিছুক্ষণ হাতের দিকে তাকিয়ে থাকার পর মহিলা বলে , "মনে হয় আপনি আপনার স্বপ্নের কথা জানতে চান"। সান্তিয়াগো খুব অবাক হয় যে এই মহিলা কিভাবে এই জিনিস জানেন? সান্তিয়াগো ঐ মহিলাকে তার স্বপ্নের কথা বলেন যা সবসময় অপূর্ণ থেকে যায়। তখন মহিলা বলে , " আমি আপনাকে গুপ্তধনের কথা বলতে পারি কিন্তু বিনিময়ে আপনাকে সেই ধনভান্ডারের দশমাংশ আমাকে দিতে হবে"। সান্তিয়াগো উত্তেজিত হয়ে তার কথা মেনে নিয়ে বলেন , "বলুন আমি কোথায় যাব"? তারপর মহিলা বলেন যে তাকে "মিশরের পিরামিড" যেতে হবে। সেখানে তিনি এত ধন পাবেন যে তিনি অনেক ধনী হয়ে যাবেন । সান্তিয়াগো এই সমস্ত জিনিসগুলিকে নকল বলে মনে করে এবং মনে করেন যে তিনি এখানে এসে তার সময় নষ্ট করেছে এবং এমন কোন গুপ্তধন কোথাও নেই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর সান্তিয়াগো ভদ্রমহিলাকে জিজ্ঞেস করে কিভাবে তিনি মিশরের পিরামিডে যেতে পারেন । তখন মহিলা বলে যে সে জানে না কিভাবে এই সব সত্য হবে , সে শুধু স্বপ্নের কথাই বলতে পারে । এর পর সান্তিয়াগো বলেন, তিনি যদি কখনো মিশরে পৌঁছাতে না পারেন? তখন মহিলা বলে, তাহলে তুমি আমাকে দশমাংশ দিও না এবং সে চলে যায়। এটি সান্তিয়াগোকে খুব দুঃখিত করে তোলে।

