4:00 AM, November 14, 2022
GOALS
ব্রায়ন ট্রেসী
:: নিজের সম্ভাবনার তালা খুলুন ::
সাধারণ মানুষের সম্ভাবনা সেই মহাসাগর এর মতো হয় যাতে যাত্ৰা করা হয়নি। সেই নতুন মহাদ্বীপ এর মতো যাকে খোঁজা হয়নি। সম্ভাবনা পুরো পৃথিবী মুক্ত হওয়া আর মহান কাজ করার জন্য পথপ্রদর্শন করার অপেক্ষা করছে।
- ব্রায়ন ট্রেসি
নিজের সংসার নিজেই রচনা করুন। যার বা যেই ব্যাপারে আপনি বেশি সময় ভাববেন তার প্রতিবিম্বই দেখবেন এবং যার ব্যাপারে ভাববেন আপনার জীবনে তাই প্রকট হবে। নিজের লক্ষ্য নিজেকেই তৈরী করতে হবে, অন্য কেউ তৈরী করে দেবেনা।
প্রথমত, বেশিরভাগ মানুষের কাছে লক্ষ্যে গুরুত্ব থাকেনা।
দ্বিতীয়ত, লক্ষ্য কীভাবে তৈরী করতে হয় তারা তাই জানেনা।
তৃতীয়ত, অসফলতার ভয়।
চতুর্থত, অস্বীকার এর ভয়।
১) কল্পনা করুন আপনি আপনার জীবনে যে লক্ষ্য স্থির করবেন তা আয়ত্ত করার জন্মগত যোগ্যতা আছে আপনার। আপনি সত্যিকারের কী হতে,করতে আর পেতে চান??
২) এটা কোন গতিবিধি যা জীবনে আপনাকে সার্থকতা আর উদ্দেশ্যের সবথেকে বেশি অনুভব করায়??
৩)আপনি আপনার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য পাওয়ার জন্য কী মূল্য দিতে রাজি আছেন??
৪)আপনি আপনার ব্যাক্তিগত আর কর্মজীবনকে দেখুন, আর দেখুন আপনার ভাবনা কীভাবে আপনার সংসার গঠন করে। আপনাকে কী বদলাতে হবে বা কী কী বদলাতে পারেন??
:: নিজের জীবনের দায়িত্ব নিন ::
সামান্য নিয়ম এটা হলো যে মানুষ যেই জিনিসের সঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন তার গুরুত্ব খুব কম হয়, আসল গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তো সেটা যার দ্বারা সে নিজেকে তৈরী করে
- আলেকজেন্ডার গ্রাহামবেল
নিজেকে সঠিক প্রমান করা ছেড়ে দিন। আপনি নিজে যানেন আপনি কী তাই অন্যের কাছে প্রমানের প্রয়োজন নেই, অপরের রায় এর থেকে উপরে উঠুন, আর এটা অনুভব করুন যে কোনো কিছুর জন্য অপর দায়ি নয়, অপরের দোষ দেওয়া ছেড়ে দিন। নিজের ভাবনার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন, নিজেই বাছুন কী করবেন আর সিদ্ধান্ত নিজেই নিন। নতুন নির্ণয় নিন, বাহানা দেওয়া ছেড়ে দিন আর প্রগতির দিকে এগিয়ে যান। আপনি কী বদলাতে চান সেটা ভাবুন, নিজের জীবনকে নিজেই রচনা করতে পারবেন। আজ যেখানে আছেন আর যা হতে পেরেছেন তা নিজের নির্ণয় ও নিজের জগতের জন্যই।
:: নিজের ভবিষ্যত নির্মাণ করুন ::
অনেক বছর পর লিডার দের ওপর ৩০০০ এর উপর স্টাডি করার পর একটা গুন পাওয়া গেছে যা হলো দূরদর্শিতা। প্রত্যেক লিডার বা নেতার কাছে একটা দৃষ্টিশক্তি থাকে যা নন লিডার বা অনেতা দের কাছে থাকেনা। আপনি যে ব্যাপারে বেশি ভাবেন সেইরকমই হয় পরবর্তীকালে। লিডার কোন ব্যাপারে বেশি ভাবে?