4:00 AM, May 06, 2024
“থ্রি মিস্টেক অফ মাই লাইফ” হলো চেতনা ভগৎ এর লেখা তৃতীয় উপন্যাস। ২০০৮ সালে এই বই টি প্রকাশ পেয়েছিলো। এই উপন্যাসে আমেদাবাদ শহরের তিন জন বন্ধুর গল্প বর্ণিত হয়েছে।
প্রস্তাবনা এবং অধ্যায় -১
লেখক একদিন হটাৎ একটি মেইল পেলেন যা তাঁকে উদেশ্য করে লেখা। আমেদাবাদের এক তরুণ ব্যাবসায়ীর যেখানে সেই তরুণ তাঁর জীবনের প্রতি বৃতশ্রদ্ধ হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিঁনি এবং তাঁর স্ত্রী অনুশা খুব চিন্তিত হয়ে পড়লো। অনুশা পরামর্শ দিলো আমেদাবাদে তাঁদের চেনা অধ্যাপক শ্রী বাসান্ত এর সঙ্গে যোগাযোগ করার। প্রফেসর বাসান্ত খোঁজ নিয়ে জানালেন গোভিন্দ প্যাটেল বলে একজন ২৫ বছর বয়সী যুবক সিভিল হাসপাতালে ভর্তি আছে। লেখক আর থাকতে না পেরে সেই ঠিকানায় পৌঁছালেন এবং যুবক কে তিরস্কার করলেন। গোভিন্দ প্যাটেল জানালেন তার অবস্থায় থাকলে লেখক একই কাজ করতেন। লেখক অনুরোধ করলেন তার গল্প চেতন ভগৎ কে একজন বন্ধু হিসাবে ভেবে এর সাথে ভাগ করে নিতে।
অধ্যায় -২
গোভিন্দ, ওমি এবং ইশ তিনজন মিলে “ইন্ডিয়ান ক্রিকেট শপ” বলে একটি খেলার সাজ -সরঞ্জাম এর দোকান খুললো। প্রথম দিকে বেশ ভালো বিক্রি হলো যদিও ইশ এর বাড়ির লোক তাকে একজন সেনা আধিকারিক হিসাবে দেখতে চেয়েছিলো। একদিন হর্শ এবং চিনু বলে দুজন বালক একটি ব্যাট এবং কতকগুলি বল কিনলো। এভাবে তাদের ব্যাবসা বাড়তে থাকলো, মাসিক ৪৫০০ টাকা লাভ হলো। গোভিন্দ নভরঙ্গপুরে একটি বড়ো মলে দোকান বানাবার প্রস্তাব দিলো যাতে তাদের ব্যাবসার আর ও উন্নতি ঘটে। এইসমলি তারা এক মাসের মুনাফা দিয়ে একটি টিভি কিনলো এবং ছাত্রদের জন্য দোকানে নোটবুক বিক্রির পরামর্শ দিলো।এছাড়াও ইশ এবং ওমিকে খেলার এবং ব্যায়াম এর প্রশিক্ষক হওয়ার প্রস্তাব দিলো এবং নিজে অংকের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিলো। এ সবই ছিলো ব্যাবসা আর ও বাড়িয়ে বেশি অর্থ উপার্জনের উপায়।
অধ্যায় -৩
ক্রিকেট এর খেলার উপাদান ছাড়াও ব্যাডমিন্টন অত্যন্ত একটি জনপ্রিয় খেলা ছিলো, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে। এর ই মধ্যে দোকানে তারা ছাত্রদের জন্য খাতা, জলের বোতল, টিফিন বক্স রাখতে শুরু করেছিল এবং তা খুব ভালো বিক্রি চলছিল। বক্তা অংকের কোচিং এবং ইশ ক্রিকেট কোচিং চালিয়ে যাচ্ছিলো। তেরো বছর বয়সি তপন বলে এক ছাত্রের ক্রিকেট খেলার আগ্রহ থাকলেও তার মা সেই অনুমতি দেবেন না, ইশ সেইজন্য বল ওঠে এই কারণে ভারত সব ম্যাচে যেতে না , তপন আলী নামের নতুন এক ব্যাটসম্যান এর সন্ধান দেয়।
একদিন ওমির মামা বিট্টু মামা এলেন দোকানে দেখা করতে যিনি একজন কট্টর হিন্দু সংঘটক গোভিন্দ ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে সংশয়ী জেনে রেগে গিয়েছিলেন। তিঁনি পাখরে জি, যিনি একজন সিনিয়র হিন্দু নেতা, তাঁর সাথে গুজরাট ভ্রমণে গিয়েছিলেন। মামা ওমিকে তার সংগঠনের কাজে আহ্বান জানালেন। প্রথমে ইশ রাজনীতি অপছন্দ জানালেও তিমি বললেন পাখরেজি নিজে একজন উচ্চশিক্ষিত এবং ক্রিকেট খেলেন এবং এটি রাজনীতি না। তিঁনি তিনজনকেই গান্ধীনগরে গ্রান্ডস্ট হাউসে আমন্ত্রণ করলেন। গোবিন্দ, ওমি এবং ইশ একদিন এক পার্টির আয়োজন করলো, বিয়ার রবঙ্গ ভুজিয়া সহযোগে। সেইসময় আলির কথা উঠে এসেছিলো যে খুব ভালো খেলে, ইশ সিদ্ধান্ত নিলো একদিন তার সাথে দেখা করার। গোবিন্দ হিসেব দিলো একাউন্টস এর যেখানে তাদের লাভ খুব সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে যা থেকে তারা নভরঙ্গপুরে তারা নতুন দোকানের জন্য ইতিহাস মধ্যেই বাইশ হাজার টাকা জমিয়েছে। ইশ গোবিন্দ কে তার বোন বিদ্যা কে অঙ্ক পড়াতে অনুরোধ করলো যে ডাক্তার হওয়ার এর প্রবেশিকা পরীক্ষা দেবে। ইশ রাজি হয়ে গেলো।