হাঁটতে হাঁটতে সে একটি বাজারে পৌঁছে এবং সেখান থেকে একটি বই পড়া শুরু করে। সান্তিয়াগো যখন তার বই পড়ছে, সেই সময় একজন বৃদ্ধ লোক সান্তিয়াগোর কাছে আসে, কিন্তু সান্তিয়াগো এটা পছন্দ করে না এবং সে বিরক্ত হয়। যখন বুড়ো লোকটি সান্তিয়াগোকে জিজ্ঞেস করে সে কোন বই পড়ছে, তখন সান্তিয়াগো উঠে অন্য বেঞ্চে যায়। কিন্তু তারপরে তার মনে পড়ে যে তার বাবা তাকে শিখিয়েছিলেন কখনই একজনকে অসম্মান করবেন না, তাই সে ফিরে এসে বৃদ্ধকে বলে সে কোন বই পড়ছে। হঠাৎ বৃদ্ধ লোকটি বলে যে সান্তিয়াগো যে বইটি পড়ছে তা আগেই পড়া হয়ে গেছে। সান্তিয়াগো জিজ্ঞেস করে, তাহলে বলো কি লেখা আছে এই বইয়ে। তখন বৃদ্ধ লোকটি বলে যে, এই বইটি আমাদের বলে, একজন ব্যক্তি কীভাবে নিজের ভাগ্য বেছে নেয়। কিভাবে একজন ব্যক্তি নিজেই তার ভাগ্যের নির্মাতা এবং ধ্বংসকারী। আর এই বইয়ের শেষটা বলে দেয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যা কি? সান্তিয়াগো জিজ্ঞেস করেন , "এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় মিথ্যা কি"? তখন বৃদ্ধ লোকটি বলে যে, "এই পৃথিবীতে বসবাস করে, এক সময়ে, আমরা আমাদের চারপাশে যা ঘটছে তার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেই, এবং আমাদের ভাগ্য যেখানে নিয়ে যায় সেখানে হাঁটা শুরু করি। এবং ভাগ্যের উপর নির্ভর করাই এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যা "। ধীরে ধীরে, সান্তিয়াগো সেই ব্যক্তির কথা পছন্দ করতে শুরু করে, একইভাবে সান্তিয়াগো সেই ব্যক্তির সাথে আরও কথা বলে। কিছুক্ষণ পর সেই ব্যক্তি সান্তিয়াগোকে বলে যে সে তাকে গুপ্তধন অবধি নিয়ে যেতে পারে। তখন সান্তিয়াগো মনে করে যে ভদ্রমহিলা নিশ্চয়ই এই ব্যক্তিকে সেই গুপ্তধনের কথা বলেছে নাহলে এই ব্যক্তি জানল কী করে? সান্তিয়াগো ওই ব্যক্তিকে তার নাম জিজ্ঞেস করে। সেই বৃদ্ধ লোকটি বলে যে, "আমার নাম মেলচিসেডেক এবং আমি সালেমের রাজা। আমিও ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। আপনি যদি আমাকে আপনার ভেড়ার দশমাংশ দেন, আমি আপনাকে গুপ্তধনের কথা বলতে পারি। তখন সান্তিয়াগো বলে একজন রাজা রাখালের সাথে কথা বলছেন কেন?তাহলে রাজা বললেন এর অনেক কারণ আছে কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল আপনি এখানে আপনার ভাগ্য খুঁজে বের করতে এসেছেন, যা বলে যে আপনি ধন পেতে যাচ্ছেন, কিন্তু সান্তিয়াগো তা করেননি । একজন ব্যক্তির ভাগ্যে কী আছে তা বুঝে নিতে চান সান্তিয়াগো । তখন রাজা বলেন, "যখন আমরা ছোট থাকি, তখন আমরা সবাই জানি আমাদের ইচ্ছা কি, আমাদের ভাগ্য কি, আমরা তা পূরণ করতে ভয় পাই না এবং আমাদের পূর্ণ শক্তি লাগাই কিন্তু সময় যত গড়িয়ে যায় তখন কিছু নেতিবাচক শক্তি আমাদের বলতে শুরু করে যে আপনার স্বপ্ন পূরণ করা অসম্ভব নয়। তবে প্রথমে আপনার ভাগ্যের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আপনি যেই হোন না কেন, আপনি যখন মন থেকে কিছু চান, তখন সেটা আপনার লক্ষ্য হয়ে ওঠে। ধন খুঁজে বের করা হোক বা বণিকের মেয়েকে বিয়ে করা হোক, বা বিশ্ব ভ্রমণ করা হোক আর আপনি যদি মন থেকে কিছু চান তাহলে পুরো মহাবিশ্ব তা আপনার কাছে আনতে নিয়োজিত। কিন্তু সান্তিয়াগো চিন্তিত হয়ে পড়ে যে সে কীভাবে তার ভেড়াকে ছেড়ে যাবে? তারপর সান্তিয়াগো রাজাকে বলে যে সে তাকে ভেড়ার পরিবর্তে গুপ্তধনের দশমাংশ দেবে।রাজা বলে যে আপনি যদি এমন কিছু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন যা আপনি এখনও পাননি তবে আপনার লক্ষ্য সেটি খুঁজে পেতেই স্থির থেকে যাবে । "আমার বাবা-মা যদি আমাকে ছাড়া বাঁচতে শেখে, তাহলে এই ভেড়াগুলোও আমাকে ছাড়া বাঁচবে " এই ভেবে সান্তিয়াগো তার ভেড়ার দশমাংশ রাজাকে দেয় এবং বাকি ভেড়া বিক্রি করে কিছু টাকা সংগ্রহ করে। কোথায় গেলে সেই ধন পাওয়া যাবে জানতে চাইলে, রাজা তাকে বলেন যে, সে মিশরের পিরামিডে ধন পাবে। সান্তিয়াগোর মনে আছে যে একই কথা তাকে বলেছিলেন সে মহিলা , যাকে সে তার স্বপ্নের বর্ণনা দিয়েছিল। এরপর সে নিশ্চিত হয়ে যায় যে , সে অবশ্যই গুপ্তধন পাবে।