এটাই হলো প্রশ্ন। উঃ ভবিষ্যতের ব্যাপারে ভাবে কতদূর যেতে চায় আর সেখানে যাওয়ার জন্য কী করতে হবে ভাবে। আর অনেতারা অতীত এর ব্যাপারে বেশি ভাবে যা নেতিবাচক দিক। এখানে একটা নেতৃত্বের গুন আছে সেটা হলো ফিউচার ওরিয়েন্টেশন বা ভবিষ্যত নির্ণয়। লিডাররা ভবিষ্যতে কীভাবে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছবে বা কী করবে তা ভাবে ও ভালো কথা বলে এভাবেই যদি আপনিও ভাবেন তাহলে লিডার দের মতোই সফলতা পাবেন। ভবিষ্যতের ব্যাপারে ভাবনা ও বর্তমানে সিদ্ধান্ত নেওয়া সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
:: নিজের জীবনমূল্যকে স্পষ্ট করুন ::
ব্রম্হান্ডে সবকিছুই আছে: আরেক ঈশ্বর আছে, অস্তিত্বের এক সিদ্ধান্ত ও নিয়ম আছে আর আছে সত্য।
- মার্কস ওরেলিয়র্স
ভেতরে যেমন বাইরেও তেমনই থাকুন, আর জানুন আসলে কী চান আপনি, নিজের সজ্ঞার ওপর বিশ্বাস রাখুন ব্যবহারের দিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনার অতীত আপনার ভবিষ্যত নয়। নিজেকে কতটা পছন্দ করেন এটাই আসল ও নিজের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রদর্শন করুন। আপনি নিজে কিসে বিশ্বাসী তা জানুন। নিজের প্রতি সততা বজায় রাখুন। শুধু নিজের প্রতি নয় অপরের প্রতিও। আজই নিজের জীবনমূল্যের সূচি বানান, আপনার বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তের ওপর তা নির্ভর করছে।
:: নিজের আসল লক্ষ্য তৈরী করুন ::
লক্ষ্য তৈরী করার থেকে মনে হয়না জীবনে এমন কোনো দিক আছে যেখানে নিয়মের সবথেকে বেশি দরকার আছে। যখন আপনি পরিষ্কার বুঝে যান আপনার কী দরকার আর সেইসব জিনিস করতে থাকেন যা আপনাকে ওই লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায় তাহলে আপনার সাফল্য কার্যত নিশ্চিত। কিছু মানুষের কাছে কোনো লক্ষ্য থাকেনা কারণ তারা জানেনা কীভাবে লক্ষ্য স্থির করবেন।
এর ৭ টা চাবিকাঠি হলো -
১) লক্ষ্য নির্দিষ্ট, স্পষ্ট ও লিখিত হতে হবে।
২) লক্ষ্য পরিমেয় ও উদ্দেশ্যভিত্তিক হতে হবে।
৩) লক্ষ্যকে একটা সময়ের মধ্যে বাধঁতে হবে।
৪) লক্ষ্য চ্যালেঞ্জিং হতে হবে।
৫) লক্ষ্য নিজের মূল্যের সাথে মিলতে হবে।
৬) আপনার লক্ষ্য, পরিবার, আধ্যাত্মিক জীবন, স্বাস্থ্যের মধ্যে সমতা থাকতে হবে।
৭) আপনার কাছে জীবনের একটা মুখ্য উদ্দেশ্য থাকতে হবে।
:: নিজের প্রধান নিশ্চিত উদ্দেশ্য তৈরী করুন ::
জেতার জন্য প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটা গুন হওয়া চাই যা হলো নিশ্চিত উদ্দেশ্য। এটা হলো জ্ঞান যে সে কী চায় আর সেটা পাওয়ার জ্বলন্ত ইচ্ছে।
-নেপোলিয়ন হিল
প্রমুখ নিশ্চিত উদ্দেশ্য বাছতে আর ওর প্রতি একাগ্রতার দ্বারা ধ্যান নির্ণয় আপনার জীবনকে এতো বদলে দেবে যতটানা কোনো দ্বিতীয় নিয়ম বদলাতে পারেনা।
আপনার নির্ণয় যাই হোক না কেন তা লিখে নিন, ও আজ থেকেই তার উপর কাজ শুরু করে দিন।
১)যদি আপনাকে পাকা গ্যারেন্টি দেওয়া হয় যে আপনি অসফল হবেন না। তাহলে কোন এমন একটা জিনিস যার স্বপ্ন দেখার সাহস রাখেন আপনি?