অধ্যায় -৪
তারা তিনজন পাখরেজির আমন্ত্রণে সন্ধ্যায় তার বাড়িতে গেলেন। প্রচুর নিরামিষ খাবারের আয়জন, বেশিরভাগ আমন্ত্রিত পুরোহিত শ্রেণীর। তারা কেউ সাদা কাপড় যারা পার্টির সভ্য এবং কিছুজন গেরুয়া কাপড় পড়েছেন যার অর্থ তারা সরাসরি মন্দিরের পুরোহিত। খাওয়ার পর পাখরে জি তার বক্ত্যব শুরু করলেন। তিঁনি বললেন হিন্দু ধর্মে একদিকে সিবা মতামত গ্রহণের সহিষ্ণুতা এবং অন্যদিকে নিজেধর্ম রক্ষা করতে প্রতিরোধের কথা আছে। তিঁনি বলেন হিন্দুদের ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নানান সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, মন্দির তৈরিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিঁনি জানান একজন বায়সায়ী পরেন সঠিক অর্থে দুনিয়া কে চিনতে। এবং নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে গেলে দরকার হলে রাজনীতিতে যোগদান করা জরুরি। পরেরদিন সন্ধ্যায় কথামতো বক্তা অর্থাৎ গোবিন্দ ঈশান এর বোন কে অঙ্ক পড়াতে গেলো। বিদ্যার অংকের প্রতি এক প্রচন্ড ভয় এবং ঘৃণা কাজ করতো। সে কোনো ভাবেই ভাবতে পারতো না অংকের মতো এক দৈত্য কখনো মজা করে শেখা যায়! গোবিন্দ তাকে সহজ উদহারণ দিয়ে প্রবাবিলিটি এর কিছু গাণিতিক সমস্যার সমাধান করলো এবং শেষে তার এমনযোগিতার জন্য তাকে মৃদু তিরস্কার করলো। তার কারণ তাকে অনেক কষ্টে এই ১ ঘন্টা সময় বের করতে হয়েছে।
অধ্যায় -৫
একদিন তারা আলির ক্রিকেট খেলা দেখতে তাদের বিদ্যালয় -প্রাঙ্গনে হাজির হলো। আলী প্রথমে খেলতে রাজি না হলেও পরে ইশ এর অনুরোধে খেলায় নামে এবং একের পর এক কঠিন বলে ছয় রান করতে থাকে। তারপর মাথার যন্ত্রণার কারণে খেলা থেকে বিরতি নেয়।
ইশ একেবারেই হতচকিত হয়ে গিয়েছিলো আলির পারফরমেন্স দেখে। ইশ সিদ্ধান্ত নিলো যে আলিকে বিনা বেতনে ক্রিকেট শেখাবে এবং মাথার সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখাবে । যদিও ওমি তার ধর্ম নিয়ে আপত্তি জানালো এবং বললো বিট্টু মামা জানতে পারলে দোকান দেবে না। আলী প্রথমে রাজি না হলেও মার্বেলের লোভ দেখিয়ে তাকে রাজি করানো হলো। তাকে ডাক্তার ভার্মার চেম্বারে নিয়ে যওয়া হলে তিঁনি পরীক্ষা করলেন এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুলতানির কাছে নিয়ে যাবার কথা বললেন। ডাক্তার মুলতানি সমস্ত রকম পরীক্ষা করে বললেন যে আলির মস্তিস্ক অনেক উন্নত এবং সাধারণের চেয়ে তার স্নায়ু অনেক তাড়াতাড়ি যেমন কাজ করতে পারে আবার তাড়াতাড়ি ক্লান্তি হয়ে যাও, এছাড়া সে আপুষ্টিতে ভুগছে। ইশ ছেলেটিকে ক্রিকেট কোচিং এবং স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিতে চাইলো, ওমির আপত্তি সত্ত্বেও। ডাক্তার জানালেন ঠিকমতো দেখাশোনা করলে এই ছেলেই একদিন বিখ্যাত হয়ে উঠবে। যখন, ক্লিনিক থেকে ফেরার পথে গোবিন্দ তার দিকে কিছু মার্বেল ছুঁড়ে দিলো সে অনায়াসে তা লুফে নিলো, তারা সবাই তার এই প্রতিভা দেখে অবাক হয়ে গেলো
অধ্যায় -৬
