4:00 AM, November 27, 2023
Business & Finance, Non-Fiction
RICH DAD POOR DAD
…ROBERT T. KIYOSAKI
স্কুল কী শিশুদের বাস্তব জগতের উপযুক্ত করে প্রস্তুত করে? আমাদের বাবা মায়েরা বলেন," পরিশ্রম করে পড়াশুনা করো এবং ভালো ফল করো। তাহলে তুমি একটা মোটা মাইনের চাকরি পাবে, বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবে।" শ্যারনেরও বাবা মায়ের উদ্দেশ্য ছিল তাকে কলেজে পড়ার সুযোগ দেওয়া যাতে তিনি জীবনে সফল হওয়ার সুযোগ পান। সেই মতো তিনি পড়াশোনা শেষ করে একটি সেরা অ্যাকাউন্টিং ফার্মের চাকরিতে যোগ দেন এবং সানন্দে সুদীর্ঘ কর্মজীবনের যথাসময়ের আগেই অবসর নেওয়ার প্রত্যাশায় থাকেন। ওনার স্বামীও ছিলেন একই পথের পথিক। যদিও ওনারা কর্মজীবনে সফল ছিলেন কিন্তু যেমন আশা করেছিলেন ঠিক তা হয়ে ওঠেননি। শ্যারন ওনার বাবা মায়ের কাছ থাকে পাওয়া উপদেশই নিজের সন্তানদেরকেও দিয়েছিলেন। কিন্তু ওনার এক ছেলে ওনার ধারণা ভেঙে দেন। ভালো শিক্ষা পাওয়া আর ভালো নম্বর পাওয়া আজকাল আর সাফল্য সুনিশ্চিত করে না। বড় বড় ধনী ব্যক্তিরা তাদের শিক্ষার কারণেই ধনী হয়নি।
আজকালকার দিনের যুবকদের কাছে হাইস্কুল ছাড়ার আগেই ক্রেডিট কার্ড থাকে, অথচ অর্থ কী এবং অর্থ কীভাবে বিনিয়োগ করা হয় এ বিষয়ে তাদের কোনো পাঠ্যক্রম পড়া থাকে না। ফলে কীকরে চক্রবৃদ্ধি সুদ কাজ করে এটা বোঝাও তাদের পক্ষে কঠিন ব্যাপার হয়ে যায়।
ভালো কর্মচারী হবার জন্য সংগ্রামের সঙ্গে সন্তানদের টাকা বিনিয়োগ করে তার মালিক হবার জন্য সংগ্রাম করতে বলার পরামর্শটা খুব একটা মন্দ নয়। ইচ্ছে থাকলে যে কেউ সাফল্য পেতে পারে। আপনি যদি আজ একজন মালি বা পরিচালক হন অথবা যদি বেকারও হন, নিজেকে শিক্ষিত করার ক্ষমতা আপনার আছে। আপনি যাদের ভালবাসেন তাদেরও আপনি শেখাতে পারেন তারা কীভাবে নিজেদের আর্থিক বিষয়ে যত্নবান হতে পারেন। পরিবর্তন আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে তা আমাদের বর্তমান বাস্তবের বাইরে।
ভবিষ্যতে কী আছে কে জানে! কিন্তু যাই হোক, আমাদের কাছে দুটো প্রাথমিক মনোনয়নের সুযোগ আছে–হয় সাবধানে খেলা অথবা বুদ্ধিমানের মত খেলা। নিজেকে প্রস্তুত করা এবং নিজের আর নিজের সন্তানদের আর্থিক বৃদ্ধি জাগিয়ে তোলা।
ধনবান বাবা, নির্ধন বাবা:-
লেখক এখানে উনার দুই বাবার কথা বলেছেন। একজন ধনবান এবং অন্যজন নির্ধন। একজন খুবই উচ্চশিক্ষিত এবং অন্যজন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করেননি। তারা দুজনেই সারাজীবন পরিশ্রম করে কর্মজীবনে সফল হয়েছিলেন। দুজনেই প্রচুর রোজগার করেছিলেন। তবুও একজন সারা জীবন সংগ্রাম করেছিলেন। অন্যজন হাওয়াইয়ের সবথেকে ধনীদের মধ্যে একজন হয়েছিলেন। তারা দুজনে দৃঢ়চেতা, আকর্ষণীয় এবং প্রভাবশালী ব্যাক্তি ছিলেন। দুজনেই লেখককে পরামর্শ দিয়েছিলেন কিন্তু তারা একই ধরনের পরামর্শ দেননি। দুজনেই দৃঢ়ভাবে শিক্ষায় বিশ্বাস করতেন, কিন্তু তারা একই শিক্ষার পাঠক্রম অনুমোদন করেননি।