এরপর সান্তিয়াগো সেই টাকা দিয়ে আফ্রিকা যাওয়ার টিকিট কিনে জাহাজে উঠার জন্য প্রস্তুত হয়। সেই সময় রাজা সান্তিয়াগোকে বলেন যে "ভগবান সবার জন্য পথ তৈরি করেছেন, শুধু তার তৈরি পথে পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে। এবং আপনার সাথে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, আপনাকে বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একটি প্রজাপতি তাদের মধ্য দিয়ে যায়, এবং সান্তিয়াগোর মনে পড়ে যে প্রজাপতিটির চলে যাওয়া খুবই শুভ। রাজা তার কথা বুঝতে পেরে বললেন, হ্যাঁ আপনি একেবারে ঠিক ভাবছেন, আপনার সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। পথে, রাজা ছেলেটিকে দুটি পাথর দেয় । একটি কালো এবং একটি সাদা এবং বলে যে কালো পাথর "হ্যাঁ" প্রতিনিধিত্ব করে এবং সাদা পাথরের মাধ্যমে "না" বোঝায় । রাজা আরো বলেন যে, যখনই সান্তিয়াগো কিছু বুঝতে অক্ষম হবেন তখন এই পাথরগুলি প্রকৃতির অঙ্গভঙ্গি বুঝতে সাহায্য করবে। কিন্তু যদি সম্ভব, নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করুন, এই পাথরগুলি দিয়ে নয় । সান্তিয়াগো সেই পাথরগুলি তার পকেটে রাখে। তারপর রাজা সান্তিয়াগোকে একটি কথা সর্বদা মনে রাখতে বলেন যে "কখনও তোমার স্বপ্ন ছেড়ে দিও না এবং তোমার স্বপ্নের পথে চলো, যতক্ষণ না কোনো ফল না আসে।" তারপর রাজা তার ভেড়া নিয়ে চলে যান। এই পুরো গল্পে এটা বোঝার বিষয় যে "আপনার স্বপ্নগুলির কখনই হাল ছেড়ে দেবেন না, যতক্ষণ না আপনি সেগুলি অর্জন করতে পারেন। পথে যতই প্রতিকূলতা আসুক না কেন। সর্বদা সাহস রাখুন এবং এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান।"