ওমি, ইশ এবং গোবিন্দ আলির বাড়ি গিয়েছিল তার বাবার সাথে কথা বলতে যাতে উনি রাজি হোন আলির ক্রিকেট প্রশিক্ষণ এর ব্যাপারে। আলির বাবা প্রথমদিকে রাজি না হলেও পরের দিকে তিঁনি রাজি হোন, যখন আলীর জন্য ইশ বিনামূল্যে অংকের কোচিং এর ব্যবস্থা করে দেয়। যদিও গোবিন্দ এবং ওমির আপত্তি ছিল, কিন্তু ইশ এর জেদে তারা সেখানে অথিতি হিসাবে ডিনার খেয়েছিলো। আলির বাবা তাদের তার ধর্মনিরপেক্ষ সভাতে আমন্ত্রণ জানান এবং ওমি সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানায়। এরপর বেশ কিছুক্ষন ওমি এবং আলির বাবার মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চলে এবং আলির বাবার মতে হিন্দু -মুসলিম ঐক্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেখানে। রাজনীতিবিদরা যদি সদর্থক ভূমিকা পালন করতেন তাহলে কোনো সমস্যা হতোনা। এরপর আলী নির্দিষ্ট সময়ে অঙ্ক এবং খেলার কোচিং নিতে আসে। স্বাভাবিক ভাবে সে কিছুটা পিছিয়ে পড়তে থাকে এবং ইশ চেষ্টা করে তাকে সঠিক যত্ন এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করার।এরপর বিট্টু মামা আবার তাদের সন্ধেয় তাদের পার্টি এর এক সভায় যোগদান করতে বললেন। ইশ দোকানে থাকার অজুহাত দিলো। ওমি যথারীতি উৎসুক হয়ে পড়লো কিন্তু গোবিন্দ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করার পর তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হলো। এর মাঝেই গোবিন্দ নভরঙ্গপুর মলে তাদের দোকানের সরিয়ে নিয়ে যওয়ার কথা বলার পর মামা অবাক হয়ে গেলেন। তিঁনি চলে যওয়ার পর তারা সবাই এক স্বস্তির নিঃস্বাস নিলো এবং ঘুমিয়ে পড়লো।
অধ্যায় -৭
এই অধ্যায় শুরু হয়েছে গোবিন্দ বিদ্যাকে পড়াতে গিয়েছে। বিদ্যার এক বন্ধু গরিমা যোগাযোগ করেনি বলে তার আগ হয়। এরপর গোবিন্দ কিছুক্ষন অংক অভ্যাস করান কিংও বিদ্যা বলে খুব বেশিক্ষন ধরে তার অংক করতে ভালো লাগে না। গোবিন্দ তাকে ল গার্ডেন মার্কেট থেকে বিজ্ঞান এর কিছু ভালো বই কেনার পরামর্শ দেন। বিদ্যা তাকে অনুরোধ করে তার সাথে বই কিনতে যাওয়ার জন্য। ইশ এর সামনে তার এই নিয়ে কিছু অস্বস্তি হয়। তারপর একদিন তারা ল গার্ডেন মার্কেটে গেলেন। সেখানকার দোকানের মালিক গোবিন্দ কে চিনতেন কিন্তু বিদ্যা বা বিদ্যার সাজসজ্জা নিয়ে তার কৌতূহল গোবিন্দ এর পছন্দ হয়নি। তাই সে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান এবং অংকের বই কিনে বেরিয়ে পড়লো। তারা একটি দোকানে পিটজা খাবার সময়, বিদ্যা তাকে তার বন্ধু হওয়ার অনুরোধ জানালো। প্রথমে রাজি না হলেও ধীরে ধীরে নানা কথাবার্তার মধ্যদিয়ে গোবিন্দ তার দোকান গড়ে তোলার কাহিনী,, তার বন্ধুদের সম্পর্কে তার ভাবনা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সব বলে গেলো । এরপর ইশ আর গোবিন্দ তাঁদের খেলার জিনিস এর সরবরাহকারী গিরিরাজ পন্ডিত এর দোকানে এলো কিছু নতুন ব্যাট কেনার এবং সারানোর জন্য। এই গিরিরাজ পন্ডিত কে কাশ্মীরের এর উগ্রপন্থীরা নিজেদের বাসভূমি থেকে উচ্ছেদ করেছিল। ব্যাটের দরদাম করার সময় সে জানতে পারলো যে তার ভাইপো এবং পরিবার কেও কাশ্মীর থেকে উচ্ছেদ হয়ে চলে আসতে হয়েছে এবং তাদের ভরনপোষনের দায়িত্ব পন্ডিতজীর উপর। যদিও তিনি এখনো ভগবানের উপর আস্থাশীল এটা দেখে গোবিন্দ এর অবাক লেগেছিলো।
অধ্যায় -৮