২) দশটা লক্ষ্যের সূচি বানান, যা আপনি আগত মাস আর বছরে পেতে চাইবেন। এই সূচি বর্তমানে কালে বানান আর এর থেকে একটা লক্ষ্যকে বাছুন, যা আপনার জীবনে সবথেকে বেশি সদর্থক প্রভাব দেবে।
৩) বিচার করুন এই লক্ষ্যের দিশাতে প্রগতিকে কিভাবে মাপবেন, এর জন্য লিখুন।
৪) নিজের লক্ষ্যকে আগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজের লিস্ট তৈরী করুন এবং তার মধ্যে একটা তৎক্ষণাৎ শুরু করুন।
৫)স্থির করুন যে, লক্ষ্য হাসিল করার জন্য আপনাকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে।
:: নিজের বিশ্বাসের বিশ্লেষণ করুন ::
মানুষ আর তার ইচ্ছার মাঝে একটা জিনিস দাড়িয়ে থাকে সেটা পূরণ করার জন্য ইচ্ছে আর এই বিশ্বাস যে তা পাওয়া সম্ভব হবে।
- রিচার্ড এম. ডেভোস
বিশ্বাসের নিয়ম হয়তো সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক নিয়ম, এই নিয়ম বলে যে আপনি যে জিনিসকে দৃঢ়তার সহিত বিশ্বাস করেন তা আপনার বাস্তব জীবনের সাথে জুড়ে যায়। নিজের ভাবনা বদলান, জীবন বদলান, নিজেকে জিনিয়াস ভাবুন, নিজেই নিজের ভাবনার বাইরে। বিশ্বাস জন্ম থেকে আসে না পরে শিখে নিতে হয়। নির্ণয় নিতে শিখুন, নিজের বলা শব্দ ও কাজের মধ্যে মিল রাখুন।
:: শুরু থেকে শুরু করুন ::
আপনি আজকে যেখানে আছেন আর ভবিষ্যতে যে লক্ষ্য পর্যন্ত যাওয়ার ভাবনা ভেবেছেন তাদের মধ্যে একটা খাল আছে। আর আপনার সমস্যা হলো তার মধ্যে ব্রিজ বানানো।
- অর্ল নাইটিঙ্গেল
বাস্তব সিদ্ধান্তের অভ্যাস করুন আর শুরু থেকে শুরু করুন। প্রতি ঘন্টায় আমদানি স্থির করুন। শুন্য আধারিত ভাবনার অভ্যাস করুন ও নিজের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে মূল্যায়ন করুন। পরিস্থিতি ক্রমাগত বদলাতে থাকে তাই নিজের দুর্বলতা গুলোকে চিহ্নিত করে রাখুন। ভালো থেকে মহানের দিকে যান, এর ফলে আপনার লক্ষ্য দ্রুতগতিতে আপনার কাছে আসবে।
:: নিজের উন্নতি মাপুন::
কোনো রহস্য সেই মানুষের জন্য বেশি লম্বা নয়, যে চিন্তা ভাবনা করে আর তাড়াতাড়ি না করে আগে এগিয়ে যায়। কোনো সম্মানই সেই ব্যাক্তির জন্য দূরে নয় যে তার জন্য নিজেকে ধৈর্য্যের সাথে তৈরী করে।
- জীন ডে লা ব্রুয়র
বিজয়ী ভাবনাকে মনের মধ্যে জন্ম দিন। আর নিজের সবথেকে মূল্যবান কাজকে চিনুন। যা আপনার আমদানি কে প্রভাবিত করে আর ওই ক্ষেত্রে প্রতিদিনের গতিবিধি লক্ষ্য করুন। প্রত্যেকদিন কোনো বড়ো লক্ষ্যকে কমপক্ষে একটা বিশেষ অংশ করার সংকল্প নিন আর একদিনের জন্যও যেন না ভুল ত্রুটি হয়।
::গোপনীয়তার বাধাগুলোকে সরিয়ে দিন ::
সফলতাতে আগ্রহ রাখা ব্যাক্তির অসফলতাকে এইভাবে দেখতে শিখতে হয় যে এটা শিখরে পৌঁছানোর অবশ্যম্ভাবি অংশ হিসেবে কাজ করে।
- জয়েস ব্রাদার্স
সফলতার আগে সর্বদা অস্থায়ী অসফলতা আসে। সমস্যা তো জীবনে থাকেই তার সমাধান করাও হলো একটা পরিকল্পনা। সমাধানের একদম গভীরে ভাবুন।