সারা পথ ধরে সান্তিয়াগো ভাবতে থাকে আফ্রিকা কেমন হবে। কিছুক্ষণ পরে সান্তিয়াগো আফ্রিকার একটি কিউটি ট্যাঙ্গিয়ারে পৌঁছে এবং রাজার দ্বারা বলা ভাল ঘটনাগুলি সম্পর্কে ভাবতে শুরু করে। তারপর হঠাৎ পেছন থেকে একটা আওয়াজ শুনতে পায়। একজন ব্যক্তি সান্তিয়াগোকে জিজ্ঞাসা করে "আপনি কে?" তাই সান্তিয়াগো তাকে নিজের সম্পর্কে এবং তার যাত্রার কারণ সম্পর্কে সবকিছু বলে। সেই ব্যক্তি বলে যে, "তুমি চাইলে আমি তোমার পথপ্রদর্শক হতে পারি"। সান্তিয়াগোও এটিকে রাজার দ্বারা বলা ভাল ঘটনাগুলির মধ্যে একটি বলে মনে করেন এবং তিনি মনে করেন যে মহাবিশ্বের আত্মা তাকে সাহায্য করার জন্য তার কাছে কাউকে পাঠিয়েছে। সান্তিয়াগো জিজ্ঞেস করে, "তোমার কাছে গুপ্তধন পৌঁছানোর কোনো উপায় আছে কি?" তাই সেই ব্যক্তি বলে যে তার জন্য তাদের পুরো মরুভূমি অতিক্রম করতে হবে এবং তার জন্য অর্থের প্রয়োজন হবে। তারপর সান্তিয়াগো সেই ব্যক্তিকে তার টাকা দেখায়। আর সেখানেই তাকে ডাকাতরা লুট করে। কারণ বাস্তবে সেই মানুষটি চোর। সান্তিয়াগোর কাঁদতে মন চায় এবং সে মনে করে সে তার মেষের সাথে ভালো ছিল। আর এই সব গুপ্তধন এবং ভাল জিনিস মিথ্যা জিনিস. কিন্তু তখন তার মনে পড়ে একটি কথা রাজা বলেছিলেন যে "যখন তুমি সত্যিই কিছু অর্জন করতে চাও, তখন সমগ্র সৃষ্টি তোমাকে তা অর্জনে সাহায্য করার জন্য ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু ষড়যন্ত্রই আমাদের পরীক্ষার সময়, এবং এই সময়ে আমাদের নিজেদের সাহস বৃদ্ধি করা উচিত "। এর পরে সান্তিয়াগো সেই পাথরগুলি মনে করে যা রাজা তাকে দিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন "পরে কী ঘটতে চলেছে তা জানতে সেই পাথরগুলি ব্যবহার করে জানতে হবে" সান্তিয়াগো জিজ্ঞেস করলো সে কি গুপ্তধন পাবে? এবং তিনি তার ব্যাগ থেকে একটি পাথর বের করেন, যা কালো যার অর্থ "হ্যাঁ"। কিন্তু সান্তিয়াগো অন্য পাথরটি দেখার আগেই পাথর দুটি স্পর্শ করে তার হাত থেকে পড়ে যায় এবং সে উত্তর জানতে পারেনি। কিছুক্ষণ পর সে পাথরগুলো ফিরে পায় এবং মনে করে যে, রাজা বলেছেন যে, সম্ভব হলে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবেন। আর সে এখন থেকে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে ভেবে এগিয়ে যায়। এবার সে আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। তিনি অনেক মানুষকে সাহায্য করে এগিয়ে যান। এবং মাঝে মাঝে সে বুঝতে পারে যে কোন এক অনন্য শক্তি তাকে সাহায্য করছে। সেও বুঝতে পারে যে সে ধীরে ধীরে অনেক কিছু শিখছে। হাঁটতে হাঁটতে সে একটা বাজারে পৌঁছায়। একজন ক্রিস্টাল ব্যবসায়ীর এমন একজন ব্যক্তির প্রয়োজন যে পরিষ্কার করতে পারে। সান্তিয়াগো এটি দেখে এবং ব্যবসায়ীকে বলে যে সে তার স্ফটিক পরিষ্কার করবে যাতে তার আরও বিক্রি হয় , বিনিময়ে ব্যবসায়ী তাকে যদি কিছু খেতে দেয়। কিন্তু ব্যবসায়ী কোন উত্তর না দেওয়ায় সান্তিয়াগো মনে করে যে সম্ভবত অনন্য শক্তি চায় যে সান্তিয়াগো তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিক।আর সান্তিয়াগো নিজেই ব্যবসায়ীকে কিছু না বলে তার দোকানের ক্রিস্টাল পরিষ্কার করতে শুরু করে। মাঝে মাঝে বণিক সান্তিয়াগোকে খেতে নিয়ে যায়, এবং সান্তিয়াগোকে বলে "আমি দেখছি তোমার কাজ দরকার এবং আমার তোমাকে দরকার। তুমি কি আমার দোকানে কাজ করবে?" সান্তিয়াগো বলে "হ্যাঁ, তবে আমি রাত পর্যন্ত কাজ করতে পারব। তোমার দোকানের সব ক্রিস্টাল মুছে দেব, বিনিময়ে তুমি আমাকে টাকা দাও যতক্ষণ না আমি মিশরে যাই।" এতে বণিক হেসে বলে, সারা বছর আমার দোকানে কাজ করলেও এত টাকা আয় করতে পারবে না যে মিশরে পৌঁছে যাবে। তারপর সান্তিয়াগো মনে করে যে দোকানে কাজ করে সে তার গ্রামে ফিরে গিয়ে তার ভেড়া কেনার জন্য যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করবে এবং এইভাবে সে সেই বণিকের দোকানে কাজ শুরু করে। বণিকের দোকানটি অনেক উঁচু পাহাড়ের উপর, যার কারণে লোকেরা তার দোকানে আসতে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ত এবং পাহাড়ে খাওয়া-দাওয়ার জন্য বিশেষ কোনও জিনিস ছিল না। তারপর সান্তিয়াগো সেই ক্রিস্টাল ব্যবসায়ীকে এই ধারণা দেয়, " আমরা দোকানে চা বিক্রি শুরু করলে কেমন হয়? এতে আমরা আরও টাকা উপার্জন করব এবং আমাদের ক্রিস্টালও বেশি বিক্রি হবে"। বণিক এই ধারণা পছন্দ করে এবং একটি নির্দিষ্ট ধরনের চা বিক্রি শুরু করে। এই কারণে অনেক লোক সেই চা পান করতে আসতে শুরু করে এবং সেই ব্যবসায়ীর বিক্রি অনেক বেড়ে যায় এবং এক বছরের মধ্যে তারা উভয়েই খুব ধনী হয়ে যায়। সান্তিয়াগো ফিরে যেতে এবং তার ভেড়া কেনার জন্য যথেষ্ট অর্থ সংগ্রহ করে এবং সে তার গ্রামে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেই রাজার একটা কথা তার মনে পড়ে, যে আপনার স্বপ্ন কখনোই অপূর্ণ রেখে যাবেন না। এবং সে আবার তার ভাগ্য চেষ্টা করে এবং মিশরগামী কাফেলার সাথে যোগ দেয়।