একদিন আলী দেরি করে প্রাকটিসে আসায় আলী খুব রেগে যায়, তারপর আলী তার মার্বেল খেলার প্রতি থাকা মনোযোগ ছাড়তে না পাড়ায় এবং বার বার ইশ কে যখন সে অনুরোধ করতে থাকে সে বাড়ি যাবে, তখন ইশ রেগে যায় এবং আলী কে প্রহার করে। এতে আলিও কাঁদতে কাঁদতে ইশ এর প্রতি অভিযোগ জানায় তখন গোবিন্দ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্তিথি সামাল দেয়। ইশ অভিযোগ জানায় ভগবান কেন তাকে কোনো দৈব ট্যালেন্ট দেননি, যা সে কাজে লাগিয়ে বড়ো একজন ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে পারতো, কিন্তু আলী এইরকম ক্ষমতা পেয়েও টা মার্বেল খেলায় কাজে লাগিয়ে দিচ্ছে। গোবিন্দ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে নানা ভাবে যে সেও একজন ভালো খেলোয়াড় এবং ভগবানের এইরকম ক্ষমতা দেন যাতে ধনি -দরিদ্রর অসম ব্যাবধ্যান কিছুটা কমানো যায়। এরপর ইশ চকোলেটে, মার্বেল ইত্যাদি উপহার নিয়ে আলীর সাথে দেখা করে এবং ইশ আলীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং আলিও ইশকে প্রহার করার জন্য অনুতপ্ত বলে জানায়। বিদ্যাকে আর ও ভালো করে অংক এবং রসায়ন পড়ার পরামর্শ দিলে বিদ্যা জানায় জে তার এসব পড়তে ভালো লাগে না। সে মুম্বাই যেতে চাই, তখন গোবিন্দ তাকে তার আগ্রহ এবং ইছা অনুযায়ী তার ভবিষ্যৎ ঠিক করার পরামর্শ দেন
অধ্যায় -৯
এই অধ্যায় শুরু হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় দিয়ে। হটাৎ করে একদিন এক প্রচন্ড ভূমিকম্প আছড়ে পড়ে আমেদাবাদ সহজ গোটা গুজরাট জুড়ে। বিপুল ক্ষতি, প্রানহানির ঘটনা ঘটে। গোবিন্দ এর জীবনে প্রথম বিপর্যয় নেমে আসে কারণ তার নতুন দোকান সহ পুরো নভরঙ্গপুর মল ভেঙে মাটির সাথে মিশে যায়। সে ভাবে এই নতুন মলে দোকান করা খুব ভুল কাজ হয়েছে। সে অসুস্থ এবং অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ডাক্তার ভর্মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং এজদিন বিদ্যা তার কাছে আসে এবং একটি সুন্দর গ্রিটিংস কার্ড এর মাধ্যমে তার সুস্থতা কামনা করে। গোবিন্দ এর মা ও বিদ্যাকে খুব পছন্দ করেন। তারপর ইশ আর ওমি এলো এবং গোবিন্দ কে বললো দোকান খোলা হয়েছে এবং তারাই হিসাবের দায়িত্ব রাখছে
তারা গোবিন্দ কে চিন্তা করতে বারণ করলো।
গোবিন্দ এরপর একদিন দোকানে গেলো এবং মামা দোকানে এসে তাকে সান্ত্বনা দিলেন এবং লোন এর ব্যাপারে না ভাবতে বললেন। এছাড়াও তাকে তাঁদের পার্টির কর্মসূচি যেমন অযোদ্ধা থেকে মাটি নিয়ে এসে প্রত্যেক হিন্দু পরিবারে সেই রামজন্মভূমির বিখ্যাত মাটি বিলিয়ে দিতে বললেন। এছাড়াও এই ভূমিকম্প পারেখ জি এবং তিনি অনেক ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্র খোলার বর্ণনা দিলেন।
অধ্যায় -১০
এই অধ্যায় শুরু হয়েছে ইন্ডিয়ান - অস্স্ট্রেলিয়ান খেলার বর্ণনা দিয়ে। এইসময় মিসেস গাঙ্গুলি, কেদারিয়া বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এলেন তার ছেলে বাবলুকে নিয়ে। তিনি অনুরোধ করলেন যাতে তাঁদের বিদ্যালয়ের খেলার সরঞ্জাম এর দায়িত্ব ইশ এর দোকান নিতে পারে। প্রথম দিকে ভারত খারাপ খেললেও চতুর্থ এবং পঞ্চম দিনে ভারতীয় দল অসাধারণ সাফল্য পেলো। তারা মাত্র ৪ উইকেটে ৫৯৪ রান করে ফেললো এবং শেষপর্যন্ত ভারত অস্ট্রেলিয়াকে অনায়াসে হারিয়ে দিলো। ইশ প্রচন্ড খুশি ছিল, এবং তখনি তাঁদের প্রথম খদ্দের একটি ৫০ টাকার বল কিনে নিলো। গোবিন্দ ঈশ্বর কে ধন্যবাদ জানালো।কেডাড়িয়ে বিদ্যালয়ের সাথে তাদের একটি সভা অনুষ্টিত হলো। এবং সেই সভায় অনেক তর্ক বিতর্কের পর মাসিক ১০ হাজার টাকার চুক্তি হলো তাদের দোকান এর সাথে। এই সভায় ইশ খেলাধুলা করার প্রয়োজন কেন এবং গঠনমূলক কাজ, দলবদ্ধ কাজের ভুয়সী প্রশংসা করেছিল। এছাড়াও এই সভাতেই বেলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান -শিক্ষক মিস্টার বনশালী এর সাথে তাঁরা দেখা হলো এবং তিনি তাদের সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করলেন।
