::HOW TO DEVELOP SELF CONFIDENCE ::

DALE CARNEGIE

ডেল কার্নেগী একজন আমেরিকান অধ্যাপক ও লেখক ছিলেন। মিশৌরির এক গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন , তবে অধ্যাপকের রূপেই তিনি বেশী সফলতা অর্জন করেছিলেন।

:: সাহস আর আত্মবিশ্বাস বাড়ানো ::

সবার প্রথমে নিজের মধ্যে পাবলিক স্পিকিং স্কিল উন্নত করার জন্য গভীর ইচ্ছে থাকা দরকার, যদি সেই ইচ্ছে না থাকে তাহলে দর্শক ও শ্রোতাদের মনে হবে আপনার মধ্যে উইল পাওয়ার নেই, প্রেরণা নেই। এক একটি পদক্ষেপ আপনার জীবনের এক একটি সিঁড়ি।

১)মজবুতভাবে ও মন দিয়ে শুরু করা - ভাবুন নিজের যে দক্ষতা অর্জন করেছেন সেই দক্ষতাকে কীভাবে বাড়াবেন ও তার থেকে কিভাবে বেশী উপার্জন করতে পারবেন।

২) যে বিষয়ে বলতে যাচ্ছেন তার ব্যাপারে ভালোভাবে জানুন অর্থাৎ যে বিষয় নিয়ে বলবেন তাতে যদি আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে তাহলে বিশ্বাস এর উচ্চতাটা নিজে থেকেই বেড়ে যাবে।

৩) আত্মবিশ্বাসী হওয়া অর্থাৎ আপনি যে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর তা যেন নিজের সবার আগে আসে। যতক্ষন না বিশ্বাস আসে ততক্ষন এমন আচরণ করতে হবে যেন আপনি সত্যি আত্মবিশ্বাসী। জোরে নিঃশাস নিন, দর্শকের চোখে চোখ রাখুন ও বক্তৃতা দিন, এমন কোনো কাজ করবেননা যাতে আপনাকে নার্ভাস লাগে। যেমন - দুলতে থাকা জামা নিয়ে খেলা ইত্যাদি।

৪) অভ্যাস - কথায় আছে "প্রাকটিস ক্যান মেকস এ ম্যান পারফেক্ট " অর্থাৎ অভ্যাস করলে আপনি একদিন অবশ্যই সফলতা পাবেন। কোনো বক্তৃতা দেওয়ার আগে এতবার অভ্যাস করুন যতক্ষণ না ওতে আপনি দক্ষ হয়ে যান। আর দক্ষতা অর্জন করার পর বা দক্ষ হয়ে ওঠার পর আপনি আরো বিশ্বাস ফিরে পাবেন, মনে জোর পাবেন এবং আপনার পারফর্মেন্স বা অভিনয় খুব ভালো করবেন।

::প্রস্তুতির দ্বারা আত্মবিশ্বাস বাড়ানো ::

কোনো প্রেসেন্টেশন কে প্রস্তুত করতে গেলে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে যেমন -