সেই কাফেলায় সান্তিয়াগো একজন ইংরেজ ব্যক্তির দেখা পান যিনি একজন বিখ্যাত অপরাসায়নবিদকে খুঁজতে যাচ্ছিলেন। যাঁর সম্পর্কে তিনি শুনেছেন যে, তিনি যে কোনো ধাতু গলিয়ে সোনায় পরিণত করতেন। তারা মরুভূমিতে ভ্রমণ করার সময়, ইংরেজ লোকটি সান্তিয়াগোর সাথে অনেক কথা বলে। কিছুক্ষণ হাঁটার সময় সে সান্তিয়াগোর বইটি পড়ে আর সেই পাথরগুলো দেখতে পায় , যেগুলি সান্তিয়াগো জাদুর পাথর ভেবেছিলো। সান্তিয়াগো বিষয়টি পছন্দ করে না এবং তার বই এবং পাথর ফিরিয়ে নেয়। ইংরেজ লোকটি সান্তিয়াগোকে জিজ্ঞেস করল সে ঐ পাথরগুলো পেতে পারে কিনা । সান্তিয়াগো বলে যে,জাদু পাথর বিক্রির জন্য নয়। তখন ইংরেজ লোকটি বলে, এগুলো জাদুর পাথর নয়, এই পৃথিবীতে কোটি কোটি পাথর আছে। সান্তিয়াগো তাকে বলেন যে এই পাথরগুলি রাজা দিয়েছিলেন এবং বলা হয়েছিল যে যখনই সিদ্ধান্ত নেবেন, তিনি সেগুলি ব্যবহার করতে পারবেন। সেই সময় ইংরেজ লোকটি একই রকম ভালো-মন্দ ঘটনার কথা বলতে শুরু করেছিল যা রাজাও বলেছিলেন। সান্তিয়াগো হতবাক হয়ে যায় এবং তাকে জিজ্ঞাসা করে যে সে কীভাবে এই ঘটনাগুলি সম্পর্কে জানল। ইংরেজ লোকটি উত্তর দেয় যে এটা জানা খুব কঠিন ছিল না, আমাদের জীবনে যে জিনিসগুলি ভাল তা হল ভাল ঘটনা এবং যেগুলি খারাপ সেগুলি খারাপ ঘটনা নয়, তবে সেই শিক্ষা যা আমরা আমাদের ভবিষ্যতে প্রয়োগ করব। এটি একটি মৌলিক পাঠ কিন্তু লোকেরা সাধারণত এটি ভুলে যায়। এভাবে কথা বলতে বলতে ক্যারাভান পৌঁছে যায় অপরাসায়নবিদের গ্রাম আল ফায়ুমে। কিন্তু তারপর উপজাতিদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় এবং সান্তিয়াগো মিশরের জন্য আর অগ্রসর হতে পারেনা তাই ইংরেজ লোকটিকে অপরাসায়নবিদের বাড়ি খুঁজে পেতে সহায়তা করতে থাকে । খুঁজতে খুঁজতে গ্রামের একটি কূপের কাছে পৌঁছে যায় তারা । সেখানে সান্তিয়াগো ফাতিমা নামের এক সুন্দরী মেয়ের সাথে তার দেখা হয় , সে সাথে সাথে প্রেমে পড়ে যায়। ফাতিমা তাদের দুজনকেই অপরাসায়নবিদের ঠিকানা বলে। কিন্তু সান্তিয়াগো ফাতিমার সাথে দেখা করার পর মিশরে যেতে চান না এবং প্রতিদিন ফাতিমার সাথে দেখা করতে ওই কূপে যান। অন্যদিকে অপরাসায়নবিদ ইংরেজকে জিজ্ঞাসা করেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তাকে খোঁজার পরিবর্তে তিনি কেন রাসায়নিক দিয়ে সোনা তৈরি করার চেষ্টা করলেন না। ইংরেজ লোকটির উত্তর "না" হওয়ায় অপরাসায়নবিদ তাকে তার বাড়িতে ফিরে যেতে এবং বারবার সোনা তৈরি করার চেষ্টা করার পরামর্শ দেন। তিনি তাকে বলেন সে যদি কঠোর পরিশ্রম করে তবে সে অবশ্যই সফলতা পাবে এবং তাকে আর বার বার তাকে খুঁজতে আসতে হবে না । একদিন সান্তিয়াগো দেখেন দুটি ঈগল লড়াই করছে, তারপর সে স্বপ্নে আসে যে একটি সেনাবাহিনী সেই গ্রামে আক্রমণ করতে যাচ্ছে, তারপর সান্তিয়াগো সেই গ্রামের প্রধানকে বলতে যায়। সান্তিয়াগোর কথা শুনে সর্দার তার সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করে কিন্তু তাকে বলে যে তার দৃষ্টি ভুল প্রমাণিত হলে সে তার গলা কেটে দেবে। পরের দিন সেনাবাহিনী সত্যিই গ্রামে আক্রমণ করে কিন্তু সর্দার ইতিমধ্যে প্রস্তুত থাকায় , তারা যুদ্ধে জয়ী হয়। দয়া করে, সর্দার সান্তিয়াগোকে ৫০ টি সোনার টুকরো দেয় এবং গ্রামের উপদেষ্টা বানায়। সান্তিয়াগো ফাতিমার সাথে মরূদ্যানে বসবাস করতে থাকে, যাকে আল ফায়ুম মরূদ্যান বলে। সে মনে করে এখন ফাতিমা তার সবচেয়ে বড় ধন। পরের দিন সান্তিয়াগো ফাতিমাকে একই কথা বলে, তারপর ফাতিমা তাকে বলে তার স্বপ্ন পূরণ করতে। কারণ সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো তার প্রেমিককে তার স্বপ্ন পূরণ করতে বাধা দেয় না। সে সেখানে সান্তিয়াগোর জন্য অপেক্ষা করবে। এর পরে অপরাসায়নবিদ্ সান্তিয়াগোকে বলে যে সে সান্তিয়াগোকে তার গুপ্তধন অব্দি নিয়ে যাবে এবং তারা গুপ্তধনের সন্ধানে যায়।