দুই বাবার দুটো বিপরীত ধর্মী মতামত শুনে লেখকের বিকল্প পছন্দের সুযোগ ছিল; একটা মতামত ধনী ব্যক্তির এবং অন্যটা গরিব ব্যক্তির। ধনীদের ক্রমশ ধনী হওয়ার, গরিবদের আরো গরিব হওয়ার এবং মধ্যবিত্তদের দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার একটা কারণ হলো, অর্থের বিষয়ে শিক্ষা বাড়িতেই হয়, স্কুলে নয়। আমরা বেশিরভাগই আমাদের বাবা মার কাছ থেকে অর্থের বিষয়ে শিক্ষা পাই। সুতরাং এক গরীব বাবা মা তাদের সন্তানদের অর্থ সম্বন্ধে কী বলতে পারেন? তারা সোজাসুজি বলেন,"স্কুলে থাকো এবং পরিশ্রম করে পড়াশোনা করো।" এর ফলে একজন অত্যন্ত ভালো নাম্বার পেয়ে গ্রাজুয়েট হতে পারে কিন্তু তার আর্থিক কর্মসূচি এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি হবে একজন গরীব মানুষের মতো।
অর্থের বিষয়ে স্কুলে শিক্ষা দেওয়া যায় না। স্কুল পুঁথিগত বিদ্যা এবং পেশাদারী দক্ষতার শিক্ষায় মনোনিবেশ করে কিন্তু আর্থিক দক্ষতায় করে না। আমাদের জাতীয় দেনার কারণ অনেকাংশেই উচ্চশিক্ষিত রাজনীতিবিদ এবং সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মচারীরা, যারা আর্থিক বিষয়ের রায় দেন অথচ অর্থের বিষয়ে যাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই বা যৎসামান্য। লেখক তার দুই বাবার উপদেশ নিয়েই চিন্তাভাবনা করতেন এবং তা করতে গিয়ে তিনি মানুষের জীবনের ওপর তার চিন্তাধারার প্রভাবের এক মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন। নয় বছর বয়সে লেখক সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি তার ধনবান বাবার কাছ থেকে অর্থের বিষয়ে শুনবেন এবং শিখবেন।
অর্থ এক ধরনের ক্ষমতা। কিন্তু আরও ক্ষমতাশালী হচ্ছে আর্থিক বিষয়ে শিক্ষা। টাকাকড়ি আসে এবং যায়, কিন্তু অর্থ কীভাবে কাজ করে তা যদি আপনার জানা থাকে, তাহলে আপনি এর উপরে কর্তৃত্ব করতে পারবেন এবং সম্পত্তি সঞ্চয় করতে শুরু করবেন। শুধু ইতিবাচক চিন্তাতে কিছু হয় না কারণ বেশিরভাগ লোক স্কুলে যায় কিন্তু অর্থ কীভাবে কাজ করে তা শেখেনা। লেখকের ধনবান বাবা তাকে প্রধানত ছয়টি মূল শিক্ষা দিয়েছিলেন যা তিনি ৩০ বছর ধরে পুনরাবৃত্তি করে গিয়েছিলেন। এই বইটিতে সেই ছয়টি শিক্ষাই বর্ণিত রয়েছে। লেখক যেমন সহজভাবে শিক্ষা পেয়েছিলেন তেমনি যথাসম্ভব উপস্থাপিত করা হয়েছে। এই অধ্যায়ের শিক্ষাগুলি কোনো কিছুর উত্তর নয়, শুধু দিকনির্দেশিকা মাত্র। এই পৃথিবীতে যতই ক্রমবর্ধমান পরিবর্তন এবং অনিশ্চয়তা ঘটুক না কেন, এসব দিক নির্দেশিকা আপনাকে এবং আপনার সন্তানদের যে আরও ধনবান করে তুলতে সাহায্য করবে সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
শিক্ষা ১: ধনীরা অর্থের জন্য কাজ করে না:-
কিয়োসাকি ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে তার ধনী বাবা তাকে শিখিয়েছিলেন যে ধনীরা অর্থের জন্য কাজ করে না। লেখক তার পাঠকদের বলেছেন জীবন যে ধারণাটি শেখায় তা ভুলে যেতে। তিনি বলেছেন,"জীবন যা করে তা হল আপনাকে চারপাশে ঠেলে দেয়।"