প্রস্তুতির সঠিক উপায় - যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে সেই বিষয়টিকে বাছুন এরপর সেটা ভালোভাবে জানুন ও তার ব্যাপারে গবেষণা করুন। একসাথে অনেক কিছু বলার চেষ্টা না করাই ভালো। নিজের লক্ষ্য স্থির করুন ও তাকে নিজের জীবনের লক্ষ্য বানিয়ে গবেষণা করুন। অর্থাৎ যে বিষয়ে আপনি আগ্রহী হবেন, বেশী করে গবেষণা করবেন এবং যার প্রতি আপনি মনোনিবেশ করবেন তাতেই সফলতা পাবেন। ডেল কার্নেগীর একটা পাবলিক স্পিকিং ক্লাসে জ্যাকসন নামের একটা ব্যাক্তির প্রেজেন্টশন দেওয়ার কথা ছিলো এবং তিনি আসার পথেই " সফলতা পাওয়ার ১০ বছর " এই আর্টিকেলটি পড়ে নিয়েছিলেন ও প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলেন যা শুনে দর্শক একেবারেই খুশি হননি এবং তারা তা মনোযোগ দিয়ে শোনেননি। পরবর্তী সময়ে ডেল কার্নেগী তেনাকে ডেকে সেই স্পিচ এর মধ্যে নিজের আইডিয়া ও এক্সাম্পল কে যুক্ত করতে বলেছিলেন। এরপর তিনি সেই বিষয়কেই মনোযোগ দিয়ে পড়েন ও গবেষণা করে দেখলেন লেখকদের সঙ্গে অনেক মতের অমিল হচ্ছে এবং তিনি পুনরায় এটাকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরলেন, এবারের প্রেজেন্টেশন ছিলো আগের বারের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি প্রতিটা কথা নিজের মন থেকে বলেছিলেন। প্রত্যেকটা কথাকে তিনি মন থেকে বিশ্বাস করতেন এবং দর্শকও এতে খুব খুশি হয়েছিলেন।

:: বিখ্যাত বক্তারা কীভাবে তাদের বক্তব্য তৈরী করেছেন ::

আপনি কখনো একটা পরিকল্পনাকে প্রত্যেকটা বক্তব্যতে ব্যবহার করতে পারবেননা কারণ প্রত্যেকটা বিষয়ের পরিস্থিতি ও প্রাসঙ্গিকতা/ বিষয় আলাদা হয়। একটা ভালো বক্তব্যের জন্য ড. কোনবেল সবার প্রথমে নিজের বক্তব্যের একটা আউটলাইন বানিয়েছিলেন। প্রথমে নিজের জন্য বানান এরপর একটি আর্গুমেন্ট / তর্ক তৈরী করুন, ফ্যাক্ট এর সঙ্গে একমত হওয়া বা না হওয়া পুরোপুরিভাবে তাঁর ওপর নির্ভরশীল, এরপর আলোচনার মাধ্যমে দর্শকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলেন। একটা ভালো বক্তব্যের জন্য ভালো লাইন হলো একটা সমস্যার ওপর আলোচনা করা আর সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা এবং তারপর দর্শকদের সঙ্গে সংযোগ করা যেমনই আউটলাইন অনুস্মরণ করুন না কেন মনে রাখবেন যে বক্তব্য যেন দর্শকের মনকে আকর্ষিত করে। কিছু এমন করুন যা ভুল এবং দেখান যে কীভাবে এটিকে ঠিক করা যায়। বক্তব্যকে ভালো বানানোর জন্য কিছু এডিট বা ডিলিট করতে পারেন। ভালো বক্তব্যের জন্য নোটস বানানো জরুরি হয়ে ওঠে, তবে তাকে বলার সময় পড়া ঠিক নয়। তাতে দর্শকদের আগ্রহ শেষ হয়ে যাবে। দরকার হয় নিজের বক্তব্যকে রেকর্ড করুন ও নিজের বন্ধু বা পেশাদার কাউকে শোনান এবং তাদের মতামত নিন ও তাতে উন্নতিসাধন করুন।

::স্মৃতিশক্তি প্রখর করুন ::

যেই জিনিসকে মনে রাখতে চান তাকে গভীরভাবে ভাবুন ও তার ছবিকে মনের মধ্যে গেঁথে নিন। তার জন্য এটা করা জরুরি -

ক ) মনকে একাগ্রো করুন এটা থিওডোর রুজবেল্ট এর মেমোরির রহস্য ছিলো।

খ ) মনোযোগ দিয়ে দেখুন, একটা সঠিক প্রভাব পান। একটি ক্যামেরা কখনোই কুয়াশার মধ্যে স্পষ্ট ছবি নিতে পারেনা, তেমনি আমাদের মস্তিস্কও ধোঁয়াশার মধ্যে সঠিক নির্ণয় নিতে পারেনা।

