4:00 AM, January 01, 2024
অস্টিন ক্লিওন, একজন মার্কিন লেখক, তার লেখা এক বিখ্যাত বই “স্টিল লাইক অ্যান আর্টিস্ট” হল অনুপ্রেরণা চাওয়া সৃজনশীল ব্যক্তিদের জন্য একটি পথনির্দেশিকা।তিনি এই গ্রন্থে শিল্পের সাথে মানবজীবনের এক মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তিনি প্রথমেই স্বীকার করে নিয়েছেন যেকোনো উপদেশ হলো ব্যাক্তির অতীতের গর্ভ থেকে পাওয়া শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতার ফসল।সেই মতোই এই বই তেও লেখক তার অতীত সত্তার কথা তুলে ধরেছেন।
অধ্যায় ১- ‘একজন শিল্পীর মতো চুরি করো ‘
এই অধ্যায়ের প্রথমে তিনি ঘোষণা করেছেন শিল্পী তাঁর শিল্পের উপাদান চুরি করেন এই পৃথিবী থেকেই। একজন শিল্পীর কাজ হলো সেইসব যোগ্য ধারণা গুলি কে খুঁজে বার করা যা গ্রহণযোগ্য।এই বিশ্বে মূল বলে কিছু হয় না, সমস্ত শিল্পের উপাদান অতীতের ধারণা থেকে জন্ম নিয়েছে। লেখকের মতে সম্পূর্ণ প্রাথমিক ধারণা নিয়ে শিল্প গঠিত হয় না,তা হলো পূর্বের সমস্ত ধারণা, উপাদান তা হতে পারে একজন এর শিক্ষক, প্রিয় সিনেমা, প্রিয় পুস্তক,প্রিয় সঙ্গীত এই সব এর মিশ্রণ অর্থাৎ পূর্বের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন ধারণার জন্ম দেওয়া।একজন শিল্পী কে বেছে নিতে হবে ছাঁকনির মতো কোনটি গ্রহণযোগ্য আর কোনটি তা নয়।শিল্পীর একান্ত অনুশীলন হলো ভালো এবং বিশুদ্ধ ধারণা কে বেছে নেওয়া এবং তা থেকে নিজের শিপের উপাদান বেছে নেওয়া। এই বেছে নেওয়ার পদ্ধতির কথা বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক একটি সূত্র দিয়েছেন। একজন এর উচিত তার ভালোলাগার ক্ষেত্র টি আবিষ্কার করে ধীরে ধীরে সেই বিষয় কে আবিষ্কার করা, সেই ক্ষেত্রে তার পছন্দের কোনো লেখক, অভিনেতা,শিল্পী–তাঁদের বিষয়ে সব কিছু অধ্যায়ন করা উচিত, তারপর সেই মানুষদের যারা প্রভাবিত করেছেন তাঁদের সম্পর্কে আর এভাবেই সেই ক্ষেত্রে নিজের অবদান তৈরি শুরু হতে পারে।এই পৃথিবীর সমস্ত ধারণা সম্পর্কে কৌতূহলি হওয়া উচিত এবং সেই কৌতূহল মেটাতে ইন্টারনেট ব্যবহার এবং বই পড়ার অভ্যাস নিয়মিত বৃদ্ধি করা উচিত।সবসময় হাতে একটি নোটবুক রাখা উচিত যার সাহায্যে আমরা অতি সহজে চিত্তাকর্ষক বা আকর্ষণীয় কোনো ঘটনা, আলোচনা আমাদের মননে নিতে পারি যা ভবিষ্যতে নিজের সৃজনশীলতার উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা যাবে।
অধ্যায় ২:-’আপনি কে তা না জানা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না’
আমরা সবাই নতুন কোনো সৃজনশীল কাজ এবং তার উৎস সম্পর্কে ভীত থাকি, কিভাবে এবং কোন সময়ে আমরা শুরু করবো কোনো কাজ তা নিয়ে আমরা অনেকসময় খুব চিন্তিত থাকি।এর একটি সমাধান হলো যা তুমি নও সেই সত্তার ভান করো, ভাবতে শুরু করো যে তুমি সেই যোগ্য ব্যাক্তি। এই পৃথিবী হলো একটি রঙ্গমঞ্চ যেখানে সৃজনশীল কাজ হলো একটি নাট্যশালা এবং মঞ্চ হলো একজন শিল্পীর প্রকৃত কর্মস্থান, প্রথমে রঙ্গমঞ্চ অনুযায়ী পোশাক পরে প্রথাগত অভিনয় করতে হবে তারপর নিজের সৃজনশীল মানসিকতার প্রকাশ ঘটবে ঠিক যেরকম পাটি স্মিথ এর ‘জাস্ট কিডস’বই এর দুজন বাচ্ছা ছেলে শিল্পীর পোষাক পরে শিল্পী হওয়ার অভিনয় করে মানুষ এর মনে শিল্পী হিসাবে দাগ কাটতে পেরেছিলো।