প্রথমত - গরিবত্ত, অসফলতা ও ক্ষয়ক্ষতি এসবের ভয়।
দ্বিতীয়ত, মানসিক বাধার ভয় যা সফলতার দিকে যাওয়া থেকে আটকায়।
নঞর্থক ভাবনা ভাবা বন্ধ করুন, সাহস যোগান ও আত্মবিশ্বাসী হন। অসহায়তাকে দূর করুন।শক্তিশালী বনাম শক্তিহীনতা যা জয় কে নিশ্চিত করে, ভাবুন এর মধ্যে কোনটিকে বেছে নেবেন। সঠিক সমস্যার সঠিক সমাধান বের করুন, একটা সময়সীমা করুন। পরিকল্পনা করুন ও কাজে লেগে যান,প্রত্যেক দিন ততক্ষন কাজ করুন যতক্ষণ না সমস্যা সমাধান হয় ও বাধা দূর হয়।
:: নিজের দক্ষতায় বিশেষজ্ঞ হন ::
অসাধারণ ব্যাক্তিও সাধারণ ব্যাক্তিই হয়। যিনি সফলতার ব্যাপারে ভাবেন ও স্বপ্ন দেখেন । তথা লাভদায়ক ক্ষেত্রে এমনটাই হয়।
- মেলবিন পাবর্স
নিজের গুনের বিকাশ করুন অর্থাৎ বিশেষ গুনকে বুঝুন বা চিনতে শিখুন। উৎকৃষ্ট অর্থাৎ উন্নত হওয়ার জন্য আপনার জন্ম। সফলতার জন্য শিক্ষা অবশ্যই অনিবার্য। ব্যাক্তিগত বিকাশকে লক্ষ্য বানান নিজের। আজই সংকল্প করুন নিজের ক্ষেত্রের ১০% লোকের সামনে যাবেন আর উৎকৃষ্টতার প্রতি আজীবন নিজেকে সমর্পন করবেন। আজীবন কোনো কিছু শেখার জন্য নিজেকে সমর্পিত করুন। বই পড়ুন, কোর্স বা সেমিনারে অংশগ্রহণ করুন আর যা শিখবেন তার উপর তাড়াতাড়ি কাজ করবেন।
:: সঠিক লোকের সাথে যুক্ত হোন ::
জীবন এর ব্যাপারে নিজের দৃষ্টিকোণ, নিজের গুরুত্বের ব্যাপারে নিজের যা অনুমান আছে তাতে আপনার পরিবেশ অনেকটা রঙিন হয়। আপনার আশেপাশের পরিবেশ আপনার ওপর প্রভাব ফেলে, আকার দেয় ও বদলে যায় এটা প্রত্যেকদিন আপনার সম্পর্কতে আশা লোকজনের চরিত্রকে বদলে দেয়।
-ওরিসন স্বেট মার্ডন
কোনো কাজ একা করবেন না অর্থাৎ কেউ যদি তোমার উপকারে আসে তাহলে তার সাহায্য নিন। আপনার ক্রেতাদের চিনুন ও তাদের সেবা করতে শিখুন। নির্ভরযোগ্যতা হলো সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা। সম্পর্ক রাখুন ভেবে চিন্তে। দীর্ঘদিনের ভাবনা চিন্তা রাখুন আর পরিকল্পনা করুন। সঠিক মানুষের আশেপাশে থাকুন। নিজের জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মানুষের তালিকা তৈরী করুন আর ঠিক করুন যে ওনাদের সঙ্গে আপনি কিরকম সম্বন্ধ রাখতে চান আর এর জন্য আপনি কী করবেন।।
:: কার্যপরিকল্পনা তৈরী করুন ::
সম্পূর্ণতা হলো সফল ব্যাক্তির গুন, প্রতিভা, অনেক কষ্ট সহ্য করার একাগ্র কলাবিদ্যা। প্রত্যেক মহান উপলব্ধি অনেক সতর্কতা এমনকি প্রত্যেক ছোটো বিবরণ কে তৈরী করতে অসীম কষ্ট দ্বারা পরিভাষিত হয়।
- এলবার্ড হাবার্ড
পরিকল্পনা বানানোর প্রক্রিয়া হলো অনিবার্য কারণ। পরিকল্পনাতে লাভই হয় আর এর ফলে সময় খরচ বেঁচে যায়। প্রত্যেক কাজ ও তার গতিবিধির একটা তালিকা বানাও। মস্তিষ্কে যা আসবে তারো একটি তালিকা বানাও এবং এটাও ভাবো যে লক্ষ্য হাসিল করতে গেলে ও কাজ পূরণ করার জন্য কতটা সময় ও টাকা লাগবে আর আপনার কাছে সফলতার জন্য আবশ্যক সময় আছে।