পিরামিডের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় সান্তিয়াগো এবং অপরাসায়নবিদকে একটি যুদ্ধরত উপজাতি বন্দী করে এবং দুজনেই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। এরপর অপরাসায়নবিদ্ ঐ লোকদের বলে যে তারা কিছুই জানে না, তারা শুধু শিকার করতে বের হয়েছে। অপরাসায়নবিদ্ উপজাতিদের বলে যে সান্তিয়াগো একজন শক্তিশালী জাদুকর যিনি নিজেকে বাতাসে রূপান্তর করতে পারেন। আদিবাসীরা মুগ্ধ হয় এবং বলে যে যদি সান্তিয়াগো তাদের জাদু দেখায় তবে তারা উভয়কেই ছেড়ে দেবে। কিন্তু সমস্যা হল সান্তিয়াগো জাদুর কৌশল দেখাতে জানে না। সে অপরাসায়নবিদকে বলে যে আপনি আমাকে ফাঁদে ফেলেছেন এবং এখন আমাদের দুজনকেই হত্যা করা হবে। এই বিষয়ে অপরাসায়নবিদ্ বলেন যে আপনি যদি মৃত্যু এবং পরাজয়ের ভয়কে ভিতর থেকে দূর করে মরুভূমিতে আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেন তবে আপনি সহজেই বাতাসে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারেন। সান্তিয়াগো ধ্যান শুরু করেন । প্রথমে তিনি মরুভূমিকে জিজ্ঞাসা করেন, তারপর তিনি বাতাসকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি সূর্যকে জিজ্ঞাসা করেন, এবং অবশেষে তিনি আত্মিক জগতকে জিজ্ঞাসা করেন, যদি তিনি সত্যিই নিজেকে অদৃশ্য করে দিতে পারেন। একই সময়ে, সান্তিয়াগোকে বাতাসের দ্বারা চাবুক মারা হয়, এবং তিনি অদৃশ্য হয়ে যান এবং শিবিরের অপর প্রান্তে পুনরায় আবির্ভূত হন। তারা দুজনই রক্ষা পায় এবং আরও কিছু দিন ভ্রমণ করার পর তারা এক সন্ন্যাসীর কাছে পৌঁছায়। অপরাসায়নবিদ সেই সন্ন্যাসীর বাড়িতে তামাকে সোনায় রূপান্তর করে দেখায় এবং তা চার টুকরো করে দেয়। এক টুকরো নিজের কাছে রাখে, এক টুকরো সান্তিয়াগোকে দেয় আর দুইটা সন্ন্যাসীকে। এবং এই দুটি টুকরার মধ্যে বলে, একটি টুকরো সন্ন্যাসীর জন্য এবং একটি টুকরো সান্তিয়াগোর জন্য যখন সে পিরামিড থেকে ফিরে আসবে। এর পর অপরাসায়নবিদ ফিরে যায়। সান্তিয়াগো কিছুক্ষণ ভ্রমণ করার পর পিরামিডে পৌঁছায় এবং গুপ্তধনের জন্য খনন শুরু করে। তখন কয়েকজন সেখানে এসে তার কাছ থেকে সোনার টুকরো ছিনিয়ে নেয়। তারা মনে করে তারা নিশ্চিত, সান্তিয়াগো এই খনন থেকে এই সোনা পেয়েছে। তার সর্দার সান্তিয়াগোকে প্রহার করে এবং বলে তোমার সব সোনা আমাদের দাও। তারপর সান্তিয়াগো তাদের স্বপ্নের কথা বলে। তাদের মধ্যে একজন তাকে দেখে হাসে এবং বলে যে সে একই রকম স্বপ্ন দেখেছিল যেখানে সে স্পেনের একটি চার্চে একটি গাছ দেখেছিল, যেখানে রাখালরা তাদের ভেড়ার সাথে ঘুমায় যার নীচে গুপ্তধন লুকানো আছে। কিন্তু স্বপ্নের পিছনে খোঁড়াখুঁড়ি করার মতো সে নিজেকে যথেষ্ট বোকা বলে মনে করে না। আর সেই লোকেরা সান্তিয়াগোকে পাগলের মত ছেড়ে চলে যায়। সান্তিয়াগো তাদের চলে যাওয়ার পর ভীষণ খুশি হয় এবং হাসতে থাকে। সে বুঝতে পারে যে তার গুপ্তধনটা ঠিক সেই জায়গায় ছিল যেখানে সে স্বপ্ন দেখেছিল। এর পরে সে তার গ্রামে ফিরে আসে এবং গির্জায় যায় যেখানে সে সিকোমোর গাছটির নিচে ঘুমোচ্ছিল । সাইকোমোর যেহেতু মিশরের প্রতীক, তাই তিনি স্বপ্নে মিশর দেখেছিলেন। সে সেখান থেকে তার ধন বের করে এবং মনে করে যে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সে সেই ধনভান্ডারের এক দশমাংশ ঐ মহিলাকে দেবে। এরপর সে মরুভূমিতে ফিরে যায় যেখানে ফাতিমা তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ফাতিমার কাছে ফিরে এসে তিনি তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তারা উভয়েই তাদের জীবনে সুখী হতে শুরু করেন।