আমরা কেউ জন্মগত প্রতিভা পায় না। আমরা যা করি তা হলো আমাদের দেখা নায়ক দের নকল করতে শুরু করি।আমরা লিখি বর্ণমালা নকল করে। আমরা নকল করা এবং চুরি করা এক বিষয় না। আমরা আমাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সম্মানীয় মানুষজন দের শিল্প, আদৰ্শ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকি এবং সেই ব্যাক্তিদের আদৰ্শ, ধারণা গুলি কে পর্যবেক্ষণ করি।
আমরা কেউই নিখুঁত নকল করতে সক্ষম হয় নি এবং এই ক্ষেত্রে অনুকরণ থেকে প্রাথমিক এর দিকে যাত্রা করি।
অধ্যায় -৩ ‘আপনি যে বইটি পড়তে চান তা লিখুন’
আমাদের এমন বিষয় নিয়ে লেখা -লিখি করা উচিত যা আমরা ভালোবাসি এবং যা সম্পর্কে আমরা সচেতন। যদি কোনো ব্যাক্তি গল্প লিখতে ভালোবাসেন বা পছন্দ করেন তার তাই লেখা উচিত।ব্র্যাডফোর্ড কক্স নতুন গান এর সিরিজ উদ্বোধন হওয়ার আগে তার এক নকল রূপ দিতেন এবং মিলিয়ে দেখতেন মূল অ্যালবাম এর সঙ্গে কারণ তিনি গান ভালোবাসতেন।যখন কোনো কর্ম আমরা ভালোবেসে করি তখন তা সুচারু রূপে শেষ করা সম্ভব।তুমি যে ব্যবসা ভালোবাসো, যা গান ভালোবাসো, যে শিল্প ভালোবাসো, যে বই পড়তে ভালোবাসো, সেগুলি শুরু করো এবং নিশ্চয় তার ফল খুব ভালো হবে।
অধ্যায় -৪ ‘
নিজের হাত ব্যবহার করো ‘
এই অধ্যায়ে লেখক বলতে চেয়েছেন আধুনিক এবং এই ডিজিটাল বিশ্বে আমাদের কম্পিউটার এর স্ক্রিন থেকে বেরিয়ে এসে দৈহিক এবং মানসিক কাজ করা উচিত। আমাদের দেহ সঞ্চালন এর মাধ্যমে এটা অনুভব করা উচিত যে আমরা শুধুমাত্র মস্তিষ্কের মাধ্যমে না, দেহের সাহায্যে কোনো কিছু সৃজনশীল কাজ করতে সক্ষম। একজন গায়ক এর গান কিংবা একজন নেতার বক্তব্য এর মাধ্যমে এই ধারণা টি আমরা বুঝতে পারি যেখানে তারা তাঁদের দৈহিক অঙ্গসঞ্চলন এর মাধ্যমে এই কাজ গুলি করে থাকেন। লেখক নিজে একটি ডিজিটাল এবং একটি এনালগ দপ্তর রাখতেন। এনালগ দপ্তরে তিনি কোনো ডিজিটাল যন্ত্র রাখতেন না। এছাড়াও তার প্রথম বই এর ক্ষেত্রে তিনি প্রত্যেক টি কবিতা খবরের কাগজ এর প্রবন্ধ এবং বিশেষ ধরণের মার্কার কলম এর ব্যাবহার করেছিলেন এবং সম্পূর্ণ পক্রিয়া টি দৈহিক পরিশ্রমের ফল।
অধ্যায় -৫ ‘পার্শ্ব প্রকল্প এবং শখ গুরুত্বপূর্ণ’
আমাদের চারিদিকে অনেক নতুন নতুন সৃজনশীল উপাদান থাকে যা আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ বলে মনে হয় তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করা উচিত। অনেক সময় আমাদের বিরক্ত হওয়ার বা বিষন্নতার অনুভূতির প্রয়োজন এবং লেখকের মতে অনেক ভালো সৃজনশীল কাজ এই সময় গুলিতেই ঘটে থাকে।