এই অধ্যায়টি এমন লোকেদের সম্পর্কে কথা বলে যারা এটি নিরাপদে খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে কারণ তাদের ঝুঁকি নিতে শেখানো হয়নি। লেখক এই ধারণা গুলি বিকাশ করেন যে, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তরা অর্থ, ভয় এবং লোভের জন্য কাজ করে কারণ তাদের ঝুঁকি নিতে শেখানো হয়নি বরং তাদের আরামদায়ক জায়গায় থাকতে এবং একটি স্থিতিশীল বেতনের চাকরির জন্য কাজ করতে শেখানো হয়েছে। কিয়োসাকি বলেছেন যে জীবনে সুযোগ আসে এবং যায় এবং ধনীরা তাদের চিনতে পারে এবং তাদের দখল করে কিন্তু দরিদ্ররা সুযোগগুলি অপেক্ষা করে কারণ তারা অর্থ এবং নিরাপত্তার জন্য খুব ব্যস্ত।
শিক্ষা ২: অর্থনৈতিক জ্ঞানের শিক্ষা কেন দেওয়া উচিত?
আপনি যদি ধনী হতে চান তাহলে আপনাকে আর্থিকভাবে শিক্ষিত হতে হবে। ধনী ব্যক্তিরা সম্পদ অর্জন করে। দরিদ্র্য এবং মধ্যবিত্তরা দায় স্বীকার করে যা তারা সম্পদ বলে মনে করে।
আপনাকে অবশ্যই একটি সম্পদ এবং দায়বদ্ধতার মধ্যে পার্থক্য জানতে হবে। সম্পদ এবং দায়বদ্ধতার সংজ্ঞা: একটি সম্পদ আপনার পকেটে টাকা রাখে। একটি দায় আপনার পকেট থেকে টাকা নেয়।
শেখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক পাঠ গুলির মধ্যে একটি হলো সম্পদ এবং দায়গুলিকে আলাদা করা। কিয়োসাকি আর্থিক স্বাক্ষরতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন কারণ এটি ছাড়া আপনি ধনী হলেও আপনি কিছু পেশাদার ক্রীড়াবিদ এবং সেলিব্রিটিদের মতো ভেঙ্গে পড়তে পারেন, যারা দুর্বল আর্থিক সিদ্ধান্ত নেন।
লেখক সহজে সম্পদ এবং দায় পার্থক্য করার জন্য একটি চিত্র দেখান। ধনীরা ধনী হতে থাকে কারণ তারা সম্পদ ক্রয় করে এবং দায়বদ্ধতা একেবারে নূন্যতম রাখে। অন্যদিকে দরিদ্ররা দরিদ্র্য থেকে যায় কারণ তারা বিপরীত করে এবং দায় জমা রাখে। এই অধ্যায় থেকে আর একটি শিক্ষা হল, আপনি কতটা উপার্জন করেন তা নয়, তবে আপনি কতটা রাখতে পারেন যা আপনাকে সত্যিই ধনী করে তোলে।
শিক্ষা ৩: নিজের কাজে মনোযোগ দিন:-
কিয়োসাকি বলেছেন, ব্যক্তিরা যদি আর্থিক ভাবে মুক্ত হতে চান তবে তাদের নিজের ব্যবসায় মন দেওয়া উচিত। নিয়োগকর্তার ব্যবসাকে তাদের কিছু মনে করা উচিত নয় কারণ এটি তাদের ব্যবসা নয়। পরিবর্তে তাদের নিজস্ব বস হওয়ার এবং তাদের নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তোলার উপায়গুলির জন্য প্রচেষ্টা করা উচিত।
এই অধ্যায়ে লেখক রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগের ধারণাটি ব্যাখ্যা করেছেন এবং উদাহরণ হিসেবে ম্যাকডোনাল্ডস ব্যবহার করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ম্যাকডোনাল্ডস বিশ্বের সেরা হ্যামবার্গার তৈরি করতে পারেন না ঠিকই তবে তিনি আমেরিকার সবচেয়ে মূল্যবান চৌরাস্তা এবং রাস্তার মালিক।
লেখক সম্পদ নির্মাণের ওপর আলোচনা চালিয়ে গেছেন। তাঁর মতে নগদ প্রবাহ আনতে সক্ষম এমন মূল্যের যেকোনো কিছুকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। যেমন স্টক, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড, অর্থ উৎপাদক রিয়েল এস্টেট ইত্যাদি।
শিক্ষা ৪:- কর এবং কর্পোরেশনের ক্ষমতা:-