গ ) লিঙ্কন মনে রাখার জিনিসগুলোকে জোরে জোরে পড়তেন যাতে চোখ ও কানকে প্রভাবিত করতে পারেন।

ঘ ) চোখকে প্রভাবিত করুন। চোখের দ্বারা দৃষ্ট কোনো জিনিস কানের থেকে ২৫ গুন দ্রুতগতিতে মস্তিষ্কে যায়।

মনে রাখার দ্বিতীয় নিয়ম হলো পুনরাবৃত্তি করা। আমরা বারবার কোনো জিনিসকে পুনরাবৃত্তির মাধ্যমেই মনে রাখতে পারি, তবে মনে রাখতে হবে যে -

১)একবারই বসে একটা জিনিস পড়ুন যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটা আপনার মস্তিষ্কে গেঁথে যায়। এক- দুবার পড়ে ছেড়ে দিন পরে আবার পড়ুন।

২)আমরা কোনো জিনিস মনে রাখার থেকে বেশী ভুলি তাই নতুন জিনিস পড়ার আগে পুরানোকে একবার পুনরাবৃত্তি করে নেওয়া প্রয়োজন।

মেমোরির তৃতীয় নিয়ম হলো এসোসিয়েশন। কোনো জিনিসকে আমরা তখনি মনে করতে পারি যখন তার মধ্যে অন্য তথ্যকে যুক্ত করি মনে যা আসে। অধ্যাপক জেমস বলেছিলেন - "তাকে বারবার আনা দরকার, যাতে প্রথম থেকেই কোনো জিনিসের সঙ্গে এসোসিয়েট/ সহযোগি হয়ে যায়। যে তার অনুভূতির ব্যাপারে সবথেকে বেশী ভাবতে পারে এবং তাকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে, তখন আমাদের ভালো মেমোরি অংশীদার হয়"।

যখন আপনি কোনো তথ্যকে অন্য তথ্যর সঙ্গে যুক্ত করেন তখন সেই তথ্যর ব্যাপারে সবদিক দিয়েই ভাবুন। তার ব্যাপারে প্রশ্ন করুন - এটা এমন কেন? এটা এমন কীভাবে? এটা এমন কোথায় আছে? কে এমন বলেছেন?

কোনো দিন মনে রাখার জন্য বিশেষ দিনের সঙ্গে তুলনা করে তাকে মনে রাখুন।

কোনো অজানা ব্যাক্তির নাম মনে রাখার জন্য তার চেহারাকে মনোযোগ দিয়ে দেখুন এবং তার সঙ্গে তার নামকে সংযোগ করার চেষ্টা করুন। ওনার ব্যাবসার ব্যাপারে জানুন একটার সঙ্গে আর একটার সংযোগ করে মনে করার চেষ্টা করুন।

এভাবেও যদিনা আপনি মনে রাখতে পারেন ও ভুলে যান যে আপনি কী বলতে চান তাহলে শেষ বাককের শেষ শব্দ দিয়ে নতুন বাক্য তৈরী করে নিজেকে বাঁচাতে পারেন। এটা ততক্ষন পর্যন্ত করুন যতক্ষণ না আপনার নতুন বিন্দু মনে পড়ে যায়।

:: সফল বক্তৃতার জন্য প্রয়োজনীয় তত্ত্ব ::

যখন আমরা কোনো নতুন জিনিস শিখতে শুরু করি যেমন কী কোনো নতুন ভাষা বা পাবলিক স্পিকিং তখন আমরা ক্রমাগত তাকে অধ্যাবসায় করিনা। এরপর কিছু সময়ের জন্য আমরা থেমে যাই কখনও পিছিয়ে যাই। এর ফলে কিছু মানুষ হাল ছেড়ে দেয় কিন্তু যে হাল না ছেড়ে ক্রমাগত এগিয়ে যায় সে একদিন বিমান এর মতোই বেরিয়ে যাবে।