কোনো এক ব্যাক্তির যদি অনেকগুলি বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে থাকে,তাহলে কোনো একটি বিষয় রেখে বাকিগুলো বর্জন করতে হবে -এই নিয়ম একদম ই ঠিক নয়। আমাদের উচিত সব বিষয় গুলি নিয়ে সময় কাটানো এবং সেগুলিকে সঙ্গ দেওয়া, কিছু কিছু না নতুন ফলাফল সামনে আসবেই।লেখক প্রথম জীবনে গান লিখতেন এবং এক সঙ্গীত ব্যান্ড এ অংশ নিতেন এবং তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি শুধু লেখার উপর নিজেকে কেন্দ্রীভূত করবেন। আবার প্রায় অর্ধদশক পর গানের জগতে ফিরে এলেন। এবং সেই সময় থেকে গান এবং লেখার জগৎ একে ওপরের পরিপূরক হয়ে উঠলো এবং দুটি বিষয় একে অন্যকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলো। এই ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেক ব্যাক্তির একটি শখ থাকা খুব ই প্রয়োজনীয়।এই শখ আমাদের খুশি রাখতে সাহায্য করে এবং এটি কিছু গ্রহণ না করে আমাদের আনন্দ প্রদান করে।
অধ্যায় -৬
‘একটি গোপন পন্থা -’ ভালো কাজ করো এবং তা ভাগ্য করে নাও ‘
এই অধ্যায়ে তিনি একজন শিল্পীসত্তার প্রকৃত রূপ আবিষ্কার করার পথের অনুসন্ধান করেছেন। তিনি বলেছেন কলেজের পর আমরা অনেককিছু হারিয়ে ফেলি, মনে হয় অনেক ক্ষেত্রে আমরা একাকী হয়ে উঠছি কিন্তু লেখক এর মতে এই সময় ই প্রকৃত শিল্পসত্তার প্রকাশ ঘটে যখন আমাদের ভাবমূর্তি এর গুরুত্ব থাকে না।এছাড়া আমাদের পরিচিত হওয়ার জন্য ভালো কাজ করা এবং সেই কাজগুলি কে জনগন এর সাথে ভাগ করে নেওয়া।কোনো কিছুর উপর বিস্ময় অনুভব করা এবং বাকিদের সাথে তা ভাগ্য করে নেওয়া।এইভাবে অংকের সাথে পরিচিত হয়ে অনেককিছু শেখা যায়। আবার এটিও সত্যিই যে সব কিছুই ভাগ্য করে নেওয়া যায় না, কোনো কোনো বিষয় গোপন রাখাই উচিত। যে বিষয়ের উপর কাজ, সেই বিষয়ের খুব সামান্য কার্য শেষের আগে ভাগ্য করে নেওয়া ভালো, এতে বাকিদের আগ্রহ জন্মাবে।
অধ্যায় -৭ ‘
‘ভৌগোলিক এলাকা আমাদের পরিচালনার বিষয় নয় ‘
তিনি পরামর্শ দিয়েছেন নিজের এক জগৎ গড়ে তুলতে যেখানে আমাদের ভালোলাগার উপাদান থাকবে। যে স্থানে আমাদের ভালোবাসার, যে মানুষজন এর সঙ্গলাভে আমরা উৎসাহ বোধ করি তাঁদের নিয়েই আমাদের নিজেদের জগৎ গড়ে তোলা প্রয়োজন। এছাড়াও আমরা নিজেদের ভালো লাগার বিষয় নিয়ে নিজেদের বিশ্ব গড়ে তুলতে সক্ষম।আমাদের প্রয়োজন নিজস্ব সময় এবং স্থান।একান্তে কাটানোর মতো সময় এবং নির্জনতা সরিজনশীল কর্মের পক্ষে উপযুক্ত।
আমাদের উচিত কিছুসময়ের জন্য হলেও আরামদায়ক বাসভূমি ছেড়ে অজানার পথে যাত্রা করা, আমাদের উচিত গৃহ ছাড়া অন্য কোনো স্থানে সময় অতিবাহিত করা।ভ্রমণ আমাদের পরিচিত জগতের সাথে অন্য এক বিশ্বের মেলবন্ধন ঘটায় যা নতুন কিছু সৃষ্টির পক্ষে উপযোগী।খারাপ আবহওয়া অনেক সময় আমাদের নির্জনতা প্রদান করে যা আমাদের চিন্তা ভাবনার পরিসর দিয়ে থাকে তাই সেই আবহওয়া অনুযায়ী আমাদের স্থান বদল কার্যকরি হয়।
অধ্যায় -৮
‘সুন্দর হও (এই বিশ্ব একটি ছোট্ট শহর’)