কিয়োসাকি ব্যাখা করেন যে কীভাবে দরিদ্ররা বড়ো কর্পোরেশনগুলিকে তাদের কারসাজি করতে দেয়,যেখানে ধনীরা তাদের সম্পদ রক্ষা এবং বৃদ্ধি করতে বড়ো কর্পোরেশনগুলিকে ব্যবহার করে। এর মানে হল ধনীরা তাদের সম্পদ রক্ষা এবং বৃদ্ধি করতে কর্পোরেশনের ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য জ্ঞানের অধিকারী। দরিদ্র ব্যক্তিরা অর্থ উপার্জন করে,সেই অর্থের উপর কর দেয় এবং যা অবশিষ্ট থাকে তা নিয়ে জীবনযাপন করে। অন্যদিকে ধনীরা অর্থ উপার্জন করে, যা কিছু করতে পারে তা ব্যয় করে এবং যা কিছু অবশিষ্ট থাকে তার ওপর কর দেয়। ধনীরা কর্পোরেশনের আইনসম্মত কাঠামো এবং ক্ষমতা সম্বন্ধে ওয়াকিবহল। ফলে তারা গরিব ও মধ্যবিত্তের তুলনায় বেশি সুবিধা পায়।
ক্ষমতা মানেই অর্থের জন্য কাজ করার বদলে অর্থকে দিয়ে আপনার জন্য পরিশ্রম করানো।আপনি যদি অর্থের জন্য কাজ করেন ক্ষমতাটা আপনার মালিককে দিয়ে দেন। আপনি যদি অর্থকে দিয়ে নিজের জন্য কাজ করেন আপনি ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
লেখক দৈনিক অস্তিত্বের অস্থিরতা ত্যাগ করার একটি উপায় হিসেবে একজনের আই কিউ বিকাশের পরামর্শ দিয়েছেন। এটি অ্যাকাউন্টিং, বিনিয়োগ, বাজার বোঝা এবং আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়।
শিক্ষা ৫: ধনীরা অর্থ তৈরি করে:-
লেখক আত্মসন্দেহের ধারণা বিকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষই প্রতিভা নিয়ে জন্মায় কিন্তু আত্মসন্দেহ ও ভয়ের কারণে সেই প্রতিভা চাপা পড়ে যায়। তিনি বলেন যারা এগিয়ে যায় তারা শুধু বুদ্ধিমান মানুষই নয়, তারা সাহসী এবং দুঃসাহসিকও। লোকেদের প্রচুর অর্থ থাকলেও আর্থিকভাবে কখনো এগিয়ে যায় না কারণ তাদের এমন সুযোগ রয়েছে যা তারা ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়। তাদের বেশিরভাগই সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকে। লেখকের ধারণা মানুষ ভাগ্য তৈরি করে; এটার জন্য অপেক্ষা করা উচিত নয়। টাকার ক্ষেত্রেও ঠিক একই। এটা তৈরি করতে হবে।
বইটিতে অনেক রিয়েল এস্টেট ডিলের উদাহরণের সাহায্যে লেখক ব্যাখা করেছেন ধনীরা একত্রে চুক্তি করে অর্থ উদ্ভাবন করে, যা আর্থিক ভাবে অপ্রশিক্ষিত চোখ দ্বারা দেখা যায় না। ধনী ব্যক্তিরা অর্থ উপার্জনের চারটি প্রয়োজনীয় দক্ষতায় ভালোভাবে পারদর্শী: অ্যাকাউন্টিং, বিনিয়োগ, বাজার বোঝা এবং আইন।
শিক্ষা ৬: শেখার জন্য কাজ করুন, অর্থের জন্য নয়:-
লেখক এই অধ্যায়ে একজন ব্যক্তির জীবনে আর্থিক সাফল্য বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি একজন মহিলার উদাহরণ দেন যিনি ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন কিন্তু লেখক যখন তাকে বিক্রি করতে এবং সরাসরি বিপণন শেখার পরামর্শ দেন তখন তিনি বিরক্ত হন। কিয়োসাকি বলেছেন যে, কেউ যদি ধনী হতে চায় তবে তাকে তার নগদ প্রবাহ, মানুষ এবং সিস্টেম কীভাবে পরিচালনা করতে হয় তা শিখতে হবে। আর এই কারণেই বিক্রয় এবং বিপণন আর্থিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন যে জীবনে আর্থিকভাবে সফল হওয়ার জন্য যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বাধা অতিক্রম করা:-