শুরুতে কখনোই চিন্তা না করে আপনি বলতে পারবেননা। কিন্ত যদি আপনি লেগে থাকেন তাহলে আপনি সেইসব জিনিস সরিয়ে দেবেন আর আপনার প্রথমে পাওয়া ভয় ও কেটে যাবে।

অধ্যাপক জেমস বলেছেন নিজের শিক্ষার ব্যাপারে চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। যদি তিনি নিজেকে ব্যাস্ত রাখতে চান তো নিজে যেই ক্ষেত্রে আছেন সেখানেই লেগে থাকলে সফলতা পাবেন।

নিজের সফলতার ব্যাপারে ভাবুন তখন আপনি সফলতার জন্য জরুরি জিনিস করতে থাকবেন।

যদি আস্থা হারিয়ে ফেলেন তাহলে রুজবেল্ট এর প্ল্যান কে কাজে লাগান আর লিঙ্কন এর ছবি দেখুন আর জিজ্ঞেস করুন যে এই পরিস্থিতিতে উনি কী করতেন।

::সুন্দর পরিবেশনার রহস্য ::

যেকোনো বক্তৃতায় শব্দ ছাড়াও কিছু থাকে যা অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ হয়। আপনি কী বলছেন তার থেকেও বড়ো হলো কীভাবে বলছেন?

অনেক বক্তা শ্রোতাদের দিকে খেয়াল রাখেন না তাদের মাথার ওপর বা মেঝের দিকে দেখেন, এমন মনে হয় যে নিজেই কোনো কিছু উপস্থাপনা করছেন এতে পারস্পরিক লেনদেন হয়না । এই ধরণের ভাবনা চিন্তা তাড়াতাড়ি উপসংহার এর দিকে নিয়ে যায়।

প্রত্যেক ব্যাক্তির মধ্যেই বক্তৃতা দেওয়ার যোগ্যতা থাকে। যদি না বিশ্বাস হয় তো কোনো মানুষ কে আঘাত করে দেখুন উনি অনেক কিছুই শুনিয়ে যাবেন যার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। এই পদ্ধতি আপনাকেও নিতে হবে, সাধারণ ভাবেই কথা বলুন। নিজের নিজস্বতা কে কখনোই হারাবেন না ও কারোর নকল করবেন না।

আপনার শ্রোতাদের সঙ্গে এমনভাবে কথা বলুন যেন মনে হয় তারা আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করুক আপনি এটাই চাইছেন। এবং কোনো প্রশ্ন আপনার দিকে এলে এভাবেই বলবেন যে " আপনি জিজ্ঞেস করছেন, আমি এটা কীভাবে জানি তাই তো?- বলছি " এতে আপনার মানবিক দিকটিও প্রকাশ পাবে।

ওনাদের সঙ্গে কথাবার্তায় পুরো মনোযোগ লাগান। এতে আপনার কাজও সহজলভ্য হবে।

এখানে ৪ টে কথা উল্লেখ করছি যা আমরা কথা বলার সময় ব্যবহার করি কিন্তু বক্তৃতা দেওয়ার সময় কী ব্যবহার করি??অধিকাংশ মানুষ করেন না

১) জরুরি কথার উপর জোর দিয়ে আর কম গুরুত্বপূর্ণ কথার উপর কম জোর দিয়ে কথা বলি??

২) আপনার কথা বলার সময় আওয়াজ কী উপরে নিচে হয় যেভাবে একজন শিশু কথা বলে?

৩) আপনি কী বলার সময় দ্রুততার দিকে খেয়াল রাখেন? কম জরুরি কথাকে তাড়াতাড়ি ও জরুরি কথাকে ধীরে অনেকটা সময় ধরে বলেন?

৪) আপনি কী আপনার প্রভাবশালী বিচারের প্রথমে ও শেষে দাঁড়িয়ে যান?