এই গল্প থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি, যেমন,

১. আপনি যখন আপনার সমস্ত হৃদয় দিয়ে কিছু অর্জন করতে চান, তখন আপনি সেই অনন্য বিশ্বাসের শক্তির সবচেয়ে কাছাকাছি এবং সেই শক্তিটি সর্বদা ইতিবাচক। যেমন, অনেকের প্রত্যাখ্যান এবং মন খারাপের পরেও, সান্তিয়াগো গুপ্তধন পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছাড়েননি।

২. কাকতালীয় বলে কিছু নেই। কল্পনা করুন যদি সান্তিয়াগোও ভাবতেন যে তার যদি গুপ্তধন পাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে এটি নিজেই তার কাছে আসবে, এবং হয়তো সে কখনই সেই নাগাল হতে পারত না। তাই কাকতালীয় বলে কিছু নেই। সবকিছুর জন্য কঠোর চেষ্টা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৩. স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা জীবনকে মজাদার করে তোলে। এবং এটি সেই সময়ে ঘটেছিল যখন সান্তিয়াগো নিশ্চিত হয়েছিল যে এখন গুপ্তধন তার থেকে বেশি দূরে নয়, যদি সবাই একই জায়গার ঠিকানা বলে থাকে তবে অবশ্যই তার জন্য কোথাও একটি ধন আছে।