অধ্যায় -১১
তাদের গোয়া যাওয়ার কথায় বিদ্যার খুব ভালো লাগলো এবং সে গোবিন্দ কে বললো এই ট্যুর তার মানসিক শক্তিকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। ইশ, আলী কে নিয়ে ভারত -অস্ট্রেলিয়া খেলার মাঠে ভুল পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করেছিল। তারা বলেছিলো তারা উইলসন স্পোর্টস এর মালিক যুবেন সিং এবং তার কার্ড দেখিয়েছিলো। তাদের উদেশ্য ছিল অস্টেলিয়ার কোনো খেলোয়ারের কাছে আলীর দক্ষতা যাচাই করে নেওয়ার। সেই সুযোগ তারা পেলো এবং ফ্রেড বলে একজন এর কাছে আলীর অসাধারণ ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হয়েছিল। ফ্রেড তাদেরকে অস্ট্রেলিয়া আসার আমন্ত্রণ জানালো এবং তাদের আর্থিক অসুবিধার কথা জেনে ৪ টি টিকিট এর ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।
অধ্যায় -১২
গোবিন্দ মামার কাছ থেকে একটি গোডাউন কিনে নিলো তাদের মালপত্র রাখার জন্য। মামা ভাড়া নিতে না চাইলেও গোবিন্দ তা দিয়ে দিলো। এছাড়া তার ১২ বছরের ছেলে ধীরাজ এর সাথে আলাপ হলো। এইসময় পন্ডিতজী গোবিন্দ কে জানালেন তাঁরা কাশ্মীর চলে যাবেন দুই মেয়ের বিয়ে দিয়ে, তাই যদি সব জিনিস গোবিন্দ কিনে নেয়, শেষ পর্যন্ত ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় গোবিন্দ রাজি হলো। গোবিন্দ ইতিমধ্যে জানালো জে তাদের মত ৭০ হাজার আয় হয়েছে এর মধ্যে ৪০ হাজার লোন পরিশোধ করতে এবং বাকি ৩০ হাজার তিনজনের মুনাফা। কিন্তু ইশ অস্ট্রেলিয়া যাবার জেদ করলো, গোবিন্দ জানালো টিকিট বাদেও এক একজনের প্রায় ১০ হাজার টাকা লাগবে যা বায়সার পক্ষে অসম্ভব এই মুহূর্তে। কিন্তু ইশ এবিং ওমি অনড় রইলো এবং তাদের পাওয়া ১০ হাজার করে টাকা দিয়ে দিলো এই ভ্রমণ এর জন্য। অগত্যা গোবিন্দ ও রাজি হলো। এর মধ্যেই মানার হিন্দু পার্টি এবং আলীর বাবার ধর্মনিরপেক্ষ পার্টির একি জায়গায় সভা হলো যেখানে ওমি, ইশ এবং গোবিন্দ উপস্থিত ছিল। গোবিন্দ কে স্পাই হিসাবে পাঠানো হলো যেহেতু সে মামাকে সাহায্য করার কথা দিয়েছিলো আলীর বাবার সভায় কিন্তু আলীর বাবা ঈশানকে ধন্যবাদাজানানোর জন্য (কারণ তার জন্য আলীর এতো ভালো সুযোগ আসছে ) উল্টোদিকের সভায় এলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন গোবিন্দ এর অনুরোধে আলীর বাবা ফিরে এলেন এই জেনে জে গোবিন্দ কেন তাদের সভায় পাঠানো হয়েছিল।
অধ্যায় -১৩
অবশেষে তারা অস্ট্রেলিয়া এসে পৌঁছে গেলো। ফ্রেড, ফিলিপ,পিটার এবং স্টিভ এর সাথে পরিচয় হলো। বিশ্রাম নেওয়ার পর প্রথম দিনের প্রাকটিস এর সময় আলিকে শুধু বল করানো হলো। এটাও কোচিং এর একটি অঙ্গ বলে তারা জানালেন। তারপর ক্রিকেট সম্পর্কে, তাদের দেশে আসল ভালো খেলোয়াড় খুঁজে পেতে যে স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা থাকে তার সম্পর্কে আলোচনা করলেন। পরেরদিন আলী দারুন ব্যাটিং করলো, কিন্তু শেষের দিকে হাঁটুতে আঘাত পেলো। ইশ তাতে বেশি গুরুত্ব না দেওয়ায় ফ্রেড তাকে বোঝালো ইচ্ছাশক্তির সাথে সাথে নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত। এরপর গোবিন্দ এর হটাৎ করে বিদ্যার কথা মনে পড়লো এবং সে বুঝতে পারলো বিদ্যার প্রতি তার এক গভীর আকর্ষণ জন্ম নিয়েছে। সে বিদ্যা কে ফোন করার সিদ্ধান্ত নিলো
অধ্যায় -১৪