:: মঞ্চের উপরে প্রভাব এবং ব্যাক্তিত্ব ::

যখন হায়রান হবেন তখন বলবেননা একটু আরাম করুন ও এনার্জি নিয়ে তারপর বলুন।

বলার আগে কম খাবেন।

যাতে আপনার এনার্জি কম হয়ে যায় এরকম কোনো কাজ আপনি করবেননা।

ভালো পোশাক পরবেন যাতে তা অন্যকে আকর্ষিত করে।

হাসিখুশি থাকুন ও এমন আচরণ করুন যাতে এখানে আসার জন্য আপনি খুব উতলা হয়েছিলেন।

শ্রোতাদের সঙ্গে মিশে যান। নিজের প্লাটফর্ম থেকে বেরিয়ে ওনাদের প্লাটফর্ম এ যান এবং কথাবার্তা চালিয়ে যান।

ওখানের পরিবেশকে মজাদার ও আনন্দময় করে তুলুন।

এমন জায়গায় দাঁড়াবেন যেখানে আপনার উপর আলো এসে পড়ে এবং আপনার আব- ভাব স্পষ্ট চোখে পড়ে।

কোনো টেবিল, চেয়ার এর পেছনে দাঁড়াবেন না বা কিছু রাখবেন না যা আপনার প্লাটফর্ম কে ভর্তি করে দেয়।

যদি আপনার প্লাটফর্ম এ কোনো অতিথি থাকে তা শ্রোতাদের মনোযোগকে বিচ্ছিন্ন করবে। একজন শ্রোতা কোনো নড়তে থাকা জিনিসকে বা ঘুরতে থাকা পশুকে যখন দেখতে ছাড়েনা তো কেন এই অসুবিধেকে নিজের প্লাটফর্ম এ রাখতে হবে??

:: বক্তৃতা কীভাবে শুরু করবেন ::

কোনো বক্তৃতার আরম্ভ কঠিন ই হয়। আর এটা দরকারও আছে কারণ শ্রোতাদের মনে তখন সতেজ থাকে খুব সহজেই তাদের মনকে আকর্ষিত করা যায়, তাই ভালোভাবে শুরু করতে হবে।

পরিচয় অল্প হওয়া দরকার, এক কিম্বা দুই বাক্যতে। এটা না বললেও চলবে। কেউ এই বিষয়ে প্রশ্নও করবে না।

এমনভাবে কাহিনী শুরু করুন যাতে শ্রোতারা বিরক্ত না হয়ে যায়, আনন্দ অনুভব করে।

একজন বক্তা শ্রোতার মনকে তাড়াতাড়ি আকর্ষণ করতে পারে -

১) এক মানবীয় গল্পের সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন করে।

২) এক উদাহরণ দিয়ে শুরু করুন।

৩) একটা প্রদর্শনির ব্যবহার করুন।

৪) কোন প্রশ্ন করা।

৫)একটা কোনো ভালো প্রশ্ন দিয়ে শুরু করুন।

৬) এটা দেখান যে কোনো বিষয়ে শ্রোতা কীভাবে আগ্রহী হবেন।

৭)কোনো বিষয় যা চমকে দিতে পারে সেইসব তথ্য দিয়ে শুরু করুন।

শুরুটাকে ভালোভাবে করুন যা পুরো বক্তৃতাকে সুন্দর ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

:: বক্তৃতা শেষ কীভাবে করবেন ::