::নিজের সময়ের সঠিক ব্যবস্থা করুন ::
সময় আমাদের হাত থেকে বালির মতো ফসকে যায় আর তা দ্বিতীয়বার ঘুরে আসবেনা। যেসব মানুষ সময়ের সৎ ব্যবহার করে তারা তাদের সম্মৃদ্ধ উপযোগী আর সন্তুষ্টিকর জীবন এর পুরস্কার পায়।
- রবিন শর্মা
সঠিক বাছুন ও নির্ণয় নিন এবং করার জন্য সঠিক কাজ করুন। বুদ্ধির ভূমিকা এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পরের সপ্তাহের পরিকল্পনা আজ থেকেই করে নিন। অত্যাবশ্যক অর্থাৎ অবশ্যই করা আর গুরুত্বপূর্ণ এর মধ্যে পার্থক্য করতে শিখুন। পরিনাম কী হবে তার উপর বিচার করুন। একেবারেই কোনো কাজ শেষ করার অভ্যাস করুন। অধিক মূল্যবান গতিবিধির উপর নজর রাখুন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো এই সময় আমার সবথেকে মূল্যবান প্রয়োগ কী?? আগত মাস বা বছরে কী হতে চান? কী করতে চান? তার তালিকা তৈরী করুন। তার মধ্যে বেছে নিন কোন কাজের পরিনাম হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি সেই কাজ করুন।
:: প্রত্যেক দিন নিজের লক্ষ্যের সমীক্ষা করুন::
এটা একটা মনোবৈজ্ঞানীক নিয়ম যে আমরা যে জিনিস পাওয়ার ইচ্ছে রাখি তার ছাপ আমাদের নিজেদের চেনার উপায় যা অবচেতন মনের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।
- ওরিশন স্বেট মার্ডন
নিজের লক্ষ্যকে প্রতিদিন লিখুন আর লক্ষ্যকে পাওয়ার জন্য তার গতি দ্বিগুন করুন। সদর্থক ভাবনা ভাবুন ও ইতিবাচক জানুন। লক্ষ্যের জন্য নির্দিষ্ট সময় তৈরী করুন। আপনি মন থেকে কতটা চান এটাই বড়ো কথা। বিশ্বাস করতে শিখুন প্রক্রিয়ার উপর তার কার্যের উপর। ব্রম্হান্ডের সব শক্তিকে সক্রিয় করুন। প্রত্যেকদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে মানসিক কল্পনাতে এই ছবি দেখুন। যেভাবে আপনি আপনার লক্ষ্য আয়ত্ত করে ফেলেছেন। এই ৩ কাজের ব্যাপারে ভাবুন যেটাকে আপনি আপনার প্রত্যেকটা লক্ষ্যকে পাওয়ার জন্য করতে পারেন। সবসময় বিশেষ কাজের গভীরে ভাবুন যা আপনি করতে পারেন।
::নিজের লক্ষ্যের মানসিক ছবি দেখুন ::
নিজের স্বপ্ন আর ভবিষ্যত দৃষ্টির কদর করুন কারণ এটা আপনার আত্মার শিশু, আপনার চরম উপলব্ধির ব্লুপ্রিন্ট।
- নেপোলিয়ন হিল
আপনার সবথেকে প্রবল শক্তি আর ভবিষ্যত দৃষ্টির গুরুত্ব অনেকটাই। এই সফলতাকে দেখুন যা আপনি চান, নিজের মনকে রোমাঞ্চকর ছবি দিয়ে ভরিয়ে দিন, নিজের চরিত্রকে বিকশিত করুন, আপনি সেটাই যা আপনি হতে পারেন। শুধুমাত্র মনের ছবিকে বদলান অর্থাৎ প্রত্যেক ঘন্টা ও মিনিটে আপনি মানসিক ছবি দেখেন ও তাতে আপনি ব্যাক্তিত্ব ও চরিত্রের আকার দেন। মানসিক ছবিকে বদলে আপনি আপনার ভাবনা, অনুভব করার আর কাজ করার দৃষ্টান্ত বদলাতে পারেন না। আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ স্তরে প্রদর্শন করুন। শান্তিতে বসুন, ভাবুন আর তার পরিনাম দেখুন।
মানসিক ছবি দেখার ৪টি ভাগ -
১)কতবার??