৪. মানুষ তাদের জীবনের যেকোনো সময়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়। কোন বয়স সীমা প্রয়োজন নেই। যদিও সান্তিয়াগো এটি একটি শিশু হিসাবে করতে পারে, তারপর যে কেউ এটি যেকোনো সময়, যেকোনো বয়স এবং পরিস্থিতিতে করতে পারে।

৫. অতীত বা ভবিষ্যতে বিশ্বাস না, শুধুমাত্র বর্তমানে বিশ্বাস। আপনি যদি সর্বদা আপনার বর্তমানের দিকে মনোনিবেশ করতে পারেন তবে আপনি সর্বদা সুখী হবেন। জীবন আপনার জন্য একটি উদযাপন হবে, একটি মহান উদযাপন। কারণ জীবন সেই মুহুর্তের মধ্যে যা আমরা এখন বাস করছি।

৬. শুধুমাত্র একটি জিনিস যা স্বপ্নকে অসম্ভব করে তোলে ব্যর্থতার ভয়ে।

৭. যখন আমরা নিজেদেরকে ভালোবাসি, আমরা সবসময় আগের চেয়ে ভালো হওয়ার চেষ্টা করি। এবং যখন আমরা ভালো হওয়ার চেষ্টা করি, তখন আমাদের চারপাশের জিনিসগুলিও ভাল হয়ে যায়। নিজেদেরকে ভালো করার পাশাপাশি, আমাদের জিনিসগুলো দেখার উপায়ও ভালো হয়ে যায় যেমনটা সান্তিয়াগোর সাথে হয়েছিল।

৮. আপনার হৃদয়কে বলুন যে কষ্টের ভয় ব্যথার চেয়েও খারাপ। তার স্বপ্নের সাধনায় কোনো হৃদয় কখনো কষ্ট পায়নি। এবং যদি আপনার সমস্যা হয় তবে বুঝুন এই মুহূর্তে আপনি আপনার স্বপ্নের দিকে পূর্ণ উদ্যমে এগোচ্ছেন না।

৯. শেখার একটাই উপায় আর তা হল কর্মের মাধ্যমে। আপনার যা জানা দরকার, আপনি আপনার ভ্রমণ থেকে শিখেছেন।

১০. সাধারণ জিনিসের মধ্যেও সবচেয়ে অসাধারণ জিনিস, কিন্তু শুধুমাত্র বুদ্ধিমান মানুষ দেখতে পারে, বা বলা যেতে পারে যে ব্যক্তি সাধারণ জিনিস থেকেও খুব আশ্চর্যজনক কিছু করে, তাহলে সেই ব্যক্তি বুদ্ধিমান হতে পারে। সান্তিয়াগোকে যে রাজা বলেছিলেন, তার স্বপ্নের পিছনে ছুটতে খুব সহজ একটি উপায় খুব আকর্ষণীয় উপায়ে।

১১. প্রত্যেকেরই স্পষ্ট ধারণা থাকে যে অন্যদের কীভাবে বাঁচতে হবে কিন্তু কীভাবে নিজের জীবনযাপন করতে হবে তা নয়। প্রতিটি মানুষ যদি শুধুমাত্র তার জীবনের দিকে মনোযোগ দিতে শুরু করে তাহলে কোন সমস্যা থাকবে না এবং সমস্ত মানুষ তাদের জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারবে।

১২. বর্তমানের মধ্যে রহস্য লুকিয়ে আছে যদি আপনি বর্তমানের প্রতি মনোযোগ দেন, আপনি নিজেকে পরিমার্জিত করতে পারেন এবং আপনি যদি আপনার বর্তমানকে পরিমার্জিত করেন তবে মুহূর্তটি আরও ভাল হবে। আপনার বর্তমানকে পরিমার্জিত করুন, আপনার ভবিষ্যত নিজেই সুন্দর হবে।

আশা করি আপনি এই সারাংশ থেকে অনেক কিছু শিখবেন এবং আপনার জীবনে প্রয়োগ করবেন।