কিয়োসাকি পাঁচটি ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কথা বলছেন যা মানুষকে বাধা দেয়। আর সেগুলো হল ভয়, উন্মাদনা, খারাপ অভ্যাস, অলসতা এবং অহংকার। তিনি বলেছেন যে ভয় থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু আপনি কীভাবে এটি পরিচালনা করেন তা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লোকেদের সমস্যার পরিবর্তে পুরস্কারের দিকে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেন। লেখক একটি উদাহরণ দিয়েছেন যে, বেশিরভাগ লোকেরা বলে যে তারা ধনী হতে চায় এবং যখন তিনি তাদের রিয়েল এস্টেট কেনার পরামর্শ দেন তখন তাদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হয়,"কিন্তু আমি টয়লেট ঠিক করতে চাইনা।" লেখক বিশ্বাস করেন যে এটা পরিহাসের বিষয় যে তারা রিয়েল এস্টেটের সামনে যা আছে তার চেয়ে টয়লেট ঠিক করার মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তিত।
একটি চূড়ান্ত পয়েন্ট হিসেবে লেখক বলেছেন যে লোভী হওয়া স্বাস্থ্যকর,তাই যখন কোনো সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হন, একজন ব্যক্তিকে সর্বদা জিজ্ঞাসা করতে হবে," এতে আমার জন্য কি আছে?"
শুরু করা:-
এই অধ্যায়টি ব্যক্তিগত সম্পদ তৈরির বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টি এবং টিপস প্রদান করে। কিয়োসাকি বলেছেন যে আপনি যদি ধনী হতে চান তবে আপনাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য আপনার বর্তমান বাস্তবতার চেয়ে বড়ো কারণ খুঁজে বের করতে হবে। শুরু করার জন্য কয়েকটি পরামর্শ:
১) আপনি যা করেছেন তা করা বন্ধ করুন:-
একটি বিরতি নিন এবং মূল্যায়ন করুন কী কাজ করছে এবং কি কাজ করছে না।যা কাজ করছে না তা বন্ধ করুন এবং নতুন কিছু সন্ধান করুন।
২) এমন ব্যক্তিকে খুঁজুন যিনি আপনি যা করতে চান তা করেছেন:-
আপনি যা করতে চান তা করেছে এমন লোকদের সন্ধান করুন, তারা পরামর্শ এবং নির্দেশিকা চাইতে অনেক ভালো।
৩) ইতিহাস থেকে শিখুন। সমস্ত বড় কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জে ছোট কোম্পানি হিসেবে শুরু করেছিল। কর্নেল স্যানডার্স তার ষাট বছর বয়সের সব হারানোর পর ধনী হতে পেরেছিলেন। বিল গেটস ৩০ বছরের আগেই পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা ধনী ব্যক্তিদের একজন ছিলেন।
রবার্ট কিয়োসাকির স্পষ্ট বক্তব্য ছিল,"নিজের অর্থের দায়িত্ব নিন অথবা সারাজীবন অন্যের হুকুম মেনে চলুন। আপনি অর্থের প্রভু বা মালিক হতে পারেন অথবা এর ক্রীতদাস হতে পারেন।" আপনার ভেতর সুপ্ত আর্থিক প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলুন। আপনার প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সুযোগ আছে।
সমাপ্ত
(উপরিউক্ত অংশটি ROBERT T. KIYOSAKI -র লেখা "RICH DAD POOR DAD" -এর সারসংক্ষেপ। আপনি চাইলে পুরো বইটি পড়তে পারেন)।
ধন্যবাদ
4:00 AM, September 01, 2022