যেকোনো বক্তব্যের ক্ষেত্রেই ভূমিকার মতো উপসংহার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বক্তব্যের উপসংহার এটা ঠিক করে দেবে যে আপনি একজন পাকাপোক্ত বক্তা নাকি একজন শিক্ষানবিস/ আরম্ভকারী। আপনার উপসংহার প্রেরণাদায়ী ও দীপক হওয়া দরকার। অনেক বক্তা শেষে একটাই কথা বলেন যে তিনি সব বলে দিয়েছেন এবং তিনি এবারে শেষ করবেন, এইরকম উপসংহার বিরক্তিকর হয়। শেষটা এমনভাবে করুন যাতে আপনি মঞ্চ ছাড়ার পরও শ্রোতাদের মনে সেইসব গেঁথে থাকে। নিজের উপসংহারকে এভাবে ছাড়ার বদলে স্পিচ লেখার সময়ই পরিকল্পনা করে নিতে হবে, কারণ স্টেজের মধ্যে আমরা ঘাবড়ে যাই ও ভালো উপসংহার ভাবার সময় হয়না সবসময়, আপনাকে অনেকরকম উপসংহার বানানোর পরিকল্পনা রাখতে হবে নাহলে সবসময় আমাদের মাথায় থাকেনা যে বক্তব্য কোনদিকে যাবে এবং যাতে এই সমস্যায় পড়তে না হয় তা দেখতে হবে । হঠাৎ করে বলতে বলতে থেমে যাওয়া আপনার অনভিজ্ঞ হওয়ার পরিচয় দিতে পারে। সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে ভাবতে হবে কখন বক্তব্য শেষ করে উপসংহার এর দিকে যেতে হবে। নিজের বক্তব্য শেষে করার একটা ভালো উপায় হলো আপনি দর্শক ও শ্রোতাদের অ্যাকশন নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করুন। নিজের বক্তব্যকে আরো ভালো করার জন্য কোনো গল্প বা কোটেশন ব্যবহার করতে পারেন এটা দর্শকদের মধ্যে ভালো প্রভাব ফেলে।

:: নিজের মনের ভাবকে স্পষ্ট কীভাবে করবেন ::

স্পষ্ট হওয়া যেমন অনেক জরুরি তেমন অনেক কঠিনও। যীশুখ্রীষ্ট বলেছিলেন ওনাকে গল্প থেকে শিখতে হত - " কারণ উনি দেখেও দেখতেন না আর শুনেও শুনতেন না আর বুঝতেও পারতেন না "

যখন সাধারণ শ্রোতাদের সঙ্গে কথা বলবেন তখন টেকনিক্যাল শব্দের প্রয়োগ করবেননা। লিঙ্কন এর পদ্ধতি প্রয়োগ করুন এবং এমন ভাবে কথা বলুন যেন বাচ্চাদের সাথে কথা বলছেন।

খেয়াল রাখবেন যে যেই ব্যাপারে কথা বলছেন তা যেন সূর্যের মতো স্পষ্ট হয় আপনার কাছে।

কোনো ছবি প্রদর্শন ও উদাহরণ এর মাধ্যমে সবকিছুকে ব্যাক্ত করার প্রয়াস করুন।

সামান্য উদাহরণ এর সাহায্য নিয়ে নিজের কথাটাকে আরো স্পষ্ট করে তুলুন।

নিজের বক্তৃতার মধ্যে এক থেকে দুটো অংশই আপনি বলতে পারবেন। অতিরিক্ত বলার চেষ্টা করবেননা।

:: শ্রোতাদের মধ্যে কৌতূহল কীভাবে সৃষ্টি করবেন ::