গোবিন্দ বিদ্যা কে ফোন করলো। প্রথম কয়েকবার যান্ত্রিক গোলযোগের পর তাকে ফোন পাওয়া গেলো। গোবিন্দ বিচলিত ভাবে কথা বলতে লাগলো প্রথমদিকে। শেষে দুজনে স্বীকার করলো তারা দুজন দুজন কে বন্ধু হিসাবে খুব মিস করছে, বিদ্যা অনুরোধ করলো সমুদ্রের কিছু বালি আনতে যা তাকে এই সুন্দর দেশের কথা মনে করাবে। ইতিমধ্যে ওমি সন্দেহ করে বিদ্যা এবং গোবিন্দ এর সম্পর্কের ব্যাপারে নানা প্রশ্ন করতে লাগলো। শেষে গোবিন্দ বললো তারা শুধু বন্ধু। এদিকে ফ্রেড এর আমন্ত্রণে মিস্টার গ্রীনার এবং ক্যাটার , যারা এই স্কলারশিপ এর দায়িত্বে আছে তিনি এলেন শেষ রবিবার দেখা করতে। তিনি আলিকে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক করে তাকে উপযুক্ত কোচিং এর মাধ্যমে তাকে সেই দেশের একজন নামি খেলোয়াড় করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। কিন্তু আলী প্রবল আপত্তি জানালো এবং বললো সে ভারতীয় হিসাবে নিজেকে গর্বিত বলে মনে করে এবং সে সেই দেশের হয়েই খেলতে চায়। ইশ, ওমি এবং গোবিন্দ ফ্রেড কে বিদায় জানিয়ে দেশে ফিরে এলো।
অধ্যায় -১৫
গোবিন্দ দেশে ফিরে এসে বিদার কথা মনে পড়লো। সে বুঝতে পারলো তার এক সত্তা যখন তাকে ব্যাবসা, অর্থ, নতুন দোকান এসব এর চিন্তায় ব্যস্ত, তখন তার অন্য এক সত্তা বিদ্যার প্রতি তার আবেগ, ভালোবাসার কথা প্রকাশ করছে। সে বিদ্যাকে পড়াতে গেলো এবং তার চাওয়া সিডনি সমুদ্র সৈকতের বালি উপহার দিলো, নানা কথা বলতে বলতে তারা প্রবল আবেগে একে অপরকে চুম্বন করলো, তাদের ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যমে। এদিকে এইসময় বিন লাদেন নামক এক জঙ্গিনেতা নিউ ইয়র্ক এর টুইন টাওয়ার এ বোমা বর্ষণ করলো। বিট্টু মামা জানালেন এটি মুসলিম জঙ্গিদের কাজ এবং তা তাদের নির্বাচনী প্রচারে কাজে লাগবে। এদিকে গোবিন্দ বিদার নম্বর বিদ্যানাথ হিসাবে ফোনে সেভ করে রেখেছিলো, যাতে কেও বুঝতে না পারে।বিদ্যার সেদিন ছিল জন্মদিন ১৮ বছরের তাই সে গোবিন্দ কে কেক আনার অনুরোধ করেছিল। কিছুদিন পর নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হলো এবং বিট্টু মামার দল দুর্ভাগ্যক্রমে পরাজিত হলো। বিট্টু মামা খুব ই হতাশ হয়ে পড়লেন, কিন্তু পারেখ জি তাদের নিয়ে (অমির সাথে ইশ এবং গোবিন্দ ) বিশালার রেস্তোরাঁ তে নিয়ে এলেন। খাবার খেতে খেতে পারেখ জি বললেন হাসমুখ জি এর মতো একজন অন্ধধর্মবিশ্বাস নিয়ে থাকা একজন মানুষ যে হারবেন তা তারা জানতেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এদের নিয়ে খুশি নয় । টায় তারা শ্রীঘ্র মুখ্যমন্ত্রী বদল করবেন। এছাড়াও তিনি মামার প্রশংসা করলেন এবং আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য পরিশ্রম এবং গঠন মূলক উদ্যোগ নেওয়ার উপদেশ দিলেন
অধ্যায় -১৬
বিদ্যার জন্মদিনের জন্য কেক কিনে সে লুকিয়ে টা নিয়ে ইশ এর বাড়িতে গেলো। ইশ তলং ভারত -ইংল্যান্ড খেলায় মগ্ন। ইশ সোজা উপরে ওঠে বিদ্যাকে চুম্বন করলো এবং জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো। তারা কেক কাটলো। ঠিক তখনি প্রবল আবেগের বশবর্তী হয়ে তারা শারীরিক সম্পর্কে নিযুক্ত হলো শেষে গোবিন্দ ভয়, লজ্জা এবং আবেগের ভরে আক্রান্ত হৃদয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ালো।
অধ্যায় -১৭