২) কত সময় পর্যন্ত?
৩) কতটা স্পষ্টভাবে?
৪)কতটা মনোযোগ দিয়ে??
ভবিষ্যতে গিয়ে ভাবুন যে আপনার জীবন প্রত্যেকটি দৃষ্টি দিয়ে আদর্শ। মানসিক ছবি দেখার এইসব প্রক্রিয়াকে নিয়মিত জীবনের ভাগ বানিয়ে নিন। নিজের ও নিজের জীবনের মনমত রোমাঞ্চকর মানসিক ছবি বলতে নিয়মিত সময় দিন। তারপর পুরো বিশ্বাস রাখুন যখন আপনি প্রস্তুত হবেন যখন আপনার ছবি ঠিক ওই রূপেই প্রতিষ্ঠিত হবে।
:: নিজের অবচেতন মনকে সক্রিয় করুন ::
ব্যাক্তি মস্তিস্ক পুরোভাবেই বস্তু মস্তিস্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ব্যাক্তি মস্তিস্ক এর ওপর যেই ছাপ রাখে তাকে পুরো সততার সাথে অন্তিম পরিণামে নিয়ে যায়।
-থমাস ট্রোবার্ড
সমস্ত সফলতার একমাত্র স্রোত। আপনি নিজের লক্ষ্যের প্রতি পুরো মনোযোগ দিন আর তাকে পাওয়ার জন্য পুরো দমে কাজ করে যান। অবচেতন বিচার বা সমাধানের ৩টি গুন -
প্রথমত, এই সমস্যার প্রত্যেক ধাঁধা জবাব দেবে অথবা এটা আপনাকে প্রত্যেক সেই জিনিস দেবে যার দরকার আপনার নিজের লক্ষ্য হাসিল করার জন্য আছে। উত্তর যেভাবেই হোক একদম পূর্ণ হবে।
দ্বিতীয়ত, এটা 'স্পষ্টতাকে অন্ধ বানানোর রাগ ' হবে। অতিচেতন প্রেরণ সহজ, সরল আর স্থিতির হিসেবে পুরোপুরি ভাবে উপযুক্ত হবে।
তৃতীয়ত, অতিচেতন সমাধান আপনাকে খুশি আর রোমাঞ্চ এর জোয়ার প্রদান করবে। এমনকি উল্লাসও, এটা আপনার সবথেকে চমকপ্রদর মধ্যে এক অন্যতম হয়ে যাবে যেটাকে আপনি অনেক দিন ধরে মনে রাখবেন।
জীবনের পুরোনো দিনের কথা চিন্তার করুন এবং এমন সময়ের কথা ভাবুন যখন অবচেতন মনে কিছু অনুভূতি ছিল, যিনি সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন অথবা কোনো লক্ষ্যে পৌঁছানোর সামর্থ কাটিয়েছিলেন। প্রক্রিয়ার উপর বিচার করুন আর এর ব্যাপারে ভাবুন যে দ্বিতীয় বার এটা কিভাবে করবেন।
:: প্রত্যেক সময় নমনীয় থাকুন ::
যখন আমি অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েই নেই যে কোন পরিনাম পাওয়ার যোগ্য তখন আমি ওর ওপর কাজ করতে শুরু করি আর তারপর একের পর এক চেষ্টা করতে থাকি যতক্ষণ না ওই পরিনাম পেয়ে যাই।
- থমাস এডিসন
নিজেকে সর্বদা নমনীয় রাখুন, স্বীকার করুন যে আপনি আদর্শ নন, সম্পর্কের দিকেও নমনীয় থাকুন তবে স্পষ্টও থাকবেন, উভয়ই জরুরি।
নিয়মিত ভাবে নিজেকে নিজে এই প্রশ্ন করতে থাকুন যে আমি আমার জীবনের সাথে কী করতে চাই? এর পর এটা সুনিশ্চিত করুন যে আপনার বর্তমান লক্ষ্য আর কাজ আপনার জবাবের যেন অনুরূপ হয়। নিজের জীবন আর লক্ষ্যের ব্যাপারে পুরো সৎ থাকুন, দুনিয়া এমনই। দুনিয়াকে তার মতোই দেখুন। একে এভাবে দেখবেন না যে আপনি ভাবেন এটা এমন হতে পারতো। যদি পরিস্থিতি বদলে যায় আর আপনি নতুন কিছু জানতে পারেন তাহলে নিজের ভাবনা বদলান আর নতুন তথ্যের ভিত্তিতে নতুন নির্ণয় নিন।
:নিজের জন্মজাত সৃজণশীলতার তালা খুলুন :