আপনি কি ভাবেন?জনতার কোন বিষয়ে বেশী আগ্রহ থাকে। কিছু বক্তা মানেন যে নিজের বক্তৃতার মধ্যে যদি আগ্রহী বিষয় আনা যায় তাহলে দর্শক ও শ্রোতাবৃন্দ উতলা/ উদ্দীপিত হয়ে উঠবে। তবে সবসময় এটা কাজ করে না। আপনি যদি পুরোনো কিছু বলেন তাহলে মানুষ বিরক্ত বোধ করবে ও একদম নতুন কিছু বললে তাতে আনন্দিত হবেন না, তবে জানা বিষয়ের মধ্যে যদি নতুন বিষয়কে যুক্ত করেন তাহলে সেটা অনেক ভালো হবে। যেমন - একজন কৃষককে যদি চার্চ বা মিউজিয়াম এর কথা বলেন তাহলে এই ব্যাপারে তিনি আগ্রহী হবেন না হয়তো তিনি কোনোদিন যাননি সেখানে কিন্ত তাকে যদি বলেন ঠান্ডার সময় গরু ও গাভীদের ঘরের মধ্যে রাখা হয় ও তারা সেই বাইরের বরফ পড়া জানালা দিয়ে উপভোগ করে তাহলে এইটা তিনি বুঝবেন ও অন্যদের বলবেন। অনেক বক্তা নিজের পছন্দ মতো বক্তৃতা দিয়ে যান কিন্তু ভাবেননা যে তা দর্শকদের পছন্দ কিনা। ভালো বক্তা হওয়ার জন্য এমন বিষয় বাছুন যাতে আপনার দর্শকরাও আগ্রহী হয়। তাদের ব্যাপারে ও পরিবারের ব্যাপারে জানুন ও তাদের কিছু বলার জন্য আগ্রহী করে তুলুন তবেই আপনাকে ভালো বক্তা বলে মানা হবে, এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করুন। নিজের বক্তৃতাকে এমনভাবে সেট করুন যাতে শ্রোতাদের মনের মধ্যে তা একটি ছবি তৈরী করে। কোনো নায়ক এর কাহিনী কীভাবে সে সমস্ত সমস্যাকে কাটিয়ে উঠেছে কারণ শ্রোতারা এরকম কাহিনীই শুনতে পছন্দ করেন। এতে ওনাদের পুরো মনোযোগ আপনার দিকেই থাকবে এবং মনোযোগ সরে গেলে তা ফিরে পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যায়।

:: নিজের উচ্চারণ ঠিক করুন ::

আমাদের পরিচয় ৪ টি জিনিস দিয়ে হয় -

আমরা কী করি?

আমরা কেমন দেখতে?

আমরা কী বলি? ও

আমরা কীভাবে বলি?

Charles w. Eliot হার্বার্ড এ ৩৫ বছর প্রেসিডেন্ট থাকার পর বলেন - " আমি কোনো পুরুষ ও মহিলার মানসিক ক্ষমতা একটা জিনিসের দ্বারা মাপি সেটা হলো তার ম্যাতৃভাষার সুন্দর ও সঠিক প্রয়োগ "।

আপনার উচ্চারণ নির্ভর করে আপনার সংগতির ওপর। এইজন্য লিঙ্কন এর উদাহরণ দেখুন ও সাহিত্যের পন্ডিত দের সঙ্গে সংগতি বিধান করুন। ওনার মতো সন্ধেটা মহান কবি ও লেখকদের সঙ্গে কাটান এতে আপনার উচ্চারণে অনেক পরিবর্তন আসবে।

একটা শব্দকোশ নিয়ে রাখুন ও পড়ুন। কোনো অপরিচিত শব্দ দেখুন ও তার ব্যবহার করুন যাতে তা আপনার মনে গেঁথে যায়।

গতানুগতিক শব্দ থেকে দূরে থাকুন। অর্থের দিক থেকে সঠিক থাকুন। এমন শব্দ ব্যবহার করুন যাতে তা আপনার চরিত্রের উপর না কোনো বাজে প্রভাব ফেলে।

নিজের আলংকারিক শব্দ নিজে তৈরী করুন। আলাদা করার সাহস রাখুন।

সর্বোপরি একটাই কথা বলা যায় যে চেষ্টা চালিয়ে যান হাল ছাড়বেননা। একজন খুব ভালো বক্তাও একদিন আরম্ভকারী ছিলেন। কেউ একদিনে বড়ো হয়ে যায়না, সময়ের সাথে সাথে সবকিছুরই পরিবর্তন হয়।

ধন্যবাদ