আমাদের বন্ধু এবং শত্রু দের মধ্যে পার্থক্য করে ফেলা উচিত। বন্ধুদের সাথে সুন্দর কথা, কাজ ভাগ্য করে নেবো এবং শত্রুদের আমরা এড়িয়ে চলবো এর ফলে আমরা দয়ালু হবো এবং ভালো বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ বাড়বে।কোনো নিন্দাজনক ঘটনার প্রতি আমাদের যে স্বাভাবিক ক্রোধ তাকেও আমরা সৃজনশীল উপায়ে ব্যবহার করতে পারি।শিল্পীদের তাঁদের অনুগামীদের উদ্যেশে চিঠি লেখা উচিত যার মাধ্যমে প্রশংসা এবং যুক্তিপূর্ণ পরামর্শ পাওয়া সম্ভব। অনেক সময় অযাচিত নিন্দা এবং ভিত্তিহীন সমালোচনা শিল্পীদের মেনে নিতে হয় যাতে তার ব্যাক্তিগত জীবন অসুখী না হতে পারে। তাই আমাদের উচিত সবসময় সেই পরামর্শ বা প্রশংসা বাক্যগুলির উপর নজর রাখা যা সত্যিই একজন শিল্পীর ভালো কাজের কদর করতে সক্ষম।
অধ্যায় -৯
‘বিরক্তিকর হও (এটি কাজ সম্পন্ন করার একমাত্র উপায়’)
নিজের প্রতি জন্যবান হওয়া উচিত এবং নিজেকে ভালো রাখা সবার প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। অর্থ সম্পদ সম্পর্কে সাবধান হওয়া উচিত। আমাদের নিজেদের জন্য খুব প্রয়োজনমাফিক একটি আয় -ব্যায়ের হিসেব কষে ফেলা এবং সেই অনুযায়ী দিনযাপন করা উচিত।সারাদিন এর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়মাফিক কাজ রাখা উচিত যার সাহায্যে অর্থ উপার্জন সম্ভব এবং এই কাজের সময়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুবিধা আছে। এইসব মানুষ দের জীবন এর বিভিন্ন দিক শিপের কাজের এক বৃহৎ মূলধন হিসাবে কাজে লাগে, এছাড়াও নিজের শরীর কে সক্রিয় এবং কর্মসক্ষম করতে এই কাজ এর দিনগুলি গুরুত্বপূর্ণ।
হাতের সামনে একটি বর্ষপঞ্জী রাখা খুব দরকার যার সাহায্যে আমরা বছরের প্রত্যেকটি দিনের কাজ আগে থেকে সাজিয়ে রাখতে পারি। এছাড়াও আমাদের একটি ডায়েরী রাখা প্রয়জোন যেখানে আমরা প্রত্যেকদিন এর কাজকর্ম, কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা লিপিবদ্ধ করতে পারি। বিবাহ জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। শুধু স্বামী -স্ত্রী এর সম্পর্কে না,এটি হতে পারে আমার বন্ধু, আমার পছন্দেরর কাজ। সঙ্গী পছন্দের এবং উপযোগী হলে আমাদের জীবন খুব সুখের হতে পারে।
অধ্যায় -১০
‘সৃজনশীলতা হল বিয়োগ’
শিল্পীদের জীবন এবং কাজ এর মধ্যেও একটি সীমারেখা থাকা প্রয়োজন। কারণ কিছু সময় নিজের পছন্দের উপর, ব্যাক্তির চাহিদার উপর গুরুত্ব প্রদান করা উচিত।নিজের উপর সঠিক নিয়ন্ত্রন সবচেয়ে সুন্দর সৃজনশীল কাজের জন্ম দিতে সক্ষম।যা আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে থেকে যায়, তা আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত
লেখক শেষে সারাংশ এর হিসাবে বলেছেন নতুন কোনো সৃজনশীল কাজ শুরু করার জন্য উদ্দীপনা,জীবন এর প্রতি নিয়ন্ত্রণ,বই পড়ার অভ্যাস, সবসময় হাতের কাছে নোটবুক, ডায়েরী রাখা উচিত। নিজের কাজের জন্য বর্ষপঞ্জী, পছন্দের ভালো কাজ থেকে নিজের ইচ্ছামতো উপাদান সংগ্রহ,এবং সর্বোপরি নিজের ছোটো ছোটো ইচ্ছাগুলিকে পূরণ করার অদম্য জেদ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
4:00 AM, September 01, 2022