আপনার মস্তিস্কতে যা বিচার,যা তথ্য আসে তার থেকে লাভ নেওয়ার সংকল্প করুন। ওকে আপনার জন্য কাজ করান আর ওর ফায়দা ওঠান। জিনিসকে এইভাবে ভাববেননা। যেমনই হোকনা কেন বরঞ্চ ভাবুন যেমন সেটা হতে পারতো। শুধু স্বপ্ন দেখবেন না বরংচ সৃষ্টিও করুন।
- রবার্ট কার্লিয়র
আপনাকে আপনার আমদানি দুগুন করতে হবে। নিজের চিন্তা ভাবনার ওপর পুনরায় চিন্তন করুন। নিয়মিত রূপে পুনঃচিন্তন করতে থাকুন। যেকোনো একটা কাজ বাছুন। সমস্যার থেকে সমাধানের দিকে মনোযোগ দিন।
সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজুন -
১)সমস্যাকে স্পষ্টরূপে পরিভাষিত করুন।
২) জিজ্ঞেস করুন এই সমস্যার সম্ভভাবিত কারণ কী?
৩) জিজ্ঞেস করুন এই সমস্যার সমাধান কী?
৪)জিজ্ঞেস করুন এই সমাধান থেকে কী পেতে পারেন??
৫) সমাধান করার নিশ্চিত দায়িত্ব হয় নিজেই নিন নাহলে অন্য কাউকে দিয়ে দিন।
:: প্রত্যেক দিন কিছু করুন ::
আমার সফলতা প্রত্যেক দিন আমার কঠিন পরিশ্রমের ফল।
-জনি কার্সন
কেরিয়ারেই রয়েছে সফলতা। আপনি সুযোগ পাবেন তবে তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সময়ের পরিকল্পনা সাবধানে তৈরী করুন। কাজ করতে থাকুন ও এগোতে থাকুন। আজকেই জীবনের গতি বাড়ানোর সংকল্প নিন। এক কাজ থেকে আরেক কাজে দ্রুত এগোন। কল্পনা করুন আপনি কালই কোথাও যাচ্ছেন আর তার আগেই এই কাজটি আপনাকে শেষ করতে হবে। কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা তাড়াতাড়ি কাজটি করবেন যেমন ভাবে ছুটিতে যাওয়ার আগে করতেন। ক্রমাগত বেশি দায়িত্ব চান আর সেটা যখন পেয়ে যাবেন তখন এই কাজ আপনার জন্য ক্রমাগত অবসর সময়ের দরজা খুলে দেবে।
::সফল হওয়া পর্যন্ত টিকে থাকুন ::
পরিশ্রম আর পরিকল্পনার দ্বারা প্রায় সব কাজই সম্ভব হয়। মহান কাজ শক্তি দিয়ে নয়, নিষ্ঠা দিয়ে হয়।
- স্যামুয়েল জনশন
কর্মই সবকিছু। টিকে থাকার লড়াই ই সবথেকে বড়ো লড়াই। সবথেকে বড়ো লক্ষ্য হাসিল করার জন্য আজ আপনার সামনে সবথেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা কী তা আগে চিনুন আর কল্পনা করুন যে এটা আপনার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। কখনো হার না মানার সংকল্প নিন।
যখন আপনি কোনো জিনিস পুরো মন থেকে চাইবেন যতক্ষণ না পাচ্ছেন ততক্ষন হার না মানার সংকল্প নিন।
সমস্যা, বাধা, বিপত্তি সবই জীবনে আসবে তবে কিছু না কিছু এমন ঘটবেই যা আপনাকে সঠিক সময়ে সাহায্য করবে।
নিজের কিছু এমন অনুভব করুন যেই সময়ের সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে জীবনে এগিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রত্যেক পরিস্থিতিতে সমাধান ও কর্মকেন্দ্রিক হোন। সবসময় ভাববেন সমস্যা সমাধান কীভাবে হয় আর লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য এখন কিছু করতে পারেন, আর শুরু করে দিন,কখনো হেরে যাবেন না।
4:00 AM, September 01, 2022