মামা তাদের ফেব্রুয়ারী মাসে অযোধ্যা যাওয়ার অনুরোধ করলেও সেইসময় ব্যাবসার কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তারা মার্চ মাসে যাবে বলে ঠিক করলো। এর কিছুদিনের পর বিদ্যা জানলো তার পিরিয়ড এর সময় পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। ইতিমধ্যে জানা যায় তারা প্রটেকশন ব্যবহার করে এই নিয়ে ৯ বার শারীরিক ভাবে মিলিত হয়েছে। বিদ্যার কাছ থেকে এই ঘটনা জানার পর গোবিন্দ চিন্তিত হয়ে পড়ে । শেষে একদিন বিদ্যা মেসেজ করে জানায় যে সে সামান্য ব্যাথাও অনুভব করছে ।
অধ্যায় -১৮
এই অধ্যায় শুরু হয়েছে একটি দুর্ঘটনার খবরে। সবরমতি এক্সপ্রেস ট্রেন যেটি অযোধ্যা থেকে রওনা দিয়েছিলো, গোধরা স্টেশন সেই ট্রেনে বেশ কিছু দুষ্কৃতী আক্রমণ চালে, পাথর বর্ষন করে এবং শেষে একটি কামরাতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর ফলে প্রায় ৫০ জনের উপর মানুষ নিহত হয়। মামা খবর পাওয়ার আগেই স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। বিট্টু মামার পুত্র ধীরাজ সেই ট্রেনে ছিল যার এই ঘটনায় মৃত্য হয়েছে। জানা গিয়েছে এসব কিছু মুসলিম সন্ত্রাসবাদীদের কাজ। ধীরে ধীরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লো। হিন্দু জনতা বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলো। গোবিন্দ চোখের সামনে এরম দাঙ্গা এবং মানুষের হতে দেখে খুব ই ভয় পেয়ে গেছিলো। হটাৎ রাত ১১.৩০ টায় তাদের দরজায় ধাক্কা হলো এবং তারা দেখলো মামা হিন্দু জনতার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অধ্যায় -১৯
মামা তার উন্মত্ত দলবল নিয়ে এলেন এবং রক্তের বদলে রক্ত দাবি করলেন। তিনি আলিকে মেরে ফেলতে চাইলেন এবং জানালেন ইতিমধ্যে তিনি আলী এবং আলীর বাবাকে মেরে ফেলেছেন। গভীন্ড, ইশ,ওমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যার্থ হলো। গোবিন্দ ১৫০০০ টাকা রফা করে ১০ জন লোক কে সরিয়ে দিতে পারলেও বাকিরা আলীর প্রাণ -সংহারে উদ্যত হলো।
অধ্যায় -২০
আলিকে বাঁচানোর জন্য তারা প্রথমে কেরোসিন তেল জড়ো করে ছাদে উঠলো। তারপর সমস্ত কেরোসিন তেল তাদের জ্বলন্ত মশালের উপর ঢেলে দিলো। এতে বেশ কিছু লোক হোতাহেত হলো। এরপরেও বাকি পাগল জনতা যখন দরজা ভেঙে আলিকে মারতে উদ্যোগ নিলো, তখন আলিকে তারা একটি লকার এর মধ্যে বন্দি করে ইশ এর ফোন টা তার হাতে দিলো। ওমি কিছু বালিশ ও দিলো। আলী খুব ই ভয় পেয়ে গেলো। এরপর তারা রান্নাঘর থেকে গ্যাস সিলিন্ডার টি বের করে আনলো এবং জ্বলন্ত আগুন দিয়ে দরজার মুখে ফাটিয়ে দিলো। প্রচন্ড এক শব্দে সিলিন্ডার ফেটে গেলো। প্রচুর জনতা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। এমন অভূতপূর্ব ঘটনা গোবিন্দ ঠিকঠাক বর্ণনা করতে অক্ষম। এরই মধ্যে মামা আর ও ৫ জন লোক নিয়ে প্রবেশ করলো, তারা কিছু সন্দেহ করে প্রথমে ঘরে প্রবেশ করেনি। মামা বাড়ির ভেতর ওরবেশ করেই গোবিন্দ, ইশ এবং ওমির মুখোমুখি হলো।
অধ্যায় -২১
এরই মধ্যে বিদ্যার মেসেজ এলো যে তার পিরিয়ড হয়েছে এবং সে খুশি, দুর্ভাগ্যক্রমে তখন গোবিন্দ এর ফোন ইশ এর কাছে ছিল। এরপর ইশ সেই নম্বরে ফোন করে বিদ্যার কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে পুরো ঘটনা বুঝতে পারলো। সে প্রচন্ড রেগে গিয়ে গোবিন্দ কে মারতে থাকলো তার দ্বিতীয় ভুলের জন্য। এর ই মধ্যে মামার দলবল ভেতরে ঢুকলো, কিছুলং লড়াই এর পর ইশ, ওমি এবং গোবিন্দ তিনজনকেই পরাজিত করে, মেরে জোর করে ভাল্ট এর ছবি ছিনিয়ে নিলো যেখানে আলিকে তারা লুকিয়ে রেখেছিলো। তারা আলিকে বার করলো কিন্তু যখন মামা তাকে মারতে যাবে ঠিক সেইসময় তাদের মাঝে এসে পড়লো ওমি। মামা অমির বুকে ত্রিশূল বিদ্ধ করলেন। ভয়ে, দুঃখে, যন্ত্রনায় গোবিন্দ আর ইশ যেন বোবা হয়ে গেলো। এরপরেও মামার রক্তের জন্য হাহাকার কমলো না। এবারেও সে যখন আলিকে আঘাত করতে গেলো, ইশ চোখের ইশারায় গোবিন্দ কে বললো তার কাছে যেতে কিন্তু গোবিন্দ কিছু মুহুর্ত দেরি করে ফেলায় মামা তার কব্জিতে আঘাত করলো, যা ছিল তার তৃতীয় এবং সর্বশেষ বড়ো ভুল। এরপর ইশ হটাৎ একটি বল কুড়িয়ে আলীর দিকে ছুঁড়ে দিলো আর আলী ঠিক সময়ে সেটি জোরে বাট দিয়ে মেরে সোজা মামার কপালের দিকে পাঠিয়ে দিলো। হটাৎ এই ঘটনা ঘটবে তা মামা বুঝতে পারেননি। তাই তার মাথা ফেটে গেলো, গলগল করে রক্ত বেরিয়ে এলো এবং তিনি মারা গেলেন। ইশ যখন আলিকে নিয়ে বেরিয়ে আসছে সে এমন ভাবে গোবিন্দ এর দিকে তাকালো যেন সে তাকে চেনেই না। গোবিন্দ এর প্রতি তীব্র ঘৃণার দৃষ্টি বর্ষণ করে সে বেরিয়ে গেলো।
উপসংহার পর্ব -১
গোবিন্দ তার কথা শেষ করলো। যদিও সেবিকা বারণ আর কথা বলতে কারণ তার পালস রেট বেড়ে গিয়েছিলো । লেখক জানতে চাইলেন বিদ্যা, এবং ইশ এর ব্যাপারে। গোবিন্দ জানালো ওমির মা তাকে অনুরোধ করেছিল দোকানটি আবার চালু করতে কিন্তু ইশ তার সাথে কাজ করতে চাইনি। তাই দোকানটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদিকে গোবিন্দ এর খাতা, বই, পেন্সিল অন্যদিকে ইশ এর খেলার সাজসজ্জা। বিদ্যাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয় এবং শেষে তাকে অন্য স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আলীর কব্জির অপারেশন করাতে আমেরিকার এক হাসপাতাল থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার দরকার ছিল। গোবিন্দ নিজে ২ বছর ধরে তিন লক্ষ টাকা জমিয়ে ইশ কে দিতে গেলে ইশ তা প্রত্যেখ্যান করে এই বলে যে সে অসৎ লোকের টাকা নেবে না এবং তা আলীর চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করবে না। এরপর ই এই সব অপমান সহ্য করতে না পেরে গোবিন্দ ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। লেখক তার মায়ের সাথে কথা বলেন এবং ইশ এর সাথেও এই নিয়ে কথা বলে তাকে বুঝিয়ে হসপিটালে নিয়ে আসেন, সাথে বিদায় আসে। গোবিন্দ পরের দিন হাসপাতালে ঘুম থেকে উঠে ইশ এবং বিদ্যা কে দেখে অবাক হয়ে যায়। বিদ্যর প্রতি তার ভালোবাসার কথা সে ইশ কে জানায়, ইশ এর হাত চেপের ধরে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। বিদ্যাও গোবিন্দকে একটি বার যোগাযোগ না করার এবং এইভাবে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছার জন্য তাকে তিরস্কার করে। গোবিন্দ ইশ এর হাত চেপে ধরে আলীর সুস্থতার জন্য সেই তিন লক্ষ টাকা তাকে নিতে অনুরোধ করে কারণ সেও আলিকে খুব ভালোবাসে। এরপর দুজনে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
গোবিন্দ লেখক কে ধন্যবাদ জানানোর পর লেখক তাকে অনুরোধ করলেনা এই গোটা ঘটনা তিনি বই আকারে প্রকাশ করতে চান। কিন্তু গোবিন্দ বললো যদি ইশ এর অপারেশন ঠিকঠাক হয় তবেই তা সম্ভব। এইসময় বিদ্যার সাথেও তার কথা হলো
উপসংহার পর্ব -২
লেখক আর তার স্ত্রী আলোচনা করছিলেন কবে আলী সুস্থ হবে,কবে আবার খেলতে পারবে। তার স্ত্রী বিরক্ত হলেন কারণ এই এক কথা তিনি নার নার বলে চলেছেন। ঠিক তার একটু পর গোবিন্দ এর বার্তা এলো যে ডাক্তার আলিকে খেলার অনুমতি দিয়েছেন তার নতুন কব্জির সাথে। তার পরদিন সকালে দ্বিতীয় এবং শেষ বার্তা এলো আলী দারুন খেলেছে এবং দুটো বলেই ৬ করে রান হয়েছে।
4:00 AM, September 